হাইডি আর আমি ঠিক করলাম ভিয়েতনামে ব্যাক প্যাকিং এ যাবো দু সপ্তাহর জন্য..সংগে যাবে হাইডির ৪ আর ৬ বছরের মেয়ে দুটি....আহ কি এক মহা আইডিয়া!!!
প্লান হলো হাইডি সিংগাপুরে ৫ দিন আমাদের সাথে কাটিয়ে কেম্বডিয়ায় বাচ্চাদের নিয়ে সাতদিন ব্যাক প্যাকিং করে হো চি মিন সিটিতে ১২ই জুলাই আমার সাথে যোগ দেবে।
১লা জুলাই হাইডি গ্রেস আর জ্যমাকে নিয়ে সিংগাপুরে ৫ দিন কাটিয়ে কেম্বডিয়ার পথে রওনা দিল.....সে গল্প আগেই বলেছি।
জ্যমা আর গ্রেস হাতে মেহেদি পরে ইনডিয়ান দোকানে ঘুরে ছবি তুললে কেম্বডিয়া দেখার পথে পা বাড়াল। আর আমি দিন গুনতে শুরু করলাম ১২ই জুলাই দুপুর ১২টার ফ্লাইটের!!!
১২ই জুলাই দুপুর ২টায় মাঝারি সাইজের কিন্তু চিমছাম পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আর আলোকিত হো চি মিন সিটির এয়ার পোর্টে গিয়ে পৌছালাম। ইমিগ্রেশন পেরোতে গিয়ে আবারও একই সমস্যায় পরলাম বাংলেদেশি পাসপোর্ট এর জন্য।
অফিসার আমাকে এক পাশে দাড় করিয়ে আমার পাসপোর্ট নিয়ে বসের কাছে গেল অনুমতি নেবার জন্য, পাসপোর্টে আমার যথাযথ ভিসা থাকা সত্তেও। আমি লোকজনে ভরা ইমোগ্রশনে একা দাড়িয়ে, নিজেকে মনে হচ্ছিলো এক বিশাল টেররিস্ট। আধা ঘন্টা পরে ছারা পেলাম।
ট্যাক্সিতে উঠে হটেলে যাবার পথে শহরটাকে দেখবার চেষ্টা করলাম কিছুটা। রাস্তা গুলো কিছুটা ঢাকার মোহম্মদপুরের মতো তবে ঢাকা ওদের চাইতে আর্কিটেকচারাল দিকদিয়ে অনেক উন্নত, বলা যায় ওরা অনেকটা কেম্বডিয়ার মত।
বিল্ডিং গুলো ন্যারো আর পিছন দিকে লম্বা।
পুরোনো ধাচের। প্রচুর ছোট ছোটো রেসট্যুরেন্ট আর হোটেল, ওয়েস্টর্ান ট্যুরিস্টে ভরা শহর। রাস্তা ভরা শুধু মটর সাইকেল।
মনে হয় জন প্রতি একটা করে মটর সাইকেল আছে ওদের।
মটর সাকেল ভারাও পাওয়া যায় সারাদিনের জন্য যেখানে সেখানে। ছেলে মেয়ে সবার মটর সাইকেলই একমাত্র বাহন। আবার মটরসাইকেল ড্রাইভার সহও ভাড়া পাওয়া যায়। যা আমরা পরের দিন ভাড়া করেছিলাম।
প্রচুর ইলেকট্রিসটি, ডিশ আর ইনটেরনেটের কেবল ঝুলছে রাস্তায় মাথার উপর যা আমাকে ঢাকার কথা মনে করিয়ে দিল।
সিংগাপুরে সব তার মাটির নিচে তাই ওখানে ওগুলো দেখে চোখ পরল খুব বেশি।
ব্যক প্যাকিং এর প্লান তো তাই খরচ কমাবার জন্য মাঝারি টাইপরে হোটেল বুক করেছিলাম আমি আর হাইডি ইনটারনেটে সিংপুর থেকে। হোটেল গিয়ে যখন পৌছালাম তখনও হাইডি পৌছেনি তবে ওরা অন দ্যা ওয়ে।
৭ তলার উপর আমাদের রুম নো লিফ্ট !!! নট ব্যাড বাট সামথিং ফিশি ফিল করলাম রুম বয় আর কেয়ারটেকার এর আচরনে। এনি ওয়ে আঘন্টার ভেতর শুনতে পেলাম জ্যমা'র গলা " হেই কোথায় তুমি " !!!!! ওর চিৎকারে সারা হোটেল জেগে উঠল ঘুম দুপুরে !! দুবোন আমাকে পেয়ে খুশিতে উপর নিচ লাফাতে লাগলো।
৪ টার দিকে আমরা খেতে বের হলাম। যাবার সময় ক্যমেরা টা নিলাম না খুব টায়ার্ড ছিলাম ভাবলাম পরের দিন সকাল থেকে ছবি তোলা শুরু করব।
ওদের মজার রিক্সা চেপে খানিক ঘুরে, খাওয়াদাওয়া করে কাছের হস্তশিপের দোকান গুলোতে ঘুরলাম।
ওরা চমৎকার হাতে বোনা বা ক্রস স্টিচের ব্যাগ আর জুতো বানায়। চমৎকার সিল্ক স্কার্ফ তৈরী করে।
আর পাপেট!!!
তবে সবার ব্যবহার খুবই রুক্ষ এটা শুরুতেই চখে পরল।
রাতে যখন রুমে ফিরলাম আমরা চার জন ই প্রচন্ড টায়য়ার্ড। বিছানায় পরে মরার মত ঘুমে ঢলে পরলাম। ঘুমানোর আগে চেক করলাম আমার ক্যামেরা আর ল্যাপটপ ঠিক আছে কিনা, দরজা বন্ধ আছে কিনা আর চাবিটা রাখলাম মিনি বারের উপর।
পরের দিন সকালে উঠে রেডি হয়ে যখন নিচে নামব, ক্যমেরা টা নিতে গিয়ে দেখি টেবিলের উপরে রাখা ক্যমেরার ব্যাগ টা উধাও!!! ওতে আমার ক্যমেরা আর দাম দুটো লেন্স ছিল।
আমার তো মাথা খারাপ হবার যোগার । তন্ন তন্ন করে রুমে খুজেও পেলামনা। নিচে রিসেপশনে যাবার জন্য বেরতেই দেখি রুমের চাবি দরজার বাইরে ডোর নবের সাথে ঝুলছে।
........চলবে!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।