তোকে দেখিনা, কতো হাজার বছর হয়ে গেলো...
অপূর্ব, তুই কি সাভার পৌছে গেছিস? সম্ভবত- হ্যাঁ। রাতে রাস্তায় গাড়ী খুব কম থাকে। তাই তোর যানজটে পড়ার আশংকা নেই বললেই চলে। আমি ধরেই নিচ্ছি- তুই সাভার ব্যাংক কলোনিতে পৌছে গেছিস।
তুই খাবার পর প্লেটে যে তরকারিটুকু ছিলো, সেটুকু দিয়ে দুইটা রুটি খেয়ে এইমাত্র রুমে এসে বসলাম।
বিদ্যুৎ নেই। তুই গাড়ীতে উঠার প্রায় সাথে সাথেই চলে গেছে। মোবাইলটা অফ করে রেখেছি। রুমে গাঢ় অন্ধকার। হাতরিয়ে হাতরিয়ে ম্যাচটা খুজে বের করে কুপি জ্বালিয়েছি।
বিছানার উপর বালিশ তিনটি এলোমেলো হয়ে আছে এখনো। তুই- ই করেছিলি। ক্রিস্টালে ছোট্ট গ্লোবটাও বিছানার উপর পরে আছে। অর্ধেক খোসা ছাড়ানো কমলাটা আছে টেবিলের উপর। অর্ধেক তুই খেয়েছিস, আর অর্ধেক রেখেছিস আমার জন্য।
আমি খাবোনা। অন্তত: এখন খাবোনা। সকালে যদি কমলাটা ভালো থাকে, যদি আমার মন চায় তাহলে খেতে পারি।
তুই চলে যাবার পর মনটা ভীষণ খারাপ।
অপূর্ব, তুই জানিস না- তোকে কেন ঘন ঘন বাসায় আসতে বলি।
অবশ্য জানাটা তোর খুব প্রয়োজনও নয়। তবু আজ খুব নির্জনে তোকে জানানোর জন্য লেখে রাখছি। জানিনা- তুই কখনো জানবি কিনা।
রোদ্দুর আর লিখন চলে যাবার পর থেকে আমি খুবই একা। খুব।
রোদ্দুর যদ্দিন এখানে ছিলো- সারাক্ষণ পাশাপাশি থাকতাম। পৃথিবীর কোন যন্ত্রণা আমার কাছে আসতে পারতোনা। আমি আর রোদ্দুর খুব শিখেছিলাম- কিভাবে দু:খকে সুখ দিয়ে বদলে নেয়া যায়।
অপূর্ব, জানলে অবাক হবি- লিখন এখানে থাকলেই মনে হতো আমি একা নই। অথচ ওর সাথে আমার দেখা হতোই না।
পাঁচ দিন, ছয় দিন পর একবার। এটাকে কি আর দেখা বলে! বলে- তবে পাশের বাসার কারো সাথে এমন হলে আর বলেনা। বুঝলি তো কী বলতে চাই?! আর লিখন চলে যাবার পর থেকে এক বিষাদময় শূন্যতা আমাকে সব সময় ঘিরে থাকেরে…
এই একাকিত্বের অবর্ণনীয় যন্ত্রণা ভুলতেই তোকে আমি আসতে বলিরে দোস্ত! অভিমানি তুই হয়তো ভাবছিস- শুধুমাত্র এ জন্যই তোকে আসতে বলি। ভুল। তোর এই ভাবনাটা মস্ত বড় ভুল।
অপূর্ব, তুই জানবিনা। কখনো জানবিনা- আমার অস্তিত্বের কতটুকুজুড়ে তুই আছিস। তুই জানবিনা- হৃদয়ভূমির কতটুকু তোর জন্য বরাদ্দ করা…
বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে খুব। তুই তো আবার বৃষ্টিতে আটকা পরিসনি? পরলে পরেছিস, তাতে আমার কি!? বৃষ্টি তো তুই ভালোই বাসিস…
আচ্ছা, ঐ মেয়েটার নাম যেন কি… সূচী না কী যেন! সেও কি তোর মতো বৃষ্টি ভালোবাসে? তাহলে তো ভালোই হবে… দু’জন মিলে তোর স্বপ্নের চিলোকোঠায় বৃষ্টিতে ভিজবি মজা করে…
আমি তোর জন্য মেঘ এনেছি। যত্ন করে রেখে দেই… তোর বৃষ্টির প্রয়োজনে তোর কাছে পাঠিয়ে দিব…
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।