আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

। ভাস্কর্য ‘কিংবদন্তী’।

``চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই। তা প্রকাশ করতে যদি লজ্জাবোধ হয়, তবে সে ধরনের চিন্তা না করাই বোধ হয় ভাল। ' -- প্রাচীন গ্রীক কবি ইউরিপিডিস (৪৮০-৪০৬ খ্রীঃ পূঃ)
“ আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি। তাঁর করতলে পলিমাটির সৌরভ ছিল তাঁর পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিল। ” কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ’র ‘আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি’ শিরোনামের বিখ্যাত এ অমর কবিতাটা পড়েননি বা এর কিছু পঙক্তি শুনেননি এমন বয়স্ক শিক্ষিত বাঙালি খুব বেশি নেই।

বাঙালির ইতিহাস এই কিংবদন্তীরই ইতিহাস। এভাবেই আরেক কিংবদন্তী হয়ে ওঠা আমাদের প্রিয় মুক্তিযোদ্ধাদেরকে যেন আগামী প্রজন্ম কখনোই ভুলে না যায়, সেই অদম্য ইচ্ছের স্বপ্নই ঝরে পড়ে ভাস্কর হামিদুজ্জামান খানের গড়া ভাস্কর্য ‘কিংবদন্তী’র ঝকঝকে ধাতব শরীরে। মিরপুর-১ এর সনি সিনেমা হলের সামনের গোল চক্করের প্রশস্ত সড়ক-দ্বীপে বসানো এই ভাস্কর্যটির শরীরে তখনো নীল পর্দায় মোড়ানো বিশাল অবগুণ্ঠন। ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান ও স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভারের পদস্থ প্রতিনিধি সহ অন্যান্যদের হাতের টান পড়তেই খুলে গেলো ইচ্ছের গ্রন্থি। আজ ২৩-০৭-২০০৯ তারিখের অপরাহ্ণ ছ’টায় মেঘলা ছায়ার ফাঁকে বিকেলের সোনামাখা আলোয় ঝলমল করে উন্মোচিত হলো শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্য ‘কিংবদন্তী’।

অস্ত্র হাতে অদম্য যোদ্ধার দেহাকৃতির এই ‘কিংবদন্তী’র কাছে গেলে আমাদের সেইসব কিংবদন্তী পুর্বপুরুষের কথা মনে না হয়েই যায় না ! কেননা তাঁরা চাইলে বুঝি অবাধ্য থাবায় ওই আকাশটাও নিয়ে নিতেন হাতের মুঠোয়। আর তাঁদেরই উত্তরাধিকার বয়ে আমরা কী করে গুটিয়ে থাকি ! আমাদের বুকের গভীরে যে নদীটা কুলকুল করে বয়ে যায়, কান পাতলে এখনো কি শুনতে পাই না সেই অজেয় বীরত্বের গাঁথা ! হার না মানার চিরায়ত সুর আর মাটির ক্রন্দন ! বুক ভরা নিঃশ্বাসে ঠিকই এখনো পাওয়া যায় করতলে ধরে রাখা পলিমাটির সৌরভ। আসুন, আমরা সেই কিংবদন্তীর কথা বলি, আমাদের পূর্বপুরুষের কথা বলি। কারণ তাঁদের পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিলো। আমাদের দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে দিয়ে গেলেও তাঁরা যে ক্রিতদাস ছিলেন ! [ ছবি: রণদীপম বসু ]
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।