তিনি একজন মানুষ, তিনি একজন বাবা।
তিনি কেমন বাবা জানি না, তবে তার পিতৃসুলভ ভূমিকা অন্য কোন বাবার তুলনায় কম নয়। একটা দুটা উদাহরন দিই।
তিনি যে অফিসে চাকরী করেন তার আয়োজনে ইফতার পার্টি। থ্রি স্টার হোটেলে ইফতার পার্টি।
তিনি স্বপরিবারে র্ওয়ানা করলেন পার্টিতে যোগ দেবার জন্য - স্ত্রী এবং তিন সন্তান। ইফতার পার্টিতে স্বপরিবারে যোগ দেবার ব্যাপারে তিনি এতটাই উত্তেজিত যে রাস্তায় নেমেই তিনি একটি নীল ট্যাক্সি ক্যাব ভাড়া করে ফেললেন এবং সবাইকে নিয়ে চললেন। রাস্তায় স্ত্রী এবং পরিবারকে তার অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দদের সালাম এবং সম্মান দেখানোর বিস্তারিত নিয়ম কানুন শেখালেন। আরও জানিয়ে দিলেন পার্টিতে বসে কোন কথা বার্তা নয়, চুপচাপ থাকতে হবে, ছোট বাচ্চাটা যেন ভুলেও না কাদেঁ তা নিশ্চিত করতে হবে, কারন অনেক নামীদামি গেস্ট থাকবেন যে।
উত্তেজিত অবস্থায় তিনি পৌছুলেন এবং উত্তেজনার বসে ট্যাক্সি থেকে নেমে দরজা বন্ধ করার সময় তার ছোট বাচ্চাটির হাত যে চাপা দিচ্ছেন সে ব্যাপারে কোন খেয়ালই করলেন না।
বাচ্চাটি চিৎকার করছে, তিনি টের পাচ্ছেন না। ... আশেপাশের কিছু মানুষের চিৎকারে তার সম্বিত হলো।
ইফতার পার্টিতে ইফতার শর্ট পড়ে গেল। তিনি লজ্জিত বোধ করছেন, স্বপরিবারে এসে যদি ইফতার না খেতে পারেন তাহলে ইজ্জত থাকছে না। এই পরিবারকে ইফতার করানোর জন্য তিনি উদ্ভট কাজ শুরু করলেন।
পরিবারকে বসিয়ে রেখে একটু পর পর তিনি উঠে যাচ্ছিলেন এবং ফেরার সময় কিছু না কিছু নিয়ে আসছিলেন। ঘাটতি পড়া ইফতার পার্টিতে উচ্ছিস্টগুলো তুলে নিতে তার তেমন লজ্জা লাগছিল না ....
সেই একই মানুষটা পরের বছরও একই কাজ করলেন। অফিসের ইফতার পার্টিতে যোগ দেয়ার জন্য স্ত্রীকে ফোন করে অস্থির করে তুললেন। এবার চায়নিজে। সন্তানদের সাথে নিয়ে স্ত্রী যখন পৌছুলেন তখন আযান হচ্ছে, তাদের জন্য কোন প্যাকেট বরাদ্দ নেই।
স্ত্রীকে পানির বোতল দিয়ে ইফতার করালেন, বাচ্চারা মাঠের দোলনায় ক্যাচ কোচ শব্দ তুলে দুলতে লাগলো, দুলতেই লাগলো, দুলতেই লাগলো।
মানুষ হিসেবে এই মানুষটা বোধহয় অনেক ব্যার্থ, তবে বাবা হিসেবে বোধহয় নয়।
এবং সত্যি বলছি, এই মানুষটা আমার কেউ হন না ...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।