মাঝে মাঝে বড় ক্ষোভ জাগে,আমি কেন এবং কিভাবে মেনে নেই প্রতিদিনের দেখা অমানবিক আচারন।
(সংগৃহিত)
সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগের শর্তাবলী সংক্রান্তে"
সাধারণত স্নাতক ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ নিয়োগের শর্তাবলীর মধ্যে অন্যতম হল প্রার্থীকে অবশ্য অবিবাহিত হতে হবে এবং প্রাথীর বয়স ১৯ হতে ২৭ বছর-এর মধ্যে হতে হবে। প্রথমে আসি বয়সের প্রসঙ্গে। আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষার সুবিধার তুলনায় জনসংখ্যার স্থুলতার কারণে সিংহভাগ শিক্ষার্থীকে লেখাপড়া করতে হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে মারাত্মক সেসন জট। সেখানে ১৭/১৮ বছর বয়সে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে একজন শিক্ষার্থীর ৪ বছরের অনার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করতে প্রায় ৭/৮ বছর লেগে যায়। তখন তার বয়স দাড়ায় ২৫/২৬ বছর। এরপর ১ বছরের স্মাতকোত্তর শেষ করতে লাগে আরও ২ বছর। কাজেই কাঙ্খিত শিক্ষাগত যোগ্যতা অজন করে একজন শিক্ষার্থী ২৭ বছর বয়সের মধ্যে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিকবার অংশগ্রহণের সুযোগ পায় না।
আর যে শিক্ষার্থী পুলিশ অফিসার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে নিজেকে সুশিক্ষিত ও বিকশিত করে তুলেছে নিয়োগযোগ্য পদের সংখ্যার তুলনায় প্রাথীর সংখ্যা বিপুল হওয়ার কারণে একবার তীব্র প্রতিযোগিতায় নিজেকে প্রমাণ করতে না পারলে দ্বিতীয়বার আর তার বয়স শর্তাধীনে থাকে না। ফলে তার পুলিশ অফিসার হওয়ার স্বপ্নটা চিরতরে অপূর্ণ থেকে যায়। কারণ বিসিএস পাশ করে সে যে এএসপি হিসেবে জয়েন করবে সেখানে প্রতিযোগিতা আরো তীব্র। নিয়োগযোগ্য সংখ্যাও থাকে কম। একাধিকবার চেষ্টা করার বয়স এক্ষেত্রও বেশি থাকে না।
তাই বয়সের সংকটের কারণে একাধিকবার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ না পাওয়ায় অনেকে যে কোন কৌশলে চাকুরীটা পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। ফলে তারা কাঙ্খিত চাকুরী পাওয়ার জন্য দূর্নীতির দিকেও ধাবিত হয়। আর সাব-ইন্সপেক্টর পদের প্রার্থীর প্রারম্ভিক বয়স বলা হয়েছে ১৯ বছর। যা বাস্তবতা বর্জিত। কারণ বাংলাদেশে ১৭/১৮ বছর বয়সে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯ বছর বয়সের মধ্যে (মাত্র ১ বছরে) স্মাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করা কোন শিক্ষাথী বা শিক্ষা প্রতিষ্টানের পক্ষে সম্ভব নয়।
যে সকল শিক্ষাথী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তাদেরও স্মাতক সম্পন্ন করতে অন্ততঃ ২১/২২ বছর বয়স প্রয়োজন। তাই প্রার্থীতার সর্বনিম্ন বয়স ২১/২২ ও সর্বোচ্চ ২৯/৩০ নিধারণ করা উচিত। যাতে আপামর ইচ্ছুক শিক্ষার্থী কয়েকবার করে উক্ত নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।
অপরদিকে, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগের শর্তে বলা হয়েছে, প্রার্থীকে অবশ্য অবিবাহিত হতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুরুষের বিবাহের সর্বনিম্ন বয়স ২১ আর মহিলার ১৮ বছর।
তাহলে একজন প্রার্থী সরকারী আইন অনুযায়ী (পুরুষ ২১ এবং মহিলা ১৮ বছর বয়সের পর) বৈধভাবে বিবাহ করলে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদের প্রার্থীতা বাতিল হবে কেন? সরকারী আইনানুযায়ী বৈধভাবে বিবাহ করে সরকারী সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে কেন? অন্যদিকে, ৩০ বছর বয়সাধীনে এএসপি (বিসিএস পাস) প্রার্থী বিবাহিত হলেও তার প্রার্থীতা বাতিল হয় না। সরাসরি পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর ও বিসিএস পাস করে এএসপি পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা প্রত্যেকেই পুলিশ একাডেমীতে ১ বছর মেয়াদী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। উভয় প্রার্থীর শারীরিক প্রশিক্ষণের ধরণ প্রায় একই। মনস্তাত্ত্বিক বা বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞানগত প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে উভয় প্রার্থীর উপরই যথেষ্ট চাপ থাকে। তাহলে পুলিশের এএসিপ প্রার্থী বিবাহিত হলে যদি সমস্যা না হয় তাহলে সাব-ইন্সপেক্টর প্রার্থী বিবাহিত হলে সমস্যা কোথায়? আবার, কনস্টেবল পদে ভর্তি হয়ে বিভাগীয় পদোন্নতির মাধ্যমে সাব-ইন্সপেক্টর হচ্ছে এবং পুলিশ একাডেমীতে প্রশিক্ষণও গ্রহণ করছে।
এক্ষেত্রেও বিবাহ কোন বাঁধা হয়ে দাড়াচ্ছে না। সরাসরি এবং বিভাগীয় সাব-ইন্সপেক্টর কর্মক্ষেত্রে একই সরকারী দায়িত্ব পালন করছে। তাহলে সরাসরি নিয়োগপ্রার্থীদের বিবাহটা বাঁধা হয়ে দাড়াবে কেন?
অতএব, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের অন্যান্য পদের ন্যায় পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিবাহিতদেরও সুযোগ দিয়ে এবং সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছর-এ উন্নীত করে চলমান উপরিউক্ত বৈসাদৃশ্যসমুহ এবং অন্যান্য অসামঞ্জস্য দূর করে আপামর শিক্ষার্থী/চাকুরীপ্রার্থী জনগণের প্রাপ্য বৈধ অধিকারে সামঞ্জস্য আনায়নের জন্য যথাযথ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।