শরীরে শরীর নয়, ঠোঁটে ঠোঁট রাখাও নয়, মূহুর্তের ছোঁয়াও নয়, একটু দেখাতেই লিটার খানেক অগ্নিজলের ঘোর।
নারী নির্যাতনের ব্যাপারে সবাই আমরা সোচ্চার।
এমন কি নারী দ্বারা পুরুষের ওপর মানসিক ও দৈহিক নির্যাতনের কথাও শোনা যায় মাঝে মাঝে।
সংখ্যা লঘুদের নির্যাতনের চিত্রও আমরা দেখেছি এবং দেখছি।
আদিবাসীদেরটা তো হরহামেশাই।
কিন্তু আমরা অভিভাবকরা, পিতা মাতারা যে প্রতি নিয়ত আমাদের সন্তানদের কাছে নির্যাতিত হচ্ছি এবং নির্মম ভাবে, তার হদিস কিন্তু কোথাও মেলেনা।
১। বাবার মাসিক আয় সাকুল্যে বিশ হাজার টাকা হাজার টাকা, মেয়ে জনগনের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে না। তার পড়া চাই NSU তে। বাবা মা না করতে পারেন না।
মেয়েটি ক্লাস নইনে পড়ার সময় সামান্য ছুতোয় বিষ খেয়েছিল। বাবার চাকুরীতে উপরির কোন ব্যবস্থা নেই। অগত্যা মাকে তাঁর দশম শ্রেনীর বিদ্যা দিয়ে শুন্য অভিজ্ঞতা সাথে করে চাকুরীর জন্যে দ্বরে দ্বরে ঘুরতে দেখা গেল। বাবা তার গ্রামের ধানী জমির অর্ধেকটা বিক্রি করে দিলেন মেয়ের tuition fees দিতে (প্রতি তিন/চার মাসে অর্ধ লক্ষ টাকা!)। তাঁদের কিন্তু আরো ছেলে মেয়ে আছে।
২। ছেলে আর দেশে পড়বেনা। মেলবোর্নের এক অখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার সমস্ত আয়োজন শেষ। এখন তাঁকে দেখাতে হবে যে বাবা/মায়ের ব্যাংকে ৫০ লক্ষ(কিছু কম বেশী হতে পারে) টাকা স্থিতি আছে। বাবা উচ্চতম পদে আসীন সরকারী কর্মকর্তা।
ব্যাংকে আছে হাজার পাঁচেক। অত্যন্ত সৎ কর্মকর্তা বলে আখের গোছাতে পারেন নি। আবার আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধবকেও বলতে তাঁর বাঁধছে ক'দিনের জন্যে টাকা ধার দিতে। শেষে পৈত্রিক সূত্র পাওয়া অতি ছোট্ট একটা এ্যাপার্টমেন্ট (৯০০ বর্গ ফুট) জলের দামে বিক্রি করে ছেলের দাবী মেটানো। তারপরও কথা থেকে যায়, ওদেশে গিয়েই তো আর কাজ পাবেনা।
তদ্দিন বাবাকেই টাকা পাঠাতে হচ্ছে, আর এয়ার টিকেটের দামতো আছেই। বাবার বয়স হয়ে গিয়েছে। ৩ বছরের মধ্যে অবসর নেবেন। এক মেয়ে আছে বিয়ে দিতে হবে.......।
৩।
কালু পন্চায়েত। সওদাগরী অফিসের হিসাব রক্ষক। বেতন ৯ হাজার টাকা মাসিক। থাকেন যাত্রা বাড়িতে। তিন মেয়ে এক ছেলের সংসার।
বুড়ো মা, শাশুড়ী ও এক শ্যালিকাও সাথে থাকেন। প্রায় রাতই বাড়ি ফেরেন না তিনি। ছেলে পাড়ার মাস্তান। মাস্তানী করেও নিজের খরছ পুরোটা যোগার করতে পারেনা। বাবা মার কাছে প্রায়ই টাকা চায়।
না দিলে বেদম মার। মেরে পাঁজরের তিনটা হাড় ভেংগে দিয়েছে বাবার।
৪। ছেলের বিয়ে দিয়েছেন বরকতুল্লাহ সাহেব। ধানমন্ডিতে পানির দামে জমি কিনেছিলেন ১৯৬৫তে।
অধুনা ডেভেলাপার দিয়ে ইমারত উঠিয়েছে। পাঁচটি এ্যাপার্টমেন্ট তার। ৪ ছেলে মেয়েকে লিখে দিয়েছেন চারটি। বিবাহিত ছেলের আবদার পন্চমটি তার নামে লিখে দিয়ে বাবা মার বাড়ী ত্যাগ করতে হবে। কারন ছেলে বউয়ের সাথে মায়ের লেগে যায় রোজই।
তাছাড়া সে মনে করে যে সে বন্চিত। কারন ফারায়েজী আইন অনুসারে তার বোনদের দ্বিগুন সম্পদ পাবা কথা। যতই আমরা বলি, সে আইন শুধু তার বাবার মরে যাবার পরই কার্যকর, জীবিত অবস্থায় সম্পদের মালিকানা সন্তানদের ওপর বর্তায় না। বরং বাবা চাইলে সব সম্পদ যে কাউকে দান করে যেতে পারেন(হিবা), ততই সে মাথা গরম করে চিৎকার করতে থাকে। যখন জিজ্ঞস করা হয় বুড়ো বাবা মা কোথায় উঠবেন তখন তার সাফ উত্তর সেটা তারাই (বাবা মা) জানে।
কিছুদিন আগে বরকতুল্লাহ দম্পতি আমার কাছে এসেছিলেন। ছেলে আর ছেলের বউ তাঁদেরকে সিঁড়ি থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে। সাহেবের ভেংগেছে পা আর স্ত্রীর কলার বোন জায়গা থেকে খুলে গেছে।
আমরা যারা অভিভাবক/পিতা মাতা আমরা কি এরকমই নিগৃহিত হ'তে থাকবো?
(উপরের ৪ টি ঘটনাই সত্য। নামগুলো শুধু বদলে দেয়া হয়েছে।
পোষ্ট বড় হ'লে পড়তে ইচ্ছ করবেনা আপনাদের তাই আর গুলো দিলাম না)।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।