আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

* ভালবাসায় ভরা ছোট্ট একটি টেক্সট : ফাইন্ড মি *

এই ব্লগের সব লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সামনের বাঁকটা পার হলেই ওদের বাড়ী, এইখানে আসলে কেন জানি ওর কথা খুব বেশী মনে পড়ে, সারাদিন যদিও ওকে অনেক মিস করা হয় তবুও এইখানে আসলেই মনে হয় যেন , ইশ ! ওকে যদি এই মুহুর্তে দেখা যেত ....তখন থেকেই দেড়শ মিটারের এট্টুক পথটা যেন হাজার মাইলের চেয়ে দীর্ঘ মনে হতে থাকে ... মোড়টা পার হয়ে বাড়ীর সামনে আসতেই দারোয়ানকে দেখা গেল গেট খুলছে ... খুবই আন্তরিক মানুষ, বয়সে বড় বলেই তাকে সে সম্মান করে কথা বলে, এই এতটুকু ভাল ব্যাবহার পাওয়ার পরে লোকটার কাজকর্ম দেখে মনে হয় ওর জন্য যেন লোকটি জীবন দিয়ে দিতে পারবে , পার্কিং এ গাড়ী রাখতেই সামনে রাখা ফোনে বেজে উঠলো মনকাড়া সেই নির্দিষ্ট টেক্সট টোন ... আলতো আদরে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখতে পেল এসে গিয়েছে সেই কাঙ্খিত টেক্সট -- ফাইন্ড মি ... দরজার কাছে আসতেই দেখা গেল ওটা আগে থেকেই খোলা রাখা আছে , তার মানে সে আজকে ধারে কাছে নাই ... তাই ঘরে ঢুকেই প্রথমে সোফার পিছে দেখতে দেখতে বলে উঠলো -- আজকে তুমি কাছেই আছ জানি, চুপ করে থাকলে কিন্তু আমার সাথে দু মিনিট কথা কম বলতে পারবে ... তুমি কি তাই চাও ? চাইলে চুপ থাকো, নাইলে কথা বলো তো ? নাহ ! সেখানে ওকে পাওয়া গেলনা ... তবে কোথায় খোজা যায় ... পর্দার পিছনে ? .... গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গিয়ে একটানে জানালা থেকে পর্দা সরিয়ে দিয়ে দেখা গাল ... নাহ !! নাই তো ... তবে ? .... কিচেনে ? .... ওখান থেকে কেমন একটা সুগন্ধ আসছে , আবার দরজাও চেপে দেয়া ... সে নিশ্চই ওখানে আছে ... ধীর গতিতে সন্তর্পনে কিচেনের দরজা আস্তে আস্তে করে অর্ধেক খুলতেই দেখা গেল ঢিমে আঁচে গ্যাসের চুলায় রান্না হচ্ছে ওর খুবই প্রিয় গলদা চিংড়ী ফ্রাই ... সে ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো -- আমি জানি এখানেই তুমি আছ... এবার সে কি আমার সামনে আসবে , নাকি আমাকেই তাকে খুজে বের করতে হবে শুনি ? ...... কিন্তু নাহ ! কেউ তো সামনে আসছে না ... দরজাটা পুরো খুলে ভিতরে দেখা হলো , দরজার কোনায় দেখা হলো ... নাহ, সে নাই এখানেও ... তাহলে কোথায় গেল সে ? .... বাথরুমে ? ... আস্তে আস্তে বাথরুমের পাশে দাড়াতেই ভিতরে পানি পড়ার শব্দ পাওয়া গেল ... তার মানে এখানে সে এসেছিল ...দরজায় একটু ধাক্কা দিতেই দেখা গেল সেটা খোলা, ধুম করে পুরোটা খুলে দেখা গেল বালতিতে কয়েকটা ছোট ছোট হাতে ধোয়ার কাপড় পড়ে আছে আর তার উপরে অল্প করে পানি ছেড়ে দিয়ে রাখা আছে সেটারই শব্দ বাইরে থেকে শোনা যাচ্ছিলো .... ভিতরে চারিদিকে চোখ বুলিয়ে মনে মনে হেসে এবার ও বলে উঠলো -- আচ্ছা, তাহলে তুমি বেডরুমে না হয়েই পারো না ... আসছি আমি ... বেডরুমের দিকে যেতে যেতেই দেখা গেল সেটা আস্তে করে বন্ধ হয়ে গেল ... এর পরে আর বুঝার কিছু বাকি নাই, তবুও সে -- কোথায় তুমি, তোমাকে এখনো খুজে পেলাম না , কোথায় লুকালা, বের হয়ে আসো বলতে বলতে বেডরুমের দরজা খুলে সোজা বেডের পাশে গিয়ে দাড়ালো ... সুন্দর করে সাজানো বেডের উপরে লম্বা কেউ ব্লাংকেট মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে ... ওটার কাছে যেতে যেতেই আদর আদুর গলায় সে বলে উঠলো -- আমি জানি তুমি এখানে আছ, এখানে ছাড়া তুমি আর কোথাও নাই ... আর পরে ব্লাংকেটে হাত দিতে গিয়ে হঠাৎ চোখে পড়লো জানালার পর্দার নিচে দুটো সুন্দর পা ছটফট করতে করতে অনেক চেষ্টায় নিজের দুষ্টুমি লুকিয়ে চলেছে ... এই না দেখে ও হাত সরিয়ে দু হাত কোমরে দিয়ে বলে উঠলো ... এবার কি তোমার উপর থেকে নিজে নিজে ব্লাংকেট সরাবে নাকি আমাকেউ সরাতে হবে, হু ? .... সারা ঘর খুজে এখন পেয়েছি তাকে, এবার কিন্তু তাকেই আমার সামনে আসতে হবে... সে যতক্ষন সামনে না আসবে আমি কিন্তু জানালার পাশে দাড়িয়ে থাকবো ? ..... এরপরে জানালার দিকে পিঠ ফিরিয়ে মুখে একটু দুষ্টু হাসি নিয়ে সে "টুক্কিঈঈঈঈই" বলতে না বলতেই পর্দা সরিয়ে পরীর বাচ্চাটা ওর পিঠের উপর ঝাপিয়ে পড়তেই সেখান থেকে ওকে বুকে টেনে নিয়ে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো - তুমি কি জানো , তোমার আমি কত্ত ভালোবাসি ? ... এরপর, গোলাপী অধরের অস্ফুট সম্মোহনী শব্দে নিজের জবাব খুজতে হারিয়ে গেল , এক অন্য জগতে ...
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।