কত বেদনার বিষন্ন মেঘে ভেসে ভেসে, এলে তুমি অবশেষে।
ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়েছি চট্টগ্রাম স্টিলমিল হাইস্কুলে। স্কুলের হক স্যারকে আমরা সবাই ভয় পেতাম তাঁর বিখ্যাত মারের জন্য। পড়া না পারলে হাসি মুখে চালিয়ে যেতেন সপাং সপাং, মনে হত আমাদের পড়া না পারাটা উনার কাছে অতি কাংখিত। উনার আরেকটা বিশেষ বৈশিষ্ট ছিল আওয়ামীলীগ প্রীতি।
আওয়ামীলীগ সম্পর্কে উনার যে অগাধ জ্ঞান এবং আগ্রহ, এমনটা আর কারো কাছে দেখিনি। আমার ধারনা, আওয়ামীলীগের অনেক নামকরা নেতাও লীগ সম্পর্কে উনার চাইতে কম জানেন। শুনতাম, উনার ঘর ভর্তি ছিল রাজনৈতিক খবর সম্বলিত খবরের কাগজে। স্কুলের ছাত্ররা গবেষনা করে উনার মার খাওয়া থেকে রক্ষা পাবার মহান এক উপায় আবিস্কার করেছিল। যেদিন পড়া একটু কঠিন থাকতো, হক স্যার ক্লাসে আসার সাথে সাথে যেকোন একজন দাঁড়িয়ে স্যারকে বলত, "স্যার, শেখ কামাল তো শুনছি ব্যাংক ডাকাতি করছে"।
স্যারকে আর পায় কে, উনি মহা বিক্রমে শেখ কামালের পক্ষে ফিরিস্তি দেয়া শুরু করতেন। তার শুরুটাও বেশ মজার, বলতেন "গাধা শুয়োর কইত্তোন, তোগোরে কনে কইছে এই কতা, বেগগিন মিছা কতা...."। এর পর অবিরাম চলতে থাকতো। আমরাও মহা খুশি, ক্লাস টাইম কোন দিক দিয়ে ফুরিয়ে যেত স্যার টেরই পেতেননা। স্কুল জীবনের সেই প্রিয়মুখগুলোর শেষ পরিণতি কেন যেন খুব কষ্টের।
শুনেছিলাম, আমাদের সেই প্রিয় হক স্যার দুরারোগ্য পারকিনসন রোগে আক্রান্ত। বিধাতা উনার মস্তিষ্ক থেকে একে একে সব স্মৃতিগুলো মুছে দিয়েছেন। সেখানে শেখ কামাল, শেখ মুজিব, স্টিলমিল স্কুল, আমরা, কোনকিছুই আর অবশিষ্ট নেই। এভাবেই হয়তো সবকিছুর শেষ হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।