আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

*||*_* এক অন্যরকম অভিজ্ঞতার প্রত্যাশায়... অনন্ত *_*||*

এই ব্লগের সব লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ঘটনাটা বেশ কিছু বছর আগের ... তখন শখের বসেই অনেক কিছু করে বসতাম ... মন চাইলো তো ভর দুপুরে কারো বাসায় হানা দিয়ে বলে বসলাম ক্ষিদে পেয়েছে রান্না করো, খেয়ে এর পরে যাব তোমার বাসা থেকে ... আবার কখনো মন চাইলো তো খাবার, পানি ছাড়াই শুধু চুইংগাম চিবিয়ে চললাম ... ৫ টা চুইংগাম দিয়ে ৩ দিন কাটিয়ে দিলাম নির্বিঘ্নে ... মন চাইলো তো গরমের দিনে স্প্রাইটের বোতল খুলে না খেয়ে মুখে ছিটিয়ে দিলাম ... কখনো পুরা এক প্যাক বেনসন একটা কাঠি খরচ করে সবকটা পুড়িয়ে ফেললাম ... কখনো শাহবাগের মোড়ে হলুদ রঙ্গা রোড ডিভাইডারের উপরে বসে মনের সুখে ধোয়া উৎসব কর‌্তাম ... তবে এর মাঝে এমন একটি শখ পূরন করেছি, যা আমার নিজের কাছেও একটু স্পেশাল টাইপ বলে মনে হয় ... সেবার নানাবাড়ি বেড়াতে গিয়েছি আমরা সবাই ... সবাই বলতে নানা বাড়ীর যতগুলো কাজিন আছে সবকজন সেবার একসাথে হয়েছিলাম অনেক বছর পরে ... প্রতিদিন ভোর বেলা বের হয়ে এক একজনের বাড়িতে গিয়ে নাশ্তা করা, খেজুরের রস খাওয়া... এর পরে দুপুরে পুকুরে ঝাপিয়ে পড়ে ঘন্টা ৪ - ৫ সবাই মিলে সাতার দিয়ে বরফ পানি খেলা ... এর মাঝে পুকুর পাড়ের ডাব গাছে কয়েকজন উঠে পড়বে, সেখান থেকে ডাব পেড়ে পানিতে ফেলবে ... সবাই মিলে সেগুলো খেলার ফাকে ফাকে পুকুর পাড়ে বসে খাবে ... বিকালে আবার স্কুলের মাঠে গিয়ে ফুটবল আর সন্ধ্যার পরে ব্যাডমিন্টন খেলা ... এমন করেই কেটে যাচ্ছিলো সেবারের নানাবাড়ী ভ্রমন ... একদিন আমরা দুই কাজিন মসজিদে গিয়েছি নামাজ পড়তে ... ফেরার পথে মজজিদের পিছনে রাখা একটা বিশেষ জিনিসের উপর চোখ পড়লো... সেটি আর কিছু না... একটা কফিন ... বেশ শক্ত কাঠের বানানো কফিনটা দেখেই বেশ উৎসাহ জেগেছিল মনে জিনিসটা নিয়ে একটু এক্সপেরিমেন্ট করতে ...শত বুঝানোর পরেও কাজিনটার জন্য সে সময় কিছুই করা গেল না ... শুধু তাই না, আমার এই এক্সপেরিমেন্টের শখের কথা সে মামাদের কে বলে দিলে পরে কেউ আর আমাকে একলা মসজিদে ছেড়ে যেত না .... একদিন মাগরিবের নামাজ পড়তে এসে সবার চোখের আড়াল হয়ে থাকলাম ... মসজিদের লোকজন খালি হয়ে গেলে পরেও আমি বসে আছি দেখে সেখানের খাদেম আমাকে জিজ্ঞেস করলো - অন্তু বাবা বাড়ী যাবা না ? আমি বললাম -- একটু পরে যাব, আপনি চলে যান ... তাকে চলে যেতে বলেছি, এর পরে উনি আর থাকতে পারবেন না বুঝেই বললেন -- হ্যাজাক লাইট টা থাকলো ... আমি পরে এসে নিয়ে যাব, আচ্ছা ? আমি বললাম -- আমার কাছে বড় টর্চ লাইট আছে, সমস্যা নেই, আপনি নিয়ে যান একটু ইতস্তত করতে করতে উনি চলে গেলেন হ্যাজাক লাইট নিয়ে ... পিছনে বসে থাকলাম আমি ... চার ব্যাটারীর লাইট হাতে ... খাদেম চাচু চলে যাওয়ার পরে আস্তে আস্তে উঠলাম ... ধীরে ধীরে চললাম কফিনের দিকে ... ওটার ঢাকনীটা পাশেই রাখা আছে ... সেটায় একটু হাত বুলাতেই অন্যরকম ভাল লাগছিল ... কফিনের ভিতরটার সব জায়গাতে আস্তে আস্তে হাত বুলাতে বুলাতে চিন্তা করছিলাম, এ জায়গাতে রেখে গ্রামের কত মানুষকে চার জনে বয়ে নিয়ে গিয়েছে ... লোকটাকে সমাধীস্হ করেছে, কিন্তু এটা সেই আগের মতই আছে ... এমন সময় হঠাৎ মনে হলো যে মানুষগুলোকে এতে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো তারা যদি জীবিত থাকতো তবে তাদের কেমন লাগতো এর উপরে শুয়ে থাকতে ? ... অনেক ভেবেও সেই অনুভুতির সন্ধান না পেয়ে নেশা চড়ে বসলো কফিনে শোয়ার ... আগে পিছে না ভেবেই ... ধীরে ধীরে নিজেকে শুইয়ে দিলাম কফিনের ভিতরে ... সে এক অদ্ভুত সুন্দর অন্যরকম অনুভূতি ... এর পরে, হাতের চার ব্যাটারীর লাইট টাকে নিভিয়ে দিয়ে উপভোগ করতে লাগলাম এক জীবন্ত মানুষের কফিন যাত্রা ....
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।