আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মন খারাপ করা সকাল অথবা দ্রোহের সকাল

৫ ফেব্রুয়ারি প্রজন্ম চত্তরে আন্দোলন শুরুর দিন থেকেই প্রতিদিন সেখানে গিয়েছি। অফিসের ফাঁকে কাজের ফাঁকে দিনে দু'বার তিনবার করেও গিয়েছি। প্রজন্ম চত্তর থেকে ফিরে যখন রাতে ঘুমাতে যেতাম, প্রতিদিন কানে বাজতো শাহবাগে শুনে আসা স্লোগান গুলো। আমি ভাবতাম একনাগাড়ে স্লোগান শোনার জন্য বুঝি এখনো কানে বাজছে স্লোগান। কিন্তু গতরাতে হঠাৎই ঘুম ভেঙে যায় ৪ টার দিকে।

তখনো কান পেতে শুনি স্লোগান শোনা যাচ্ছে। শাহবাগের কাছেই থাকি স্লোগান শোনা যেতেই পারে... কিন্তু রাত ৩ টার সময়???!!!! আমি স্রেফ হতভম্ব হয়ে যাই....। কী এক অজানা ভালোলাগায় মনটা ভরে ওঠে। শ্রদ্ধায় মাথা আরো একবার নুয়ে আসে সেই সব অসীম প্রাণশক্তির কাছে। আজ পয়লা ফাল্গুন, কিন্তু অফিস থাকায় ভেবেছিলাম সকালে শাহবাগ এবং চারুকলায় একটা ঢুঁ দিয়ে তারপর অফিসে যাব।

শাহবাগের কাছাকাছি আসতেই শুনতে পাচ্ছিলাম সেই চির চেনা স্লোগানগুলো। কিন্তু আজ প্রজন্ম চত্তরে পা রেখে দেখলাম অন্য এক দৃশ্য। একদিকে চলছে তীব্র স্লোগান অন্যদিকে শাহবাগের আইল্যান্ডের উপর পাতলা ত্রিপলের নিচে ঘুমিয়ে আছে বাংলার নতুন সেনাদের কয়েকজন। মহূর্তে মনটা খারাপ হয়ে গেল.... আন্দোলনকে জাগিয়ে রাখতে আমাদের এইসব ভাইবোন পালা করে জেগে থাকছে.... যেন এক মুহূর্তের জন্যেও আন্দোলন ঘুমিয়ে না পড়ে। আর আমি কী করছি? প্রতিদিন কিছু সময় এসে স্লোগানে গলা মিলিয়ে কিছু সময় কাটিয়ে ভাবছি কতবড় বড় বিপ্লবী হয়ে গেলাম।

যারা বলছে আন্দোলন বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, যারা বলছে এই আন্দোলনের কোন ভবিষ্যত নাই, যারা বলছে শাহবাগে নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে তারা জবাব দেবেন কি কী আশায় এই ছেলে মেয়েগুলো পালা করে ২৪ ঘন্টা আন্দোলনকে জাগিয়ে রাখছে? কী পাবার জন্য তারা এই আন্দোলনকে বাঁচিয়ে রাখছে? একেবল তাদের মনের তাগিদ প্রাণের তাগিদ আর কিছুই না। আফসোস, তাদের সঙ্গে এই আন্দোলনকে জাগিয়ে রাখতে পুরো একটা রাত আমি থাকতে পারছিনা। কিন্তু করুণা তাদের জন্য যারা এই আন্দোলনে অংশগ্রহনতো করছেই না বরং বিভিন্ন ভাবে মানুষকে প্রভাবিত করছে। এদের জায়গা বোধকরি ইতিহাসের ভাগাড়েও হবেনা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।