wanna know and show everything I can......
অন্ধ শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৮ বছরের ছাত্র মোহাম্মদ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি তেহরানে অবস্থিত। তিন মাসের গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে সবাই যার যার পিতামাতার সাথে বাড়িতে চলে যায়। কিন্তু মোহাম্মদের এখনও যাওয়া হয়নি। সে অনেক্ষন ধরে তার বাবার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।
কিন্তু দেখা মিলেনা তার বাবার। সে পুরাপুরিই আশা ছেড়ে দেয় তার বাবার আসার উপর। ধরেই নিয়েছিলো জীবনে আর আসবেনা তার বাবা। খুব খারাপ মনে সে বসে আছে বেন্চের এক কোনায়। এমন সময় সে কিছু দূর থেকে বাচ্চা পাখির শব্দ শুনে।
সেই শব্দে সাঁড়া দিয়ে সে ঝড়া পাতার মরমর শব্দের মাঝ থাকে সেই অসহায় বাচ্চা পাখিটিকে তার শব্দ শুনার সেন্সকে কাজে লাগিয়ে গাছের মাথায় থাকা নীড়ে পিরিয়ে দিয়ে আসে।
কিছুক্ষন পর মোহাম্মদের পিতা হাসেম চলে আসে। হাসেম একজন বিপত্নীক কয়লার শ্রমিক। সে মোহাম্মদকে স্কুলে রেখে যাওয়ার অভিপ্রায় জানিয়েছিলো শিক্ষকদের কাছে। কারন বাড়িতে নিয়ে গেলে তাকে দেখাশুনা করার মতো লোক থাকবেনা।
কিন্তু শিক্ষকরা তাকে রাখতে সম্মত হয়নি। কারন বন্ধের সময় তাকে দেখাশুনা করার মতো কোন লোক থাকবেনা। তাই সে ছেলেকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওয়ানা দেয়।
দীর্ঘ বাস ভ্রমনের পর তারা হাটতে লাগলো গ্রামের মেটো পথ বেয়ে। পথটি ছিলো খুবই রুক্ষ, কিন্তু মোহাম্মদের সেন্স সেই রুক্ষতাকে জয় করে প্রকৃতিকে আরো বেশি সজীব ও মনোরম করে তুললো।
তার মনে হচ্ছিলো সে সৃ্গের পথ বেয়ে হাটছিলো। হারিয়ে যায় তার মন সেই সুন্দর প্রকৃতির মাঝে। তার এই অনুভূতিও তার রুক্ষ বাবাকে পারেনি আলোড়িত করতে। তার বাবা মোহাম্মদকে শুধু বোঝাই মনে করত।
বাড়িতে পৌঁছার পর তার দুই আদরের বোন ও অতিপ্রিয় দাদীর কাছ থেকে খুব সৌহার্দ্যপূর্ণ অভ্যর্থনা পায়।
এই সৌহার্দ্যপূর্ণ অভ্যর্থনা পেয়ে মোহাম্মদ খুবই খুশি। প্রকৃতির সাথে মিলেমিশে থেকে তাদের জীবন চলছিলো খুব আনন্দে। খামার ক্ষেত থকে বনফুল সংগ্রহ করে রং আহরন আর সেই রংয়ের পানিতে সুতায় রং দেওয়া, মুরগীর ডিম সংগ্রহ করে সেই ডিম বিক্রি করে জীবন খুব ভালোই চলছিলো তাডের। মোহাম্মদ হারিয়ে যেতো তার আপন ভুবন সাথে মাঝে মাঝে দাদী ও বোনদের নিয়ে। হারিয়ে যেতো পাখির কলকাকলিতে।
এভাবে মোহাম্মদের সাথে তার দাদীর আত্নার সম্পর্ক দৃর হতে থাকে। মোহাম্মদের বছিলো অনুভূতিই শ্রেয় দৃষ্টির চেয়ে। তইতো সে শুধু স্পর্শে বুঝতে পারে তার দাদীর হাতের কোমলতা আর সৌন্দর্যতা।
একদিন মোহাম্মদ তার বোনদের সাথে গ্রমের স্কুলে যাওয়ার অভিপ্রায় জানাই দাদীর কাছে। কিন্তু সে মুহূর্তে অনুমতি মিলেনি।
যদিও দাদী পরে নিজেই তাকে স্কুলে দিয়ে আছে। সেখানে তার প্রতিভা দেখে স্কুলের শিক্ষক, ছাত্র ছাত্রী সবাই হতবাক। কিন্তু তার রুক্ষ পিতা কিছুতে খুষহি হতে পারেনা। সে মোহাম্মদকে মনে করতো গ্রামের এক সুন্ডরী যুবতীর সাথে তার বিয়ের বাঁধার কারন হিসেবে। এই কারনে সে মোহাম্মদকে পরিবার থকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টায় থাকতো।
কিন্তু মোহাম্মদের দাদী কখনও সমর্থন দেননি হাসেমকে।
তা সত্ত্বেও একদিন হাসেম তার অন্ধছেলেকে সাগর দেখানোর লোভ দেখিয়ে রেখে আসে আরেক অন্ধ কার্পেন্টারের কাছে শিক্ষানবীশ হিসেবে দূরের গ্রামে। দাদী এই ব্যাপারতি মানতে না পেরে নিজেই বাড়ি থকে নেমে চলে যাই পুত্রের অনেক আকুতিকে ছেড়ে। অনেক খুজাখুজির পর হাসেম মোহাম্মদের দাদীকে ফিরিয়ে নিয়ে আনে বাড়িতে।
আর অন্যদিকে মোহাম্মদ নিজেকে খুব অসহায় মনে করতো।
তার একটায় আক্ষেপ ছিলো। তার মতে তাকে কেউ আদর করেনা শুধুমাত্র অন্ধ হওয়ার কারনে। সর্বদা দূরে সরিয়ে রাখে। তার মাষ্টার তাকে কার্পেন্টারের কাজ বাদে আরো ভিন্ন বিষয়েও শিক্ষা দেয়। তার কাছ থেক সে জানতে পারে "খোদা অদৃশ্য, সে সবজায়গায় বিদ্যমান, তাকে অনুভব করা যায়, আবার হাতের স্পর্শে দেখতেও পাওয়া যায়"।
একদিন অসুস্থ দাদী নাতনিকে না দেখে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যায় দূর আকাশে। ভেঙ্গে যায় তার পাকাপোক্ত হওয়া বিভাহের কথাবার্তাও। হাসেম শোকে মুহ্যমান হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। শোকে মুহ্যমান হাসেম ছেলেকে ফিরিয়ে নিয়ে আনতে যায়। ফিরার পথিমধ্যে প্রচুর বৃষ্টি হয়।
তারা হাটতে থাকে বৃষ্টির মধ্য দিয়ে। মোহাম্মদের মাঝে নেই আগের মতো উছ্ছ্বাস। এই ফেরাতে তার কোন বিন্দুমাত্রও অনুভুতি নেই। ছেলেকে ঘোড়ার উপরে তুলে পিতা হাসেম হাটতে থাকে সামনে। পথিমধ্যে তারা যখন একটা গাছের ব্রীজ পার হচ্ছিল ঠিক তখনি ব্রীজটি ভেঙ্গে নিচে পড়ে গেলো।
পিতা কাসেম বুঝে উঠার আগেই ছেলে মোহাম্মদ ভেসে চলে গেলো বানের পানিতে। আর পিতা কাসেম ও ছেলের পিছু পিছু বানের পানিতে ভেসে ছেলের সন্ধানে গেলো। কিন্তু ছেলে মোহাম্মদের সন্ধান সে কোনমতে পাচ্ছিলোনা। এই দূর্যোগ মুহুর্তে সে তার পিতৃত্ত্ব অনুভব করতে লাগলো। অবশেষে সন্ধান মিলে পুত্র মোহাম্মদের।
কিন্তু তার আগেই নিভে গেলো তার পিতৃত্ব.............
মাজিদ মাজিদির এই "The Color of Paradise" ছবিটি পরিচয় করিয়ে দেয় শিশুদের ইনোসেন্স আর ভাগ্য ও মানবতার পরিহাসের সাথে। ছবিটি আরো সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে সুন্দর অভিনয় আর শৈল্পিকতার কারনে.........
হয়তো এই লেখায় ছবিটির আসল জিনিসগুলো তুলতে পারিনি যা ছবিটি দেখে অনুভব করেছি। হয়তো অনেকেই ছবিটি দেখেছেন। যারা এখনো দেখেননি দেখার অনুরোধ করছি.........
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।