আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়!!!

অকাট মূর্খ যাকে বলে আমি তাই। সুতরাং জ্ঞানীরা বেশি জ্ঞান দিলে আমি চাইয়া চাইয়া দেখা ছাড়া কিচ্ছু করতে পারিনা। পোড়া কপাল!!
আক্ষেপ.........খুব আক্ষেপ নিয়ে লিখতে হয়, এটাই যন্ত্রণার। চারপাশে আক্ষেপের অসংখ্য উপাদান ছড়িয়ে ছিটিয়ে, কী আর করা। অবশ্য কষ্ট হয় খুব ।

খারাপ লাগে। ওইদিন পাড়ার একটা কনসার্ট এ প্রথম ক্লোজ আপ ওয়ান নোলক গান গাইল। ভালোই লেগেছিল। কিন্তু দর্শক-শ্রোতাদের কাছ থেকে তেমন একটা রেসপন্স পেলনা। কারন ও যেমন গান গায় তাতে দর্শক-শ্রোতারা নাচা-নাচি করতে পারেনা।

রেসপন্স কিভাবে পাবে!আমার অবশ্য ভালোই লাগছিল। রেসপন্স না পেয়ে মাঝখানে নোলক তার নিজের ট্র্যাক থেকে বের হয়ে কয়েকটা ধুম ধারাক্কা গানও গেয়ে ফেলল। শেষে দর্শকদের অনুরোধে একটা হিন্দী গান গাইল। অবশ্য দর্শক-শ্রোতাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে এবং "আমি আসলে হিন্দী গান গাইনা" জাতীয় কথা বলে সে গান শুরু করেছিল। আর হিন্দী গানের সাথে দর্শক-শ্রোতাদের সাড়া ছিল অভূতপূর্ব।

সবাই নেচে গেয়ে এবং গানের সাথে সাথে গলা মেলাচ্ছিল। অথচ একটু আগেও বারী সিদ্দীকি, আব্দুল করিম,কুমার বিশ্বজিৎদের গান যখন নোলক গাইছিল তখন তারা ছিল নিস্প্রভ এবং বিরক্ত। আমাদের এই হিন্দী প্রিতি আসলে কীসের ইঙ্গিত বহন করে তা আমি না জানলেও এটুকু জানি এ এক মারাত্মক সতর্ক সংকেত বহন করে। হিন্দী গানে দর্শক শ্রোতাদের এমন সাড়া পেয়ে নোলক তার পরবর্তী এবং শেষ গানটা হিন্দীই গেয়েছিল। এভাবে আমরা শিল্পীদেরও ট্র্যাকচ্যুত করছি।

খুবই দুঃখজনক। কাল আমার এক জুনিয়র এসে বলে, "ভাই চলেন একদিন একটু এনজয় করে আসি। " আমি বলি "কিভাবে?" ও বলে "চলেন ডি.জে .পার্টিতে একটু হৈ-হুল্লোড় করে আসি। আপনার নিরামিশ জীবনধারণ দেখতে ভালো লাগে না। আর আমারও ইচ্ছা নতুন কিছুর স্বাদ নেয়া।

" আমি উত্তরে শুধু বলেছিলাম, "নতুনের স্বাদ নিতে হলে অন্যভাবেও নেয়া যায়। সামাজিক রীতি এবং অনূভূতির সাথে মানানহীন কিছু করতে আমার রুচি সায় দেয়না। " ও আরেকটা কথা বলেছিল। এক মেয়ের কথা। গাঁজা টাজা খায় ওই মেয়ে।

এখন ইঞ্জেকশানের মাধ্যমে ড্রাগ নেয়ার পর্বে আছে। তার নাকি খুব শখ সে গর্ভ ধারনের স্বাদ নিবে। এবং এ ক্ষেত্রে তার বয়ফ্রেন্ডের হেল্প নিবেনা। নিবে অন্য কারো। আমি জিজ্ঞেস করি "মাতৃ্ত্বের স্বাদ নিবেনা?" ও জবাব দেয় 'না'।

শুধুই গর্ভধারনের স্বাদ নিবে। আর শেষে "এবরশান"। শুনে অনেক্ষন খারাপ লাগল। রুচির অবক্ষয় কতদূর চলে গেছে। অবিবাহিত অবস্থায় গর্ভধারনের স্বাদ তার পরে এবরশান।

ছিঃ!! কোন পর্যায়ে আজ সামাজিক মূল্যবোধ। তখন আমি ওই ছেলেকে বলেছিলাম "দেখ, এই যে মেয়েটা যে স্বাদ নিতে চায় তা বিকৃ্ত রুচির বহিঃপ্রকাশ ছাড়া কি বলবে?সব কিছুর স্বাদ নেয়া সুস্থ মানুষের উচিৎ না তা যতই ব্যতিক্রমী হোকনা কেন। " ও বলল "ভাই দূর থেকে নাটক দেখতে দোষ কি?" আমি বললাম"জীবনে তো সব সময়েই নাটক চলছে। বিকৃ্তির দিকে যাওয়ার দরকার কি?পারলে নাটকের উপাদান হও, তবে তা যেন ধণাত্মক হয়। পারলে ওই মেয়েটাকে ফেরাও না পারলে দেখারও দরকার নেই।

" আমরা আসলে সবাই একই যায়গা থেকে এসেছি। তবুও নিজেকে অন্যের থেকে আলাদা করে উপস্থাপনের কত তাগাদা। তাও ভালো ভাবে হলে না হয় হতো। এমনকি খারাপ কাজের মাধ্যমেও নিজেকে অন্যের থেকে আলাদা করে দেখানোতে মত্ত আমরা। সংস্কৃতি, নীতিবোধ,সামাজিকতা, ব্যক্তিত্ব আজ উধাও।

শুধুই গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দেয়া। আরো কত যে দেখতে হবে কে জানে! এর মাঝে নাহিদারা অকালে চলে যাচ্ছে। একরাশ আবর্জনার মধ্যে আমাদের রেখে ফুলগুলো এভাবে বিদায় না নিলে হতোনা?ভাবলে খুব কষ্ট হয়।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।