ইমন সরওয়ার
খ্যাতি আর স্থূল-পদবীর লেবেল নিয়ে সামু ব্লগের বিলেত ও বাংলাদেশের কতিপয় নিবন্ধকারী ব্লগের পরিবেশকে নরক-সাদৃশ্য করে তুলেছেন। এ নিয়ে সজ্জনরা খুবই বিরক্ত, এবং নিজেকে এসব থেকে যথেষ্ট দূরে রাখতে প্রয়াসী হয়েছেন। তবে তারা উদ্বিগ্ন নন। সব সময়, সকল পরিবেশে কিছু উচ্ছিষ্ট থাকে, এসব দুর্গন্ধ কেউ না কেউ এসে পরিষ্কার করে দিয়ে যায়। পরিষ্কার করতে গেলে হাতে যে কিছু ডাস্টবিনের ময়লা লাগে না, তা কিন্তু ঠিক নয়।
লাগে, খুব ভালোভাবেই লাগে। কিন্তু আর কোনো উপায়ও নাই।
মূলত এগুলো তর্ক নয়, কুতর্ক। যে কেউ একটি যৌক্তিক প্রশ্ন বা অভিযোগ উত্থাপন করলে সেটাকে কীভাবে প্রসঙ্গ থেকে সরিয়ে ডামাঢোল তৈরি করে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করা যায়, সেই কাজে উঠে পড়ে লেগে যান অভিযুক্তদের নিকনামধারী সদস্যরা। এটা সন্দেহমুক্ত নয় যে, এই নিকনামধারী তারা নিজেরাই।
অর্থাৎ একজন কি দু’জন বহুনামে এসব কান্ডকারখানা ঘটাচ্ছেন, সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। কুতর্ক করে পরিচিত হয়ে উঠার জন্য (পরিচয়টা যেভাবেই আসুক, পরিচিত হয়ে ওঠাই লক্ষ্য) নিজের নিকের সঙ্গে নিজেই বাগবিতন্ডায় লিপ্ত হন। সময়ের কী নিদারুণ অপচয়।
প্রথম অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছিল শামসু নুর নামে জৈনক ব্যক্তির ব্লগ (আমি জানি না এ নামে আদৌ কেউ আছেন কী না, তবে অনেকের লেখা থেকে এটাই প্রমাণিত হয় ভদ্রলোকের সঙ্গে অনেকের পরিচয় আছে এবং কারো কারো আত্মীয়ও তিনি) http://www.somewhereinblog.net/blog/nasiruk
কে বা কারা অপ-ব্যবহার করছেন। তিনি আত্মীয় হোন আর নাই হোক, বন্ধু হোন আর নাই হোন এটা মূল বিষয় হতে পারে না।
মূল বিষয়টি তার ব্লগে অন্য একজন নিজেকে বিজ্ঞাপিত করছেন। আমার ধারণা ছিল, যেহেতু এই নামে একজন কেউ আছেন তার নিজের একটা জবাব তো পাওয়াই যেতে পারে। তখন হয়তো বিষয়টি খোলাসা হবে। লক্ষ্য করা গেলো, প্রকৃত ব্যক্তির কোনো বক্তব্য আসার আগেই তার ব্লগে বসে গর্হিত কাজের অপরাধীরা বিভিন্ন মন্তব্যের নামে গালাগালি অর্থাৎ যা তাদের ভাষা তাই করা শুরু করেছিলেন। সজোরে এও উচ্চারিত হচ্ছিল, কোন এক কবির উপর নাকি অনেকেই ঈর্ষাতুর হয়ে এসব অভিযোগ উত্থাপন করছেন।
বারংবার ‘ঈর্ষা’ শব্দটাকে খুব জোর দিয়ে প্রচার করা হয়েছে যাতে নিজেদের নীতিনৈতিকতা (!) কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। শামস নুরের আত্মীয় বা বন্ধুমহল উদ্বিগ্ন ছিলেন যে বিষয়টি নিয়ে, সেটাকে পাশ কাটাতেই তারা সমস্ত বিষয়টির এমন বেহাল করে তুলেছিলেন। কিন্তু ডামাঢোলে চাপা পড়ে যাবার পরও যে প্রকৃত বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছে সে খেয়াল তাদের নেই। অর্থাৎ সত্য-মিথ্যা বুঝি না, গগণবিদারী চিৎকার দেও, তাতেই প্রশ্নগুলো তলিয়ে যাবে। আসলে কি তলায়?
কেন তলায় না? যারা এ ব্লগে শামস নুরের নামে মন্তব্য করেছেন এবং নিজেদের কবিতা এই মানসিকতা থেকে প্রচার করেছেন যে, দেখ আমরা কত জনপ্রিয়।
(সম্ভবত অনেকের লেখা অন্যজনের ব্লগে দেখে ঈর্ষাতুর হয়ে এমন কান্ডটি ঘটাবার খায়েশ হয়েছিল তাদের। নিজেদের নিকনামে আর কত নিজের কবিতার প্রচার-অভিযান চালাবেন। তাই তাদের একটি পরিচিত মুখ জরুরি হয়ে পড়েছিল। যেনতেন করে সেই মুখ তারা জোগাড়ও করে ফেলেছিলেন, বাঁধ সাধলো পরিচিতরা যারা শামস নুরকে জানেন, আবার তার প্রকৃত অবস্থানও জানেন) বোকার মতো তারা ব্লগটি ব্যবহার করা শুরু করে দিল যখন তিনি যাত্রা পথে। আমরা এ খবরটি অবগত হলাম ব্লগে দেয়া বিভিন্নজনের মন্তব্য থেকে।
শেষমেষ কী দাঁড়াল? মিথ্যাকে সত্য বানাতে আবারও একটি স্থূল-মানসিকতার পরিচয় দেয়া হলো শামস নুরের ব্লগে। সেটা কি? আমরা দেখলাম শামস নুরের নামে একটি কৈফিয়তনামা প্রকাশ করা হলো। ভদ্রলোক এ মুহূর্তে অসুস্থ। তিনি বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন যে তার ব্লগ নিয়ে বিলেতে কিছু মানুষ ঈর্ষাতুর হয়েছেন তার বন্ধুপ্রতীম এক কবির কবিতা প্রচার করায়। তিনি লিখেছেন -
ভুল বোঝাবুঝরি অবসান হোক
আমার পাসওর্য়াড নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেনে, পোস্ট দয়িছেন বিষিয়টি লজ্জাজনক।
আমি যখন হিথরোর উদ্দশ্যে বাসে উঠি তার র্পূবমুর্হূতও ব্লগে ছিলাম। হয়তো লগআউট করা হয়ন। আমার গ্রামরে কেউ কেউ আমাকে ফোন করে বলছেনে, আপনি বাসে বসা তাহলে কী করে আপনি ব্লগে আছনে? লগ আউট না হওয়ার জন্যই হয়তো এরকম হয়ছে। খেয়াল করে দেখবেন লন্ডনে থাকাকালীন মাত্র দুই তিনদিনই আমি ব্লগিং করেছি, হাতরে কাছে মাশুক আনসিরে কবিতা ছিল ঐগুলই দিয়িছে। এতে করে সবাই ঈর্ষান্বিত হওয়ার কারণ বুঝলাম না।
যাই হোক শারীরকিভাবে এখনও সুস্থ হইনি
সবাই দোয়া করবনে।
দেশে ব্যবসায়ীক কাজে খুবই ব্যস্ত থাকি। সময়ে সুযোগে মাঝে মধ্যে হয়তোবা আপনাদরে সঙ্গে আবার কথা হবে।
সবাই ভাল থাকুন
এই হলো শামস নুরের নামে প্রচারিত কৈফিয়তের সার-কথা। কেউ কারোর ব্লগ ব্যবহার করলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই, যদি সেটা অনুমতিক্রমে হয়ে থাকে।
এ নিয়ে কেউ সন্দেহ প্রকাশ করলে, স্বীকারোক্তি না দিয়ে এতো ধানাইপাই কেন? এর জবাব কিন্তু আমরা জানি এবং কে বা কারা এখন এই ব্লগ ব্যবহার করছেন সেটাও মোটামুটি সবার জানা হয়ে গেছে। মিনমিন করে শামস নুরের নামে বিজ্ঞাপনটি প্রচার করার কারণটিও আমরা বুঝে ফেলেছি বিজ্ঞাপিত হবার খায়েশধারীর দূর্বল উচ্চারণে।
আমি তো ব্লগ অন রেখে কতদিন বেরিয়ে গেছি। মনেও থাকে না আমার ব্লগ অন আছে নাকি বন্ধ আছে। কই, কেউ তো আমার ব্লগ ব্যবহার করতে পারেনি? এ ধরণের জোড়াতালির জবাব প্রচাকারীদের সামনে অনেক উদাহরণ হিসেবে তুলে দেয়া যাবে।
কিন্তু সেসবের কোনো প্রয়োজন নেই। জানা তো হয়েই গেছে যারা নিজে নিজে বিজ্ঞাপিত হচ্ছেন, তারাই ব্লগটির অপব্যবহার করছেন। এমন অশ্লীল প্রচারণা কোনো কবির বা কবিদের হতে পারে আমার জানা নেই। কবিতা তো অন্তরের বিষয়, এটা গ্রামের চেয়ারম্যান-মেম্বার হতে চাতুরতা প্রকাশের স্থান নয়? কবিতার দোহাই - এমন অশ্লীল হবেন না।
সংযুক্তি : কেউ একজন শামস নুরকে আত্মীয় বলায় অপরাধীদের বিপদ ঘনিয়ে আসে।
তারা বসে বসে গল্প বানাতে থাকেন। সেসব গল্পও আস্তে আস্তে প্রচার হবে। শামস নুর কী এসবের নিবিষ্ট পাঠক?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।