আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ জিতেই সিরিজ নিশ্চিত হোক

তোকে দেখিনা, কতো হাজার বছর হয়ে গেলো...
গত লেখায় তামিম জুনায়েদ আশরাফুল রকিব আর অধিনায়কের ব্যাটিংয়ের কথা বলেছিলাম। আজ বলবো আমাদের ‘লিলিপুট’ কিপারের গল্প এবং একটা স্বপ্নের কথা। ২০০৫ সালের ২৫শে মে। লর্ডস, ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ- ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ।

সময়টা এমন যে বাংলাদেশ লর্ডসের মাটিতে খেলাটাকেই বড় মনে করে। আর খেলার ফলাফলের ব্যাপারে তখন কোনো চিন্তাই নেই। শুধুমাত্র ছোট্ট একটা লক্ষ্য আছে- ভালো খেলা। ম্যাচটা শুরু হওয়ার দিন পাঁচেক আগে বাংলাদেশ একটা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলো। তিনদিনের।

তো ঐ প্রস্তুতি ম্যাচটাতে বাংলাদেশের ‘পুচকি’ একটি ছেলে সেঞ্চুরি মেরে দিলো! বৃটিশ মিডিয়া তো তাকে নিয়ে মাতলো ভালো করে! ছেলেটার এই দারুণ ইনিংসের কল্যাণে তাকে খেলানোর দাবিটাও একটু জুড়ালো হলো। এবং ম্যাচ শুরুর দিনে তাকে নেয়াও হলো… ছেলেটি মুলত ওইকেট কিপার। কিন্তু ম্যাচটাতে সে খেলতে নামলো স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে! লর্ডসের মাটিতে অভিষিক্ত হয়ে গেলো বাংলাদেশের ‘লিলিপুট’। তার সাথে সাথে আরো অভিষেক হলো ব্যাটসম্যানদের হেলমেট ভাঙতে খুবই আগ্রহী একজন বোলারের- শাহাদাত। বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিং করলেন জাভেদ ওমর ও নাফিস ইকবাল- আমাদের তামিমের অগ্রজ।

এরা স্কোর করলেন যথাক্রমে- ৬০ বলে ২২ এবং ৩১ বলে ৮। এরপর হাবিবুল বাশার আশরাফুল এবং আফতাব আউট হওয়ার পর নামলো লিলিপুট। ফ্লিনটফের দুরন্ত গতীর বলগুলোর সামনে খুব অসহায়ই মনে হচ্ছিলো তাকে। সর্বসাকুল্যে তার স্কোর হলো ৫৬ বলে ১৯। বলার মতো তেমন কিছুনা, তবে এই ছোট্ট ইনিংসেটাতে যে তিনটা চারের মার ছিলো তা বলার মতো।

তিনটার দুইটাই ছিলো লম্বু ফ্লিনটফকে। এবং দুটিই ক্রিকেটর সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন শট- লং অফে ড্রাইভ করে। সেই শটগুলো দেখেই ছোট্ট ছেলেটা অনেক বড় হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু ছেলেটা অনেক সময় গড়িয়ে গেলেও বলার মতো কিছু করতে পারলো না। হতাশাটা তাই বেড়েই চলছিলো দিনদিন।

২০০৭ বিশ্বকাপে ছেলেটা ভারতে বিপক্ষে ম্যাচে বলার মতো একটা দারুণ ইনিংস খেললো। ম্যাচটাতে বাংলাদেশ জিতলো। তিনটা ফিফটি এসেছিলো সেদিন। তামিম সাকিব আর লিলিপুট। মানে টিমের তরুণদের কাছেই সেদিন হেরেছিলো পরাক্রমশালী ভারত।

রবী শাস্ত্রী বলেই ফেলেছিলেন- ভারত হারলো বাংলাদেশের অ১৯ এর কাছে। এরপর দিন অনেক গেছে… লিলিপুটের গড়নটা আগের মতোই আছে। কিন্তু হাতের কাজগুলো বদলে গেছে অনেক। বদলে গেছে বলতে- ছিলো আগেই, তবে আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো ব্যাবহারের উপযোগি হয়েছে। লিলিপুট এখন অনেক পরিণত।

বর্তমানে সহঅধিনায়ক এই লিলিপুট আমাদের নতুন একটা স্বপ্ন দেখায়। অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা থেকে শুরু করে ভারত পাকিস্তান, প্রত্যেক দেশের কিপারই দারুণ ব্যাটসম্যান। কিন্তু আমরা কেন যেন এই ‘দারুণ ব্যাটসম্যান’টাকে পাচ্ছিলাম না। আমরা এখন আমাদের লিলিপুটের মাধ্যমে স্বপ্ন দেখি- আমাদের কিপারও একজন দারুণ ব্যাটসম্যান… তবে তাই হোক… আজ বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ। ইতোমধ্যেই ২-০ হয়ে গেছে।

আজ ৩-০ হলেই সিরিজ বাংলাদেশর। মনে প্রাণে আজ এই প্রত্যাশাই করছি। আজই জিতে সিরিজটা বাংলাদেশের হোক... ( এখনকার অবস্থাটা খুবই আশংকাজনক- ৮২/৪। লেখাটা সকালে নেট প্রবলেমের কারণে পোষ্ট করতে পারিনি। তাই বলে তো আর ফেলে দেয়া যায়না! তা ছাড়া অসম্ভব তো না।

)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।