পাখি এক্সপ্রেস
ভাবিনি তার ঘর এতোটা গোছালো থাকবে। এ রণে এসে একটুও মিললো না। খোঁচা দাঁড়ির সাথে ঘন শব্দজট মিলে, লম্বাচুলের সাথে কড়ারোদও, অমিল শুধু গোছলো ঘরটা। নিরাশ হয়েছি ভীষণ। তবুও ভাবনার সাথে বাস্তবের মিল দেখে কয়েকবার বিজয়ীর মুকুট পরে নিয়েছি।
চুলে বেণী করতে জানি না। সরু সরু অনেকগুলা বেণী বেঁধে দেয়ার ইচ্ছে হওয়াটাকে আমি মোটেও পাগলামো বলি না। বরং তার লম্বা চুলের কারণে মেয়েদের হাসির শব্দে মন বসিয়ে নিলাম। এভাবে তাকে দেখে প্রকৃতিও মন্তব্য করে। চট্টগ্রাম ভার্সিটির খোলামাঠে তাকিয়ে রোদের শুয়ে থাকা দেখছিলাম।
আমার দ্বিতীয় সত্ত্বার তৃতীয় চোখে আচমকা রোদের অদৃশ্য হওয়া টের পেলাম। আহারে! সব রোদ যেন প্রেয়সী চুষে নিলো। বন-বনের গাছ-গাছের ছাল-কাঠ-কাঠের যৌবন আর মাঝের কয়লা, আবার সেই কাঠের অলংকার সবই একসাথে দেখে নিতে পারে, বুঝে নিতে পারে, টুকে রাখতে পারে যারা তাকে পড়ে তাদের জন্য। নির্ঝরের দৃষ্টি একজন নিখাঁদ শিল্পীর দৃষ্টি।
গ্রামের বাড়ির সামনের পুকুরে গুঁড়োফেনার চাদর ছিঁড়ে একটি সড়ক বানাবো।
সে সড়ক গিয়ে ধরবে দীর্ঘকেশী হাইওয়ে। আমরা রোদের গাড়িতে চড়ে যাবো নৈ:শব্দ্যের দেশে। নির্ঝর সে দেশের বাদশাহ। বাতাসে ভেসে থাকা সে নেশার দেশে কেউ পড়বে, কেউ লিখবে, আর কেউ আঁকবে। আমি কেবল প্রেয়সীর চুলে ছোট ছোট বেণী বাঁধবো।
তার সাথে থেকে আমার কবিতা আসেনি। কবিতা আসলে তাকেই চেনে, তাকেই কেনে। আমি অনিয়মিত লেনদেনের সওদাগর। পাওনা বুঝিয়ে দিইনা শব্দের, পঙতির আর কবিতার যৌবনের। কবিতার সাথে নির্ঝরের সংগম এবং সংগমপূর্ব শৃঙ্গার, ক্লাসিকাল এবং ক্লাসিকাল।
কেবল সংগম পরবর্তী ক্লান্তিতে এসেই নির্ঝর নৈ:শব্দ্য অভিনব এবং অদ্বিতীয়ত। কে জানে এমন মূল্যায়ন হয়তো প্রেয়সী বলেই!
শিল্প, নারী এবং নির্ঝর এ তিনের সুখ আর অত্যাচারের শীৎকার পুরো ঘর জুড়ে। নারীকে এমন যত্ন করে, সবুজ করে নুতন বাগানের ফুলের মতো করে সাজিয়ে রাখতে দেখে ভীষন হিংসা হলো। তুলনা করে দেখলাম আমার কাছে নারী মোটেও নিরাপদ নয়। হতাশা আর কষ্টের কাছাকাছি নারীর অবস্থান বেজায় নোংরা।
নির্ঝরের কাছে কেবল প্রেম আছে। প্রেমের কাছে শিল্প এবং শিল্পী নিরাপদ থাকে। শিল্পই শিল্পীকে বাঁচিয়ে রাখবে।
খুব কষ্ট পাবো, যদি কখনো শুনি "নির্ঝর এখন আর কবিতা নির্মাণ করে না, ছবি বাঁধে না"!
নির্ঝর আমার প্রেয়সী। তাকে ভালোবাসি, ভালোবাসি।
তাকে ছেড়ে আসার কিছু পথ পরে ভাগাভাগি করে একটি কবিতা লিখলাম :
: ভালো থাকিস
: তুইও ভালো থাকিস
একলাইনের অমন টেনে ধরা বার্তা মুঠোফোনে আর একটিও নেই।
বিশেষ দ্রষ্টব্য :
নির্ঝর ভালো খিঁচুড়ি রান্না করতে জানে।
(চট্টগ্রাম গিয়েছিলাম। নির্ঝরের কাছে দু'দিন একরাত ছিলাম। কাছ থেকে দেখে তাকে নিয়ে এ লেখাটি লেখার লোভ সামলাতে পারিনি।
যদিও এটি নির্ঝরের জন্য ব্যক্তিগত বার্তা হতে পারতো, তবুও ব্লগে লেখার বিষয়টা বরাবরই জিভে জল আসার মতো। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।