আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চুরুটে কয়েক টান

কত আজানারে জানাইলে তুমি, কত ঘরে দিলে ঠাঁই দূরকে করিলে নিকট,বন্ধু, পরকে করিলে ভাই।

ছোটবেলায় হেন দুষ্টামি নাই যা করি নাই। আমাদের সব দুষ্টামিকে প্রশ্রয় দিত বাবা। আমার ছোটবেলা থেকে আজ পর্যন্ত আমার জীবনের প্রতিটা মূহুর্ত যেন বাবার তৈরী। বাবা এখনও আমাকে পথ দেখায়।

আমার বাবা ছিলেম আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু, গাইড এবং প্রিন্সিপাল। বাবার প্রশ্রয় ও মার কঠোর শাসনে বেরে উঠা আজকের আমি। আমার বাবা ছিলেন স্মোকার। তিনি সিগারেট ঠোঁটে ঝুলিয়ে টেলিফোনে তার রুগীর সাথে রাগারাগী করতেন "আপনাকে সিগারেট টানতে নিষেধ করেছি এই মুহুর্তে সিগারেট বন্ধ করুন। " বাবার হার্ট এ্যটাক করার পর তাকে বাসায় আনা হয় ।

তখন তিনি সম্পূর্ন বেড রেস্টে আছেন এবং ধূমপান একেবারে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তার জন্য। একদিন তিনি চুপি চুপি দোকানে যেয়ে সিগারেট টেনে বাসায় ফেরেন। ধরা পরে আমার ছোট বোনের কাছে। ছোট বোনটা বাবাকে কিছু না বলে দুই প্যাকেট সিগারেট কিনে নিয়ে আসে। সিগারেটের প্যাকেট দুইটি নিয়ে বাবার বিছানায় যেয়ে বসে।

বাবাকে বলে --"তুমি একপ্যাকেট থেকে টানো আমি আর এক প্যাকেট থেকে। দেখি কে বেশি খেতে পারি। " বাবা চুপ করে বসে থাকলেন, আর ছোটবোনটা একটার পর একটা সিগারেট টেনে চলল। পাঁচ নাম্বার সিগারেট টা যখন ধরিয়েছে তখন বাবা ওর হাত ধরে বলেছে -- "মা রে আমি আর কোন দিন সিগারেট খাব না তুই আর টানিস না। কথা দিলাম আর কোন দিন খাব না।

" বাবা ধূমপান করতেন। বেশ ভালোই স্মোকার ছিলেন। আমি তখন ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্রী । বাবাকে কে যেন এক প্যাকেট বার্মীজ চুরুট উপহার দিয়েছে, বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা চলছে টিভিতে। সবাই দেখতে বসেছি।

। বাবা এর মধ্যে বের করলেন তার চূরূট। হাতে চুরুট নিয়ে বললেন-- “খেলাটা একটু আয়েশ করেই দেখি। “ দুই\তিনট টান দিয়ে বাবা বললেন--“ নাহ্‌ এ চলবেনা, এর ঝাঁজ খুব। “ বলেই শুয়ে পড়লেন বিছানায়।

ছোটবোনটা বাবার হাত থেকে চুরুটটা টেনে নিয়ে বলল--“দেখি বাবা! আমি টান দিয়ে কেমন জিনিস। “ বাবা কিছু বলার আগেই ও ফুক ফুক করে অনেকগুলি টান দিল এবং কোন কথা বার্তা ছাড়াই ধপ করে মেঝেতে পরে চিৎপটাং হয়ে শুয়ে পড়ল। আমি বললাম --“এমন তাড়াহুড়া করে টানতে হয় নাকি টানতে হয় আয়েশ করে”-- বলে আমি ওর হাত থেকে চুরুট নিয়ে দিলাম আয়েশ করে লম্বা টান। কিসের টানে যেন পিছাতে লাগলাম। পিছাতে পিছাতে বসে পরলাম পিছনের সোফায়।

বসে মনে হল আমি যেন ডুবে যাচ্ছি সোফার ভিতরে। আবার আর একটা টান দিলাম। আহ, কি নরম সোফাটা আমি ডুবে যাচ্ছি ওর ভিতরে। কিন্তু কেমন যেন মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে এই ভাবে ডুবলে তো চলবে না আমি তো খেলা দেখব।

কিন্তু সোফাটাও যে উলটে যাচ্ছে। উঠে দাড়ালাম সোফা থেকে । কিসের আকর্ষনে আবারও টান দিলাম চুরুটে। যদিও মনে হচ্ছিল আর টানা উচিৎ নয়। মনে হলো ওয়াস রুমে যেয়ে মুখে পানি দিয়ে আসি।

ওয়াস রুমের দরজা খুললাম। কিন্তু কিছুতেই ভিতরে যেতে পারছি না। ওয়াস রুমের লাইটও জ্বলছে কিন্তু ভিতরে যেতে পারছি না। শব্দ শুনে পাশের ঘর থেকে মা বের হয়ে এসে আমাকে বললেন--“ এই ফ্রিজে কি খুঁজছো? কিছু খাবে?” আমি তখন ঘুরে মাকে বললাম --“ওয়াস রুমে ঢুকতে পারছি না” --বলেই মেঝেতে শুয়ে পরলাম। হটাৎ চিৎকার চেঁচামেচিতে উঠে দেখি ভাইয়া একাই চিৎকার করছে ব্রাজিল জিতেছে তাই।

বাবা উঠে ছোট বোনকে জিজ্ঞাস করছে --“কি গোল হলো?” ওতো মিন মিন করছে।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।