আমার ভাগ্নে- বাপ্পী।
এইচ.এস.সি-তে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
হাজার হাজার এ+ যেখানে সেখানে সেও এ+ পেতেই পারে, এ আর এমন কি!!
কিন্তু নিজের বাবাকে নিয়ে উৎকন্ঠায় থাকার পরও ওর এই ফল আমাদের যারপর নাই আমোদিত করেছে।
ওর বাবা বি.ডি.আর-এর জেসিও হওয়ার সুবাদে ওদের বাসা ছিল পিলখানার ভেতরে, কোয়ার্টারে। ২৫ ফেব্রুয়ারী ওরা ভেতরেই ছিল।
রাইফেলস্ স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র ছিল সে। এপ্রিল থেকে ওর পরীক্ষা শুরু হয়। এস. এস. সি-তে ৪.৯৪ পাওয়া ছেলেটির যখন জিপিএ-৫ এর জন্য শেষ মুহুর্তে সব ঝালিয়ে নেয়ার কথা তখন সে মা আর চার বছরের ছোট ভাইকে নিয়ে এক অনিশ্চয়তার দিকে পা বাড়ায়। ২৬ তারিখ সকাল বেলা ওরা এক কাপড়ে বেরিয়ে আসে,বই খাতা সব ভেতরে রেখে। তখন কি আর সে জানত কি নারকীয়তা ঘটে গেছে সেখানে! যার জন্য আর কোন দিনই ভেতরে ঢুকতে পারবেনা সে!!
তারিখটা মনে নেই,মার্চের শেষ সপ্তাহে সে শুধু বই খাতা আনার অনুমতি পায়।
আপাকে বাড়ী পাঠিয়ে দিয়ে ওকে আমার মেসে নিয়ে রাখি। কোনদিন বাড়ীর বাইরে নাথাকা ছেলেটিকে একটা অপরিচিত পরিবেশে ছেড়ে দেই এত গুরুত্বপূর্ণ একটা পরীক্ষার এক মাস আগে। পিলখানার ভেতরে তার বাবা। প্রতিদিন যেখান থেকে আসে নানা ধরণের রক্তহিম করা খবর।
সময় বয়ে চলে তার আপন গতিতে।
আজ ফল বেরুল। ও জিপিএ-৫ পেয়েছে। ওর মুক্তিযোদ্ধা বাবার একটা স্বপ্ন পূর্ণ হল। কিন্তু এখনও তাকে ফলটা জানাতে পারিনি। নিশ্চয়ই সে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
সবাই ওর জন্য দোয়া করবেন।
সবার জন্য মিষ্টি.............
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।