আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গত কয়েকদিনের দেখা মুভি: আউলা ঝাউলা চিন্তাভাবনা

http://www.choturmatrik.com/blogger/আরণ্যক

Hotel Rwanda(২০০৪): ~~~~~~~~~~~~ ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডার গণহত্যার উপর মুভি। রুয়ান্ডা ছিলো বেলজিয়ামের উপনিবেশ। বেলজিয়ানরা প্রথমে হুটু আর টুটসিদের আলাদা করে । তুলনা মুলক লম্বা আর "লাইট স্কিন" হওয়া টুটসিদের সহজে আলাদা করা যায় । বেলজিয়ানরা -- মতান্তরে চার্চের ধর্মপ্রচারকরা টুটসিদের সুপিরিয়র জাত নির্ধারন করে।

বেলজিয়ানরা যাওয়ার সময় হুটুদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে যায় । জাতিগত বিদ্বেষ থেকে হুটুরা টুটসিদের কচুকাটা করার পরিকল্পনা করে । ১৯৯৪ এপ্রিলে হুটু প্রেসিডেন্টের প্লেন ক্ষেপনাস্ত্র দিয়া ধ্বংস করে তাকে হত্যা করা হয় । এরপরই হুটুরা টুটসিদের উপর মাচেট হাতে জাপিয়ে পড়ে। এপ্রিল থেকে জুলাই এর মাঝে ১০ লক্ষ লোক খুন হয় ।

বেশির ভাগই মাচেট দিয়ে কুপিয়ে । সেই সময় রুয়ান্ডাতে Paul Rusesabagina নামে হোটেল পরিচালক ১২০০ জন মানুষের জীবন রক্ষা করে । এই সত্য ঘটনা উপরের নির্মিত মুভিটা । > আমার প্রথম চিন্তা হলো ডিভাইড এন্ড রুলের শিকার শুধু আমরাই না । উপমহাদেশে যেটা ধর্ম।

আফ্রিকায় সেটা চামড়া। মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করলে এর জের কোথায় গিয়ে ঠেকবে এটা কি বেলজিয়ানরা চিন্তা করেছিলো ? আমরা সব সময় ভাবি আমরা সবচে বেশি কষ্ট পেয়েছি। সত্য কথা হলো পৃথিবী সব জাতির দু:খ কষ্টের ইতিহাস আছে । ২ মাসের মাথায় ১০ লক্ষ লোক কুপিয়ে হত্যার ঘটনা অপার্থিব অমানুষিকতা লাগে । তাছাড়া কোন বাহিনী না ।

প্রতিবেশীরা প্রতিবেশী মাচেট হাতে ঝাপিয়ে পরেছিলো । সাদা চামড়ারা যে আমাদের তৃতীয় বিশ্বের মানুষদের মানুষই মনে করে না -- এটা একটা প্রমান । সাদা চামড়াও না -- চীন -জাপান -রাশিয়া - সৌদি -ভারত -- কেউ এই অমানুষিক হত্যার বন্ধে কোন ব্যবস্থা নিলো না কেন আশ্চর্যের ব্যাপার । ইদানিং আবার দেখলাম রুয়ান্ডাকে সি এন এন এ খুব হাইলাইট করা হচ্ছে । রুয়ান্ডা নাকি ইমারজিং নেশন ।

ফরচুন ৫০০ কম্পানীর সব বসেরা রুয়ান্ডার পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে । ভিতরের ঘটনা কি জানি না তবে অবস্থা সন্দেহজনক । হুটু টুটসিরা আবার নিজেদের পাশাপাশি থাকছে । পশ্চিমের মিডিয়া দেশের প্রেসিডেন্টদের খুব ভালো পায় -- আজীব কারনে । এতসব হত্যাকারীদের বেশীর ভাগকেই মাফ করে দেয়া হয়েছে।

শুধু বিচারের নামে হাস্যকর ভাবে জনসমক্ষে সে কাকে কাকে হত্যা করেছে এটা বলেতে হয়েছে । ব্যাস মাফ (!)। তবে আবার কখন পুরোনো ক্ষতে মুখ খুলে একজন আরেকজনের উপর ঝাপিয়ে পড়ে কোন ঠিক ঠিকনা নাই । তখন ফরচুন৫০০ বসরা রুয়ান্ডাকে চিনবে কিনা সেটাই প্রশ্ন। Click This Link Who's afraid of Virginia Wolf (১৯৬৬): ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~ এলিজাবেথ টেলর এর অস্কার জেতা মুভি ।

রিয়েল লাইফ কাপল লিজ টেজর আর রিচার্ড বার্টন বয়সী দম্পতির ভুমিকায় । সন্ধ্যায় এক তরুন কাপল কে দাওয়াত করে তারা । রাত যত বাড়তে থাকে তিক্ততা আর জটিলতা বাড়তে থাকে । > শেষের আধ ঘন্টা দেখতেই পারি নাই । এত তিক্ততা ছবিটার মধ্যে ।

ওরা নিজের মধ্যে রক্ত ঝরানো প্রতিজ্ঞা নিয়ে এক ছাদের নিচে থাকে । মনে হচ্ছিল দুইজন মাছ মারার কাটা যুক্ত বর্শা দিয়ে খোচাতে থাকলেও এত আহত করতে পারতো না একে অপরকে। এই ধরনের আরেকটা খুব ভালো মুভি দেখেছিলাম গতবছরের 'রিভোলিশনারি রোড' । অবিবাহিতরা দেখলে বিয়ে উপর ভক্তি শ্রদ্ধা কমে যেতে পারে। Touch of Evil (১৯৫৮) : ~~~~~~~~~~~ ওরসন ওয়েলস ডিরেক্টেড মুভি।

মেক্সিকোর সীমান্তবর্তী শহরের দূনীর্তি গ্রস্থ পুলিশ আর অপরাধীদের ক্রাইম ড্রামা । বোমা পেতে শহরের এক ধনী ব্যক্তি আর মহিলা হত্যা করা হয় । মেক্সিকো থেকে একজন ডিটেকটিভ আসে তদন্ত করতে সাথে আর সদ্যবিবাহিতা স্ত্রী। এই ডিকেটটিভের সাথে শহরের গোয়েন্দা সার্জেন্টের ব্যক্তিত্বের সংঘাত । আর শেষে মুখোশ উম্মচোন নিয়ে ছবি ।

> ১৯৫৮ সালের ছবি এটা । একটা কথা আছে না ট্রু ক্লাসিকস আর টাইমলেস । এক সেকেন্ডের জন্যও বোর হইনি এই মুভিটা দেখতে গিয়ে । মুভি মেকিং ওস্তাদ লোকের হাতে কত চমৎকার হয় সেটাও একটা এক্সামপল । যারা জানেন না - ওরসন ওয়েলসে 'সিটিজেন কেইন (১৯৪১)' গত শতাব্দী টপ ৫ টা আমেরিকান ছবির মধ্যে একটা ।

আমার মজা লেগেছে যখন সার্জেন্ট চাকরি ছেড়ে দিতে চায় । যেই ধরনের ইমোশনাল ঝাড়ি এখন আমাদের দেশে চলে । আসলেই আমরা ৫০ বছর পিছিয়ে আছি । Public Enemies (2009): ~~~~~~~~~~~~~~~~~ গ্রেট ডিপ্রেশনের পরের বিখ্যাত ব্যাংক ডাকাত 'জন ডিলিন্জার' জীবনের উপর ভিত্তি করে এই ছবিটা । ডিলিন্জার কে ধরার জন্য একজন নামকরা ডিটেকটিভ নিয়োগ দেয়া হয় ।

এর মধ্যেই প্রেম , ব্যাংক ডাকাতি , জেল থেক পলায়ন । > হলে গিয়ে দেখলাম ছবিটা । মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিল পরিচালককে ধরে জুতার বাড়ি দেই । এতই ঝুলে যাচ্ছিলো একেক সময় । বাসায় ফিরে দেখি মাইকেল মানের ছবি ।

'কোলেটরাল', 'আলী', 'ইনসাইডার', 'হিট', 'লাষ্ট অফ দ্য মোফিকানস' এর ডিরেক্টর । খারাপের মধ্যে ভালো দুই পারফেকশনিষ্টের অভিনয় । ডেপ - বেল দুজনে তাদের জাত অনুযায়ী পারফর্ম করেছে । ডিলিন্জার প্রেমিকা হিসাবে Marion Cotillard অভিনয় ভালো লেগেছে । চিত্রনাট্য দূর্বল হলে কি আর করা ।

মাইকেল মান দেখি আবার টোটালি ফালতু ছবি 'হ্যানককের' প্রোডিউসার । এইবার থেকে ব্যাটার মুভি সাবধানে দেখতে হবে। Terminator - 4(২০০৯): ~~~~~~~~~~~ টার্মিনেটর সিরিজের প্রথম ছবি শোয়ার্জনেগার ছাড়া (মূল ভূমিকায়)। জন কনর এই পর্বে তার বাবার খোজে বের হয় । মানুষের হার্ট আর ব্রেন সহ -- কৃত্রিম দেহধারী একজনকে ঘুম পারিয়ে রাখা হয় ।

সে জন কনরের আস্থা অর্জন করে । তাকে ব্যবহার করে আর্টিফিনিয়াল ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্ক প্ল্যান করে জন কনরকে(ক্রিষ্টিয়ান বেল) খুজে হত্যা করার জন্য । "Sam" Worthington এটা ভন্ডুল করে দেয় তার মানবিক সত্ত্বা খুজে পেয়ে । > এটাও থিয়েটারে দেখা । হলিউডে দিন দিন বাজেট সংকট বাড়ছে ।

নাম না জানা অভিনেতা ধরে কাজ চালিয়ে দেয়া হচ্ছে । মূল ভুমিকায় মেগা ষ্টার রেখে -- বাকি সব ফাউল । এরা অভিনয়ও জানে না ঠিক মতো । অবশ্য টার্মিনেটর দেখতে গিয়ে অভিনয় খুজলে আমাকেই পাবলিক আতেল ঠাওরাবে !! তবে অভিনয় এতই বাজে যে এর মধ্যেও চোখে পড়ে । "Sam" Worthington কে ভালো লেগেছে ।

ক্রিষ্টিয়ান বেল তো ক্রিষ্টিয়ান বেল ই । আরেকটা মজার ব্যাপার হলো এই ছবির কোন পরিচালক নেই !! হলে পরিচালকের নাম দেখলাম Warner Bros । সাইটে অবশ্য মানুষের নাম দেখাচ্ছে । ভিতরে কাহিনী জানি না । টাইম পাস মুভি ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~ Click This Link সিনেমা বিষয়ক আগের পোষ্ট ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।