অতীত খুড়ি, খুঁজে ফিরি স্বজাতির গুলিবিদ্ধ করোটি
বাংলা ব্লগে কিছু শব্দ এখন ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। শব্দার্থই যে গেছে বদলে! তালিকায় শীর্ষ নাম নিঃসন্দেহে ছাগু। এ দিয়ে এখন আর কেউ ছাগল নামের গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তুটি বোঝে না। বোঝে বিশেষ ঘরানার কিছু মানুষকে। যারা স্বাধীনতা বিরোধী রাজনীতি করে এবং প্রতিষ্ঠিত স্বাধীনতা বিরোধীদের কার্যক্রম জায়েজ করতে সারাক্ষণ নানা অপপ্রচারে ব্যস্ত।
একই গোষ্ঠীর সৌদী প্রবাসী মুখপাত্রগুলো আবার উটু নামে পরিচিত। মরুভূমির উটের অপভ্রংশই উটু হয়ে তাদের নামের আগে জুড়ে গেছে।
নতুন যে কোনো ব্লগারই কিছুদিন ব্লগিংয়ের পরই প্রশ্ন তোলেন- ছাগু মানে কি? আরেকটু সময় পেরুনোর পর তাদের জিজ্ঞাস্য হয়- এই নামটা দিলো কে? প্রথম প্রশ্নের উত্তর তো শুরুতেই দেওয়া হয়েছে। পরেরটা নিয়ে বেশ বিভ্রান্তিকর তথ্য পাওয়া যায়। অনেকে এ-টিম পূর্ব ব্লগযোদ্ধাদের (যারা এইসব স্বাধীনতাবিরোধীদের দেখলেই হুড়ো দিতো) আবার অনেকে এ-টিমকে দেয় এই কৃতিত্ব।
আবারও বিচ্ছিন্ন কিছু ব্লগারের নামেও যায় তা, যা অনেক সময় এই অধমের বরাতেও জোটে। কিন্তু অবশেষে এই বিতর্কের একটা সুরাহা করতে পেরেছি মনে হচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধের উপর একাডেমিক পাঠের অংশ হিসেবে পাকিস্তানী দলিলপত্রও পড়ছি। ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা বেশ বড় হলেও অনেক কিছুই এখনও চোখ বোলানো হয়নি। পড়ছিলাম ইয়াহিয়া খানের জার্নাল।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২০ ডিসেম্বর জুলফিকার আলী ভুট্টোর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন পাকিস্তানের এই সাবেক রাষ্ট্রপতি কাম জেনারেল। এরপর তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয় বন্নির এক ফরেস্ট বাংলোয়। সেখানে কিছুদিন থাকার পর রওয়ালপিন্ডীর ৬১ নং হার্লে স্ট্রিটে নিজের বাড়িতেই গৃহবন্দী হয়ে থাকেন একসময়কার প্রবল ক্ষমতাধর এই প্রেসিডেন্ট। সেখানেই এক স্ট্রোকের পর পক্ষাঘাতগ্রস্থ অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
পাকিস্তানী সাংবাদিক আরদেশীর কাওয়াসজী দ্য ডন পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করেছেন ইয়াহিয়ার জার্নাল নিয়ে।
এ নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে সামনে। মূলত পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশ হওয়ার প্রশ্নে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন ইয়াহিয়া। বিচারপতি হামদুর রহমানের নেতৃত্বে এ বিষয়ে যে তদন্ত কমিশন বসেছিলো সেখানে সব দোষ নিজের ঘাড়ে নিয়েছিলেন, তারপর দাবি করেছিলেন তার যেন প্রকাশ্য বিচার হয়। সেটা হতে দেননি ভুট্টো। এরপর তার শাসনামলে অনেকবারই ইয়াহিয়াকে ভিলেন বানিয়ে নিজে হিরো সেজেছেন।
ক্ষুব্ধ ইয়াহিয়া দলিল-প্রমাণ সহকারে সেগুলোকে মিথ্যে প্রমানের চেষ্টা চালিয়েছেন তার জার্নালে, যা লিখেছেন ১৯৭৬ সালের দিকে।
এই পর্যায়েই তিনি ভুট্টোকে অভিহিত করেছেন 'শোরা' বলে। ফার্সি ভাষায় এর অর্থ ঝুলে পড়া নীচের ঠোট, অনেকটা উটের মতো। প্যাথলোজিকাল লায়ার বোঝাতে এই স্ল্যাঙটি ব্যবহার করেছেন ইয়াহিয়া। কাওয়াসজীর লেখায় বর্ণনাটা এভাবে এসেছে : "Hitler's propaganda Minister, Dr Josef Goebbels had said - 'tell so many lies so many times that people start believing them as truth' (or words to that effect). Nobody has been a more faithful student of Dr Goebbels than Shora."
'Shora' Who, what, I asked Ali. It was Yahya's nickname for Bhutto. In Persian slang it means 'a drooping lower lip', like that of a camel.
গোয়েবলসের বেশ মনযোগী ছাত্র হিসেবে ভুট্টোকে মূল্যায়ন করেছেন ইয়াহিয়া।
আর এ প্রসঙ্গেই তার সঙ্গে সুর মেলানো তাবেদার এবং গণমাধ্যমের বিশেষ কিছু মুখপাত্রকে ছাগল বলেছেন তিনি। একদম গোট অর্থে ছাগল। তার ভাষায় : "....Nobody has been a more faithful student of Dr. Goebbels than Shora.
"No government in the world has tried to build its image so much by maligning the previous government in order to build its own image, mostly based on falsehood. Example - we have created the Province of Baluchistan, we have brought a Russian steel Mill which the previous government did not have the courage to do, we merged the states in Pakistan. We started the heavy mechanical complex in Taxila from [the] Chinese, we thought of the 5th tunnel of the Tarbela Dam, we started the Islamic Summit Conference (forgetting the Rabat Conference where India was disgracefully ousted!), we have started the Tribal Area Development (forgetting the Tribal Development Authority started by the previous government). These are a few glaring examples of falsehood, but of course the man is so good and such an expert in telling lies, and so often. The goats of the public media, radio and TV, and other goats like Kausar, Mubashir, Hafeez and all the unscrupulous yes-men have proved to be true followers of Goebbels and Shora.
সত্যি বলতে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত ভুট্টো ও তার তাবেদাররা আসলে যে ভাষায় কথা বলেছেন, সেসব মিথ্যে প্রচারণা চালিয়েছেন বাংলাদেশ নিয়ে তার অনেক কিছুরই অনুরনন আমরা পাই নব্য ছাগু ও উটুদের কণ্ঠে। দুঃখ এটাই যে কৃতিত্বটা শেষ পর্যন্ত নিলেন কিনা ইয়াহিয়া! সুখের বিষয় এই যে তিনি তা প্যাটেন্ট করে যাননি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।