বুকের ভেতর বহুদূরের পথ.........
টুইটারে একাউন্ট খুলে রেখেছিলাম বেশ আগে। মাঝে দু'একবার আপডেটও দিয়েছিলাম। কিন্তু তারপর আর উৎসাহ পাইনি। আসলে নেটে এত কিছু করার আছে- সামুতে ব্লগিং, গুগল রিডার থেকে দুনিয়ার সব 'ফিড' পড়া, মেইল চেক, ফেসবুক.............। মানুষ তো একটাই আর দিনটাও ২৪ ঘন্টার।
কিন্তু সব পাল্টে গেল প্রিয় ব্লগার নাফিস যখন ঘোষণা দিলেন যে তিনি টুইটারে এসেছেন (মানে একাউন্ট খুলেছেন)। আবার টুইটারে একটিভ হলাম; তবে বেশ কিছু ভাবনা চিন্তা করার পর।
টুইটারের উপকারীতা
১. আমার পুরনো ডায়েরী লেখার অভ্যাস আবার ফিরে পেয়েছি টুইটারের কারণে। অনেকে ভাবতে পারেন ১৬০ কারেক্টারের মধ্যে কী-ইবা লেখা যায়? কিন্তু আমার কোন অসুবিধা হয়না। আমি নিজের আবেগ অনুভূতি নিয়ে খুব একটা কিছু লিখিনা।
জাস্ট কোথায় গেলাম, কি করলাম, অফিসে বস বকা দিলো কিনা, কোন কারণে মন খারাপ হলো কিনা, হঠাৎ করে কোন পুরনো বন্ধুর সাথে দেখা হলো কিনা........এইসব হাবিজাবি। এরজন্য টুইটার মোটামুটি পারফেক্ট বলা যায়।
২. সারাদিন ইন্টারনেটে প্রচুর বিচরণ করা হয়। হঠাৎ হঠাৎ ভাল কোন আর্টিকেল পেয়ে যাই যেগুলো সংরক্ষণও করতে ইচ্ছে করে আবার প্রিয় মানুষদের সাথে শেয়ারও করতে ইচ্ছে করে। এই কাজের জন্যও টুইটার চমৎকার একটা টুল।
পছন্দের লিংকটা কপি করি, টুইটারে পেস্ট করি, তারপর আপডেট! ব্যাস, হয়ে গেলো।
৩. পছন্দের মানুষদের যদি সারাক্ষণ আপডেটেড রাখতে চান তাহলেও টুইটারের জুড়ি নাই। 'জ্যামে বসে আছি', 'ব্যাংকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে, উহ! কখন যে এখান থেকে বের হবো', 'ফ্যান্টাসীতে, জেমসের ফাটাফাটি একটা গান শুনছি', 'সেন্টমার্টিন- এখুনি পানিতে নামবো, বন্ধুরা সব দোয়া করো' 'এটিন বাংলায় ইভা রহমান গান গাচ্ছে, ইয়া মাবুদ এই ভোটকীর হাত থেকে আমাদের রক্ষা করো'..............এরকম সব আপডেট দিয়ে কাছে রাখতে পারেন বন্ধু-বান্ধব আর আপনজনদের।
৪. তাৎক্ষণিক মনের ভাব বা চিন্তা রেকর্ড করে রাখতে পারেন টুইটারে। সৃষ্টিশীল মানুষের মধ্যে কখন যে 'ভাবের' উদয় হবে কেউই বলতে পারেনা।
কিন্তু সাথে সাথে তা ধরে না রাখলে পরে আবার ভুলে যাবার সম্ভাবনা আছে। আমি যেমন ব্লগে নতুন লেখার কোন আইডিয়া পেলে এতদিন পিসিতে বা মোবাইলের মেসেজে লিখে রাখতাম। এখন থেকে শুধুই টুইটারে লিখবো ভাবছি।
৫. কোন ঐতিহাসিক ঘটনায় বা অনুষ্ঠানে যদি আপনি উপস্থিত থাকেন (যেমন বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনাল, ম্যান ইউ আর লিভাপুলের খেলা) তাহলে মিনিটে মিনিটে আপডেট দিতে পারেন। আপনার 'ফলোয়ার'রা রুদ্ধশ্বাসে আপনার আপডেট পড়তে থাকবে।
গাজার যুদ্ধের সময় এরকম বেশকিছু লাইভ আপডেট দেয়া হয়েছিলো আল জাজিরায়।
ওহ, একটা কথা তো বলা হয়নি। আমেরিকা এবং আরো কিছু দেশে ফেসবুকের চাইতে টুইটার অনেক বেশী জনপ্রিয়। অনেক সেলেব্রিটিরই টুইটার একাউন্ট আছে। সেলেব্রিটিদের টুইটার এত পছন্দ হওয়ার কারণ হলো এখানে ফেসবুকের মত 'প্রাইভেসি স্যাক্রিফাইস' করতে হয়না।
আপনার ব্যক্তিগত/পারিবারিক ছবি বা ভিডিও কে দেখলো বা না দেখলো তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। নিশ্চিন্তে আপনি আপনার 'ফলোয়ার' বাড়াতে পারেন। অনেক বেশী 'ফলোয়ার' থাকলে একদিন হয়তো আপনি বিভিন্ন কোম্পানীর 'নজরে' পড়তে পারেন। তাদের পণ্যের এম্ব্যাসাডারও বানিয়ে ফেলতে পারে আপনাকে।
ডিসক্লেইমার: আমি টুইটার ব্যবহার করা শুরু করেছি বেশীদিন হয় নাই।
কাজেই উপরের সবগুলো ব্যবহারই যে পুরোদমে শুরু করছি তা কিন্তু না। তবে প্ল্যান আছে....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।