দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের রাজধানী ঢাকার সাথে সড়ক পথে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ রুট হচ্ছে কাওড়াকান্দি-মাওয়া রুট। এ রুটে ১০ দিন পর্যন্ত লঞ্চ বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছে যাত্রীরা। ট্রলার, স্পিডবোট বা ফেরিতে পারাপার হচ্ছেন তারা। যাত্রীদের চাপে ফেরিতে গাড়ি পারাপার করতে অসুবিধায় পড়েছে ফেরি কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, গত ২২ আগস্ট সকালে কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে প্রথম সিরিয়ালমতে এমভি শাহ পরান নামের একটি লঞ্চ মাওয়া ঘাটে যায়।
মাওয়া ঘাটের লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকরা এমভি শাহ পরান লঞ্চটি ভাঙচুর করে এবং লঞ্চটিকে আটকে রাখে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বন্ধ হয়ে যায় কাওড়াকান্দি-মাওয়া নৌ রুটের লঞ্চ চলাচল।
শাহ পরান লঞ্চের মালিক ইয়াকুব বেপারির দাবি, লঞ্চের ফিটনেস রুট পারমিট এবং বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও কতিপয় ব্যক্তি তার লঞ্চটি এই রুটে চালাতে বাধা দিচ্ছে। তার লঞ্চটি মাওয়া ঘাটে গেলে কতিপয় লঞ্চ মালিক ও কর্মচারীরা লঞ্চের ২ কর্মচারীকে মারধর করে। এতে লঞ্চের কয়েকজন কর্মী গুরুতর আহত হন।
এছাড়া লঞ্চের সামনের গ্লাস ভাঙচুর করে এবং লঞ্চের ব্যাটারি খুলে নদীতে ফেলে দেয়। লঞ্চটি এখনো মাওয়া পাড়ে নদীর মধ্যে আটকে রেখেছে।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘাটের অনেকেই বলেন, সরকারি দলের একজন প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় ইয়াকুব বেপারির মতো একজন লঞ্চ মালিক কাওড়াকান্দি ঘাট নিজের দখলে নিয়ে সাধারণ যাত্রীর সঙ্গে ছিনিমিনি খেলছে। তারা দুঃখ করে বলেন, অনেক গরীব মানুষের প্রতিদিনের রোজগারের পথ ছিল এই ঘাট এলাকা। লঞ্চ বন্ধ থাকায় তাদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে।
সরকার এসব না দেখলে কে দেখবে?ঘাটের একাধিক যাত্রীর সাথে আলাপ করে জানা গেছে, একজন লঞ্চ মালিকের কারণে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও সমস্যা নিরসনে কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের কোনোরকম উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। এ ধরনের খামখেয়ালিপনা থেকে বাঁচাতে চায় যাত্রী সাধারণ।
লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর চৌধুরী দুঃখ করে বলেন, একজন লঞ্চ মালিকের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ে একাধিক মিটিং হয়েছে।
১০ দিন ধরে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রাখার অধিকার কারও নেই। লঞ্চ বন্ধ থাকায় শুধু যাত্রী সাধারণের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এমন নয়, ৮৬টি লঞ্চের মালিক-কর্মচারীরা সংক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। আমরা আর ২দিন দেখবো, এরপর হার্ডলাইনে যেতে বাধ্য হবো।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার খোন্দকার ফরিদুল ইসলাম জানান, মাদারীপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক এবং মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে, নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটি বিষয়টি দেখবেন। তাদের নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত যেভাবে আছে সেভাবেই রাখতে নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।