আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজকের তাজা খবর: চাকরী হারাচ্ছেন ৭ হাজার বিডিয়ার

সাপ-লুডু খেলছি বিধাতার সঙ্গে

রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত বিদ্রোহের সময় উপস্থিত সকল বিডিআর সদস্য বিভিন্ন অভিযোগে চাকরি হারাচ্ছেন। সরাসরি হত্যা, ভাংচুর, লুটতরাজ, গুলিবর্ষণ, হামলাসহ ২০ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলবে যেসব সদস্যের বিরুদ্ধে তাদের ফৌজদারি আইনে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি হবে। পাশাপাশি যারা ঐসব অপরাধ ছাড়া শুধু বিদ্রোহ করেছিল বা বিদ্রোহে অংশ না নিয়ে বিদ্রোহীদের বাধাও দেয়নি বা যারা ঐদিন পালিয়ে গিয়েছিল তারাও ১৯৭২ সালের বিডিআর আইন অনুযায়ী সর্বনিম্ন শাস্তি হিসাবে চাকরি হারাবেন। এ হিসাবে গত ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় অবস্থানরত বিডিআরের ৬ হাজার ৮শ সদস্যের কেউই আর চাকরিতে থাকছেন না। তবে এ ব্যাপারে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম বলেন, একটি বাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী ঘটনার দিন যেসব বিডিআর সদস্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন তারা সবাই অভিযুক্ত।

কিন্তু ঐ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে চলবে না। বিডিআরকে টিকিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই যেসব বিডিআর সদস্য বড় ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। ঐ দিন বিডিআর সদস্যদের ভুলত্রুটি হতেই পারে। এসব অপরাধ হিসেবে গণ্য নাও করা যেতে পারে। কারণ এখন বিডিআর সদস্যদের মধ্যে ঐদিনের ঘটনার জন্য অনুশোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

তাই যারা ভুলত্রুটি করেছে তাদেরকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে বিডিআরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশনার আলোকে সরকার বিডিআর বিদ্রোহের বিচার দুই আইনে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেসব বিডিআর সদস্য সরাসরি হত্যা, লুটতরাজ, হামলা, ভাংচুর, গুলিবর্ষণ, চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত তাদের বিচার প্রচলিত ফৌজদারি আইনে সম্পন্ন হবে। বিদ্রোহের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, এ পর্যন্ত তদন্তে ২৪৫ জন বিডিআর সদস্যের বিরুদ্ধে সরাসরি হত্যা, গুলিবর্ষণ, ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, চুরি ইত্যাদি অভিযোগের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া যে ২২ জন বিডিআর সদস্য পলাতক রয়েছেন তারাও এসব অভিযোগে অভিযুক্ত হচ্ছেন।

পিলখানার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদে এ পর্যন্ত সাড়ে ২৪শ’ বিডিআর সদস্য গ্রেফতার হয়েছে। এদের মধ্যে ২২শ’ সদস্যের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন, অস্ত্র প্রদর্শন, বিভাগীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ইত্যাদি অভিযোগ আনা হচ্ছে। এদের বিচার ১৯৭২ সালের বিডিআর আইন ও ১৯৭৬ সালের বিডিআর বিশেষ আইনে সম্পন্ন হবে। এ বিচার পরিচালনা করবেন বিডিআর মহাপরিচালক। বিডিআর আইনে একজন অভিযুক্ত বিডিআর সদস্য সর্বোচ্চ ৭ বছর সাজা পেতে পারেন।

১৯৭২ সালের বিডিআর আইনের বিভাগীয় শাস্তির কয়েকটি ধারা রয়েছে। বিডিআর আইনের ১০(ক) ধারায় বলা হয়েছে-কেউ যদি বিদ্রোহের কারণ হয় অথবা ধারণা করা হয় কোন ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকে অথবা এ ধরনের বিদ্রোহে ইন্ধন দেয় এবং যদি এটা ধারণা করা হয় সম্পৃক্ততা রয়েছে অথবা কমান্ডিং অফিসার ছাড়া কোন তথ্য পাচার করে তাহলে ঐ রাইফেলম্যান (বিডিআর সদস্য) অভিযুক্ত হবেন। ১০(ঘ) ধারায় বলা হয়েছে- যদি তার অস্ত্র কোন ব্যক্তির সামনে তার অফিসার বা সৈনিকের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে অথবা শত্রুর সামনে অন্য সদস্যদের অস্ত্র ব্যবহারে বাধা দেয় বা নিবৃত করে রাখে বা শত্রুকে মোকাবিলা না করে নিরব থাকে তারাও শাস্তির যোগ্য হবে। ১০(ঝ) ধারায় আছে নির্দেশ ছাড়া কেউ কোন জানমালের ক্ষতি করলে অভিযুক্ত হবে। ১০বি এর (ঘ) ধারায় বলা হয়েছে-নিয়মিতভাবে কেউ কোন অনুমতি ছাড়া ছুটি না নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বা চলে যায় তাহলেও তাকে শাস্তি দেয়া যাবে।

এসব অভিযোগে সর্বোচ্চ শাস্তি ৭ বছর সাজা ও সর্বনিম্ন শাস্তি অভিযুক্ত বিডিআর সদস্যকে পেনশন দিয়ে অবসর প্রদান বা পেনশন ছাড়াই বাধ্যতামূলক অবসর বা কোন আর্থিক সুবিধা ছাড়াই চাকরিচ্যুত করা। এ হিসাবে ঘটনার দিন সকল বিডিআর সদস্য শাস্তিযোগ্য হবেন। তবে পিলখানায় উপস্থিত সিভিল কর্মচারী বা বহিরাগতরা বিডিআর আইনের বিচারের সম্মুখীন হবেন না। তাদের বিচার প্রক্রিয়া ফৌজদারি আইনে সম্পন্ন হবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।