করণিক: আখতার২৩৯
সম প্রচার
সময় বহন ক’রে এনেছে প্রচারপত্র,--
আগামী কালবোশেখী ঝড়ে,-বিলি হবে ঘরে ঘরে;
--সবাই জেনে যাবে,-‘গৃহযুদ্ধ দূরে নয়’;--
--লুটের মাল ভাগাভাগি নিয়ে নিজদলে
কোন্দলময় গৃহযুদ্ধের নিত্য পূর্বাভাস ॥
ঐ প্রচারপত্রেই পাওয়া যাচ্ছে
আশ্বাসময় আগাম প্রকাশ,--
--আত্মঘাতি গৃহযুদ্ধ হঠাৎ-ই থেমে যাবে
এবং ধ্বংস-স্তুপ ফেলে রেখে চ’লে যাবে;
জড়িতরা ধ্বংসস্তুপের উপাদান হবে,-আর,--
-জীবিতরা মাত্রা জেনে যাবে নিজেদের অক্ষমতার ॥
ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে প্রতারণাময় ব্যবধান,
--যত দলগত ব্যবধান আছে,-হবে বিনাশপ্রাপ্ত;
-শুধু একটাই ব্যবধান থাকবে,
--যা’ স্থির,-চিরন্তন,
--‘কোনো মানুষ-ই নয় অন্যের মতো’-॥
মানুষে মানুষে সত্যিকার ব্যবধানটুকু সম্বল ক’রে,
--ধ্বংস-স্তুপের ওপর দিয়ে,-সৃষ্টির বাহন,
-যুগের গয়না ভাসবে সময়ের স্রোতে;
--সকলেই স্বতন্ত্র-বৈঠা আপন হাতে
তুলে নেবে স্বেচ্ছায় ॥
হাল ধরার লোভে কেউ যদি বৈঠা এড়িয়ে যায়,
--ধমকিয়ে তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে তখনি,
--যেখানে যথার্থ মানুষের হবে-না মানহানী,
--অযোগ্য উঠে গেলে যোগ্যের স্থানে;
-নামিয়ে আনা হবে তাকে,-হেঁচ্কা টান টেনে ॥
-‘নেবো না, বৈঠা নেবো না,-হাল চাই হাল চাই,’-
-এ-ধরণের বিশ্রী ঘ্যানঘ্যানানি কৌশলে থামিয়ে
শুনিয়ে দেয়া হবে তাকে কঠোর সতর্কবাণী,-
-‘ওহে ক্ষুদে বাছুর মহাজন,-চতুরের পোনা,
-এবারে আর ভুল কোরো না,’-
-প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতাকে যে’জন মানতে চাইবে না,
-প্যাঁচানো তার সুচতুর ল্যাজটা ধ’রে
টেনে সোজা ক’রে অভিভাবকেরা স্নেহভরে
করবে শাসন,-কিম্বা সকলে সমস্বরে
ঠাট্টার ভঙ্গিতে বলবে,--
--‘বৈঠাখানা ফেলে দিয়ো না বাছা,
-এখনো তুমি যথেষ্ট কাঁচা,-
-নিজেকে নীলরক্তধারী আভিজাত্যধারী নরাধম
সাজানোর ঝুঁকি নিয়ো না,--ফিরে দ্যাখো,
-ফিরে দ্যাখো নিজ-চোখে পেছনে,
--পিছনের ঐ ধ্বংসস্তুপখানা।--
-তুমি আমাদের যত্নে-লালিত,-আদরে-আশ্রিত,
--তুমিও লাল রক্তধারী;--ছুঁয়ো না হে,
--খবরদার! -হাল ছুঁ’তে যেয়ো না আগেভাগে,
--কোরো না বাড়াবাড়ি।’---
আলতোভাবে তার কাঁধে চাপড়িয়ে বলা হবে,
-‘অভয় নিয়ে যাও,-নিয়ো না যন্ত্রণা,-
--যতক্ষণ আমরা না-পাঠাচ্ছি,
-ভুলেও একা একা ধরতে যেয়ো না,-
-ঝুঁকিপূর্ণ হালখানা তাড়নার স্বেচ্ছাচারে
একা একা ধোরো নাকো আর,-
--দ্যাখো চেয়ে খোকা,-চেয়ে দ্যাখো,
-গন্তব্য নিজেরাই ঠিক ক’রে নিচ্ছে এবার
দায়ভারবাহী ধৈর্যশীল অভিভাবকেরা,
-যারা অন্যের দোষ ঘাঁটার ব্যাপারে,--
-অক্ষমতাই শুধু দেখিয়ে গ্যাছে বারে বারে,
ঐ নির্ভরযোগ্য,-নিরপেক্ষের পক্ষপাতী,
অভিজ্ঞ অভিভাবকেরা,
-ত্যাড়া নয় যাদের ঘাড়;
-এখানে এই গয়নায়,-বিশ্বাসঘাতক নয়
আমাদের সম্মিলিত যত দাঁড় ॥
‘ডানে’ অথবা ‘বাঁয়ে’ ছলাৎ ছলাৎ দাঁড়গুলোর
যেকোনো একখানা তোমাকে চায়।
হতাশামুক্ত উচ্ছ্বসিত তুমি,-তোমাকেই চাই,
-চাই তোমাকেই যারা চলন্ত এই ভাসমান গয়নায় ॥
তোমাকে পরখ ক’রে নেওয়া হবে
তোমার ‘স্বতন্ত্র বৈঠা’ চালনায়।
-যদি সন্তুষ্ট করতে পারো
আপন পেশাগত যোগ্যতায় সমতালে,--
-আর,-দেখাতে পারো
দাঁড়-ঠেলায় যোগ্যতা সমকালে,-
-এবং ,-সংখ্যাগরিষ্ঠ অভিভাবকেরা সমর্থন নিয়ে
তোমার পক্ষে দাঁড়ালে,---
তবেই তোমাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে হালে,
--ভাসমান গয়নার দিক-নির্দেশক হালে।-’
রঙ্গপুর- ০২/০৮/১৯৮৪ খ্রিঃ
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।