আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আট বছর বয়সেই চাঁদাবাজী !!!!!!!! এই ধরনের কাজ ওদের কে শেখায়???

কত আজানারে জানাইলে তুমি, কত ঘরে দিলে ঠাঁই দূরকে করিলে নিকট,বন্ধু, পরকে করিলে ভাই।

আমার মেয়ে ক্লাশ ওয়ানে পড়ে। কলোনীতে তার সাথে পড়ে আরও দুই জন অফিসারের এক মেয়ে ও এক ছেলে। বাচ্চারা এক সাথে খেলে । গত ২০/২৫ দিন থেকে আর একটি বাচ্চা এসে ওদের সাথে খেলে।

এই বাচ্চাটির নাম নিলয় এবং সে আমার মেয়ের সহপাঠী। বাচ্চাটি কলনীর নয় বাইরের। তার বাবা স্কুলের শিক্ষক ও মা সূর্যের হাসি ক্লিনিকের স্টাফ। আমার দুই বাচ্চাসহ মোট পাঁচ জন বাচ্চা একসাথে খেলে। ওরা সবাই ক্লাশ ওয়ানে পড়ে একই স্কুলে শুধু আমার ছেলেটা ছাড়া।

কারন সে ছোট। তারা হয় আমার বাসার সামনের মাঠে খেলে বা আমার বাসায় খেলে। গত ৮/৯ দিন থেকে নিলয় এই চারজন বাচ্চাকে চোখের উপরের পাতা উল্টিয়ে রেখে ভয় দেখাচ্ছে -- আর বলছে ------আমি ভুত, আমি ভুত। বাচ্চারা ত্রাহী চিৎকার করতে করতে ছুটে আসে আমার কাছে। “ভুত ভুত খেলবে না” বারবার নিষেধ করা সত্তেও এই খেলা থামছে না ।

ভুতের ভয় বাচ্চাদের মনে এত গভীর ভাবে গেঁথে গিয়েছে যে ওরা দিনে কি রাতে একা কোথাও যেতে পারে না, খেলতে পারে। এমন কি এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যাবার মধ্যবর্তি যে জায়গাটুকু সেই জায়গা পার হবার জন্য সংগে বড় কাউকে লাগে। ওরা ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখে ভয়ে আস্থির হয়ে চিৎকার করে কাঁদে। এই ভয়ের স্বপ্নের হাত থেকে বাঁচার জন্য আমি পর্যন্ত চিন্তা করা শুরু করলাম যে বাচ্চাদের জন্য কোন তাবিজ নেব কিনা ? বাচ্চাদের আতংকিত মুখ অসহায় কান্না মা বাবা কাউকে চিনতে না পেরে ছুটে ছুটে যাবার চেষ্টা বাবা মা হিসাবে আমাদের অসহায় করে তুলেছে। গত কাল আবার যখন নিলয় ভুতের ভয় দেখাচ্ছিল তখন আমি নিলয়কে ডেকে বেশ জোরে ধমক দিয়ে বলেছি ----------আর একবারও ভুত সাজলে আমি তোমাকে আর কলনীতে ঢুকতে দেব না।

এরপর আমি বাচ্চাদের আশে পাশেই থাকলাম যাতে নিলয় আর ভুত না সাজে। আসরের নামাজ পড়তে ঘরে এসেছি । নামাজ শেষ হবার আগেই শুনি আমার কাজের মেয়েটা আমার মেয়ের সাথে বেশ জোরে জোরে কথা বলছে । কি হয়েছে জানার জন্য এগিয়ে গেলাম। আমার মেয়ে কাজের মেয়েটার কোলে মুখগুঁজে রেখেছে ।

কাজের মেয়েটা আমাকে বলল ---------কিছু না খালা এমনি!! বুঝলাম এমন কিছু যা বাচ্চা চাচ্ছে না মা জানুক। নিলয় চলে গেছে দেখে আমি আমার ঘরে চলে এলাম। বাচ্চাদের বাবা বাচ্চাদের নিয়ে পুকুর পাড়ে গেল । এই সময় আমার কাজের মেয়েটা আমাকে যা বলল তা বলার জন্যই আজকে এত ঘটনার অবতারনা করলাম। নিলয় প্রতিদিন বাচ্চাদের ভয় দেখায় আর বলে------------- আমি ভুত রাতে তোমরা যখন ঘুমাবে আমি তোমাদের রক্ত চুষে খাব।

যদি তোমরা আমাকে টাকা দাও তাহলে রাতে আর রক্ত খেতে আসব না। আমাদের বাচ্চারা তাদের ঈদের সালামী জমা করে রাখে স্টিলের ব্যাংকে। গত ৪/৫ দিন ধরে প্রতিদিন বাচ্চারা তাকে ১০টাকা করে দিয়ে আসছে। প্রতিদিন নিলয়ের আয় হয়েছে ৪০টাকা। কাল টাকা বের করার সময় ধরা পরেছে।

কাজের মেয়েটার জেরার মুখে স্বীকার করেছে এই ঘটনা। নিলয় নাকি তাদের বলেছে ---- তোমাদের বাবা মা কেউ যদি জানে তবে রাত্রে এসে একেবারে মেরে ফেলে রেখে যাবে। বিস্ময়ে আমি বাকহারা। যদি আমি কখনও বলতাম---আজ নিলয় আসুক ওকে আমি বকা দেব। সাথে সাথে সবগুলো বাচ্চা বলত --না না ও তো খুব ভাল।

আমাদের খুব ভাল বন্ধু। এবার বুঝলাম ওরা ভয়েই ওকে কিছু বলতে দিতে চাইতো না। যদি রাতে এসে ওদের রক্তচুষে খায়। আমি আর কি বলব ? আমার বাচ্চার সহপাঠী । গ্রামের বাচ্চা বয়স খুব বেশী হলে আট বছর।

এখনই শুরু করেছে চাঁদাবাজী।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।