আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লাল নীল ছবি দেইক্খা পরান জুড়াইলো -১

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

বাংলা সিনেমা মানে এফডিসির সিনেমা আমার বরাবরই ভালো লাগে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো টিভি ছাড়া সিনেমা হলে গিয়ে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে খুবই কম। সিনেমা হলে যেকটা ছবি দেখেছি তার সবই হুমায়ুন আহমেদের। স্টারসিনেমপ্লেক্সে আরো কিছু বাংলা ছবি দেখেছি কিন্তু প্রচলিত অর্থে সেগুলোকে ঢাকাইয়া ছবি বলা যায় না। সবগুলোই ছিল ঢাকাইয়া ছবির তুলনায় ভিন্ন, কেউ কেউ বলে সুনির্মিত - একদমই এফিডিসি মার্কার সাথে যায় না।

কিন্তু টিভিতে একসময় সিনেমার এ্যাড দেখাতো। বিটিভিতে। রেডিওতে সিনেমার চুম্বক ডায়লগ শোনাতো। ইত্তেফাকে তো দুটো পাতা সিনেমার বিজ্ঞাপনে ভরপুর থাকতো। এছাড়া সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ও পরবর্তীতে নানা স্যাটেলাইট চ্যানেলের সুবাদে এফডিসির ছবির বিষয়ে আমার প্রচন্ড একটা অনুরাগ তৈরী হয়েছে।

অদ্ভুত এর নির্মাণ শৈলী - চমৎকার এর গল্পের বর্ণনা যা একদৃষ্টিতে যেকেউ এফডিসির বলে চিন্থিত করতে পারে। এফডিসি মানে ঢাকাইয়া ছবি সম্বন্ধে এই অভিজ্ঞতার আলোকে আমি কিছু আকর্ষণীয় বিষয় লক্ষ্য করেছি। প্রথমত, ঢাকাইয়া ছবির নায়কেরা চিরজীবনই নায়ক থাকেন। মানুষের বয়সের সাথে চেহারা-সুরতের পরিবর্তন হয়, ক্রমশ বুড়িয়ে যায়, আগের মত সৌন্দর্য্য আর থাকে না। কিন্তু একসময়ের সুদর্শন নায়ক তার সব সৌণ্দর্য্য হারানোর পরেও বহাল তবিয়তে নায়কই থেকে যান।

এমন ঘটনা আমি বলিউডেও দেখেছি। যেমন শত্রুঘ্ন সিনহা, বিনোদ খান্না, ঋষি কাপুর - এদের তরুন বয়সে আকর্ষণীয় লাগতো হয়তো কিন্তু পরিনত বা প্রায় বৃদ্ধ বয়সে এদের নায়কের ভূমিকায় অসম্ভবরকমের বেখাপ্পা লাগতো। এদেশে এটি দেখেছি রাজ্জাকের বেলায়। একসময় যাকে পূর্ববাংলার উত্তম কুমার বলা হতো সে পঞ্চাশ বছর বয়সে ঝুলন্ত চামড়া আর উদ্ভট উইগের সাথে বিশাল ভুড়ি নিয়ে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। সম্ভবত দর্শকেরাও একসময়ের সুদর্শন নায়ককে সারাজীবনই নায়ক দেখতে চান।

তবে বয়স বেড়ে গেলেও অনেকের চেহারা-সুরত আর দেহের সৌন্দর্য্য অটুট রাখার একটা কৌশল জানা থাকে বোধহয়। যেমন অনীল কাপুর - এখনও নায়ক হিসাবে মানানসই, যদিও তার মেয়ে ইতোমধ্যে নায়িকা হয়ে গেছেন। রাজ্জাকের পরে এই বৃদ্ধ নায়কদের সাড়িতে আমার উদ্ভট লেগেছে মান্নাকে। একসময়ে তাকে নায়কোচিত লাগতো বটে, কিন্তু মৃত্যুর কয়েক বৎসর আগে পর্যন্ত তার দশাসই ভয়াল দর্শন চিবুক আর ঝুলে পড়া গলার চর্বি সহযোগে নৃত্যগীত রীতিমত চোখের জন্য অত্যাচার ছিল। যেমন লাগতো অমিতাভকে নায়ক হিসাবে শেষ দিকের ছবিতে।

এমনকি কুলিতেও অমিতাভকে আন্ডার এজ দেখানোটা ধরা পড়ে গেছিলো সবার চোখেই। ইদানিং যেটা হয়েছে সঞ্জয় দত্তর ক্ষেত্রে - প্রেমের গানে চলচিত্রের পর্দায় তার যে বয়স ধরা পড়ছে তা কখনই তার পর্দার অভিনীত চরিত্রের সাথে মানানসই নয়। তবে এখন ঢাকাইয়া ছবিতে সব তরুন নায়ক। এই নায়কদের মধ্যে ফেরদৌস ক্রমশ আনফিটের স্তরে পৌছে গেছেন। তারপরেও চলে।

রিয়াজ, শাকিব খান ছাড়া অবশ্য আর কাউকে হিসাব করাও যাচ্ছে না। এ দু'জন পর্দায় তরুন হিসাবে গ্রহণযোগ্য - তবে সাকিব একটু বেশীই তরুন। বাকী দুইনম্বর-তিনম্বর সাড়িতে যারা আছেন তাদের মধ্যে সবার নাম জানি না কিন্তু বেশীরভাগই কুৎসিত দর্শনের, কেউ বয়সের কারণে, কারো চেহারাই অনায়কোচিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।