চোখ খুবলে নেয়া অন্ধকার, স্ফুলিঙ্গ জ্বেলে দাও!
“শাশ্বত শান্তির যারা তারাও যুদ্ধে আসে
অবশ্য আসতে হয় মাঝে মধ্যে
অস্তিত্বের প্রগাঢ় আহবানে
কেউ আবার যুদ্ধবাজ হয়ে যায় মোহরের প্রিয় প্রলোভনে। ”
মহান জনগণের সংস্কৃতি নির্মাণে, প্রতিক্রিয়াশীল তথ্য ধ্বংসে অর্থাৎ শ্রেণী নিরপেক্ষ শিল্প, জীবন ও রাজনীতি বিচ্ছিন্ন শিল্প, ভোগবাদী সংস্কৃতি প্রতিরোধে, জনগণের বিপ্লবী চেতনার পতাকা উর্দ্ধে তুলে ধরা এ যুগের কর্তব্য বলে আমরা মনে করি। যে যুগে যুদ্ধবাজেরা পৃথিবীজুড়ে রক্তের হোলি খেলায় মেতে ওঠে দখলের উৎসবে। আমরা মনে করি আমাদেরও যুদ্ধে যেতে হবে, আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায়। কবিতায় জাগবে প্রতিরোধ, চেতনার অলিন্দ শাণিত হবে জনগণের প্রকৃত মুক্তির পথ রচনায়।
প্রপদ জনগন বিচ্ছিন্ন সংস্কৃতির ভিত্তি ভেঙ্গে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিপ্লবী সাংস্কৃতিক আন্দোলন বেগবান করতে চায়।
আমাদের যাত্রায় সহযাত্রী হবার আহবান থাকল।
“ রুখে দাঁড়বার এসেছে সময়
মাথা উচু করে দাঁড়াও মানব সম্প্রদায়
বল, আমরা ভাষাহীন নই, অসহায় নই,
আমরা সহ্য করতে জানি, প্রতিবাদ করতে জানি”
প্রপদ কি?
প্রপদ একটি বিপ্লবী সাংস্কৃতিক সংগঠন। প্রগতির পরিব্রাজক দল এর সংক্ষিপ্ত নামই হচ্ছে প্রপদ।
প্রপদ’র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ
প্রপদের লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের প্রকৃত স্বাধীনতা ও গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।
লক্ষ্যে স্থির থেকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং জনগণের সংস্কৃতির বিকাশকে ত্বরান্বিত করে জনগণের রাজনৈতিক কর্তব্য পালনের এক মতাদর্শিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করাই হল প্রপদের উদ্দেশ্য।
প্রপদ কেন?
শোষক শ্রেণী তার শোষণ টিকিয়ে রাখার জন্য মানুষকে মতাদর্শিকভাবে ও চিন্তার দিক থেকে পঙ্গু করে রাখে। এজন্য সে দখল করে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্র। পত্রিকা, মিডিয়া, গান, নাটক, সিনেমা, কবিতা, শিক্ষা ব্যবস্থা প্রভৃতিতে মানুষের কথা, তাদের জীবন সংগ্রামের কথা, তাদের সংস্কৃতি থাকেনা। এখানে থাকে বিমুর্ততা, হতাশা, বাণিজ্যিকতা, আত্মসর্বস্ব, ভোগবাদী মনোবৃত্তি ও সমাজের এলিট শ্রেণীর সমস্যা, তাদের সুখ, দুঃখ প্রভৃতি।
এখানে চলে ভারতীয় এবং পশ্চিমা সংস্কৃতির নোংরা ও বিরক্তিকর অনুকরণ। পত্র-পত্রিকা এমনকি স্কুল-কলেজের শিক্ষা ও নানা বিভ্রান্তিতে ভরা। মানুষ কখনোই সত্যকে জানতে পারেনা। সমাজ ও দেশকে বুঝতে পারেনা। নিজের করনীয় ঠিক করতে পারেনা।
এর সবচেয়ে বেশি শিকার হয় দেশের তরুন সমাজ। তাই প্রপদ পরিচালনা করছে এ বিপ্লবী সাংস্কৃতিক আন্দোলন।
বিপ্লবী সাংস্কৃতিক আন্দোলনের লক্ষ্য হচ্ছে প্রপদ জনগণকে জাগরিত করে প্রতিক্রিয়াশীল সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চায়। সংগ্রামের প্রশ্নে জনগণকে জাগরিত, সংগঠিত ও আত্ম বিশ্বাসী করে তুলতে চায়। প্রকৃত সত্য মানুষের সামনে তুলে ধরতে চায়।
কারন মানুষ যত বেশী এই বিষয়গুলো জানবে ততবেশী করে সমাজ পরিবর্তনের জন্য সংকল্পবদ্ধ হতে পারবে মুক্তি অর্জনের জন্য।
প্রপদের কার্যক্রমের ধরণ
প্রপদ ছাত্র-বুদ্ধিজীবীদের প্রচারমূলক কাজের মাধ্যমে শ্রমিক-কৃষকের কাছে পাঠাবে। আমাদের প্রধান কাজ হল বিপ্লব ও সংগ্রামের কথা প্রচার করা। পত্রিকা, গান, নাটক, লেখালেখি, সভা, সেমিনার প্রভৃতি হাজারো উপায়ে প্রপদ শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, বুদ্ধিজীবী, মধ্যবিত্তদের মধ্যে প্রচার মতগঠন করবে। সেই সাথে প্রপদ শ্রমিক-কৃষকের সংস্কৃতিকেও ।
এভাবে মানুষের মধ্যে যাওয়া ও আসার মাধ্যমে আমরা শক্তিশালী সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারব। এছাড়াও লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে নিম্নোক্ত কার্যক্রমগুলো প্রপদ হাতে নিয়ে থাকে-
# শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে গণ পর্যায়ে আলোচনা করা। এ চর্চা ও প্রচারের অংশ হিসাবে কাগজের কম্পাস, সাহিত্যপত্র, বিজ্ঞান সাময়িকী, দেয়ালিকা ইত্যাদি প্রকাশ।
# অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করা। এজন্য প্রচারপত্র, পোস্টারিং, সমাবেশ, আলোচনা ইত্যাদি করা।
যেমন-পর্ণোগ্রাফি, অশ্লীল চলচিত্র বিরোধী আন্দোলন।
# বিজ্ঞান ক্লাব ও বিজ্ঞান আন্দোলন গড়ে তোলা। প্রদর্শণী, আলোচনা ইত্যাদি আয়োজন করা।
# পরিবেশ আন্দোলন গড়ে তোলা।
# গণমুখী গাণ, নাটক ইত্যাদির জন্য সাংস্কৃতিক দল গড়ে তোলা।
গণমুখী চলচ্চিত্র প্রদর্শণ করা।
# লাইব্রেরী গড়ে তোলা। বইপড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভালো বই পড়তে উৎসাহী করা।
# জনগণের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ বিভিন্ন দিবস উদযাপন করা। যেমন-নূর হোসেন দিবস, ২১শে ফেব্র“য়ারি, শিক্ষা দিবস ইত্যাদি।
# শিক্ষা বঞ্চিত শিশু ও বয়স্কদের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা।
# বন্যা, মঙ্গা, নদী ভাঙ্গন, মহামারী ইত্যাদি যে কোন দুর্যোগে জনগণের জন্য সহায়তামুলক কার্যক্রম গ্রহন করা। একই সাথে দূর্ভোগ নিরসনের জন্য আন্দোলন করা।
# শীত বস্ত্র সংগ্রহ ও বিতরণ করা, আন্দোলন গড়ে তোলা।
# শিক্ষার দাবিতে সংগ্রাম করা, জনমত ও আন্দোলন গড়ে তোলা।
এজন্য প্রচার, প্রদর্শণী ইত্যাদি করা।
# সকল ধরনের কার্যক্রমে শিশু-কিশোর উপযোগী কার্যক্রম রাখা।
# স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য অব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা।
আমাদের প্রত্যাশা
আমরা প্রত্যাশা করি, প্রাথমিকভাবে ছাত্র-তরুনদের সংগঠিত করে একটি অঞ্চলে ধীরে ধীরে শক্ত ভিতের উপর দাঁড়াতে পারবে। আর একই সময়ে স্থানীয় স্কুলেও অনুজদের গড়ে উঠবে নতুন দুনিয়া গড়ে তোলার জন্য একটি সংগঠন।
সেই সাথে এলাকায় গড়ে উঠবে শক্তিশালী সাংস্কৃতিক আন্দোলন। এভাবেই ক্রমান্বয়ে দেশব্যাপী কোটি মানুষকে সংগঠিত করে একটি বিপ্লবী চেতনা/মতাদর্শ নির্মানের কাজ আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব যার ফলে বিরাজমান সমাজ ব্যবস্থা পাল্টে দিয়ে সম্প্রসারণবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, আমলাতান্ত্রিক পুঁিজবাদ, সামন্তবাদ ও প্রতিক্রিয়াশীল বুদ্ধিজীবিদের সকল ক্ষমতা উচ্ছেদ করার জন্য দেশের মানুষ সংগঠিত ও প্রস্তুত হয়ে উঠবে। অসুস্থতার মাঝেও একটা সুস্থ পরিবেশ গড়ে উঠবে। আর সারাদেশময় সংগঠন বিস্তৃতি লাভ করলে আমরা জাতীয় ভিত্তিতে এ আন্দোলনকে জেগে উঠতে দেখবো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।