আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিব্রতকর+রোমান্টিক- ২য় পর্ব

কিছু স্বপ্ন দেখি। স্বপ্নগুলো অনেক সুন্দর।

১ম পর্ব ঠিক যেখানে শেষ হয়েছিল ,২য় পর্ব সেখান থেকেই শুরু করছি...। ফিজিক্স নোটের এই অবস্থা দেখে, হঠাৎ মনে হল আচ্ছা ম্যাথ নোটটা খুলে দেখি কি অবস্থা? হমমম..., আমার ধারনা ঠিক! রুপা এইখানে আরও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। দেখলাম...।

। পাতায় পাতায় রুপা অনেক কিছু লিখতে চেয়েছে,কিন্তু আমি যাতে সেইগুলা বুঝতে না পারি, সে জন্য প্রান-পনে তার উপর কলম চালিয়ে লেখা গুলো অস্পষ্ট করার চেস্টা করেছে। তবে ওর সব চেস্টা সফল হয়নি। সম্ভবতো ইচ্ছা করেই সফল করেনি, যাতে করে কিছুটা হলেও আমি বুঝি। বেশ কসরত করে, সূর্যের আলোতে ধরে, আমি দুইটা লেখার মর্ম উদ্ধার করতে পারলাম, , , লেখা দুটো ছিল এইরকম, "ভাইয়া, আপনি অনেক সুন্দর " "আপনি এত ভাল কেন?" লেখা দুটো পড়ে আমার দুই কান গরম হয়ে গেল।

কিছুক্ষনের জন্য স্বপ্নের জগতে হারিয়ে গেলাম। অজানা ভাল লাগায় মনটা ভরে গেল। ভাবলাম, পরীক্ষা এখনো অনেক দেরী.........যা ঘটছে ঘটুক না......... মাথায় অনেক কিছু ঘুরপাক খাচ্ছে। আগে মেয়েটার বাড়ী চেনা দরকার। একদিন খুব সতর্কতার সাথে ওকে ফলো করলাম।

আবিষ্কার করলাম, মেয়েটার বাড়ী আমাদের এলাকার আসেপাশেই। তখন আমার কাজিনও(খালাত বোন) নিউ ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। ওকে বললাম, তুই তো রুপার সাথে যেতে পারিস। একসাথে গেলে টাকাও বেচে যাবে । আমি রুপার সাথে ওর পরিচয় করিয়ে দিলাম।

পরদিন সকালে ওরা একসাথে প্রাইভেট পড়তে গেল। বিকাল বেলা আমার কাজিন আমাকে ফোন দিয়ে বলল, তুমি এখনই আমাদের বাসায় আসো। খুব জরুরি। আমি খুব জরুরি মনে করেই খালার বাসায় গেলাম। আমার কাজিন আমাকে যেই জরুরি কথাটা বলল তা এইরকমঃ এই মেয়ে সারা পথে রিকশাতে আমাকে চরম জ্বালাইছে।

একটু পর পর খালি তোমার কথা জিজ্ঞেস করেছে। তুমি কোন কোন স্যার এর কাছে পড়? তোমার কোন প্রেম আছে কিনা?এইসব উলটা-পাল্টা প্রশ্ন করে আমার মাথা খারাপ করে দিছে। এই মেয়ের সাথে আমার রিকশাতে যাওয়া সম্ভব না। আমি আর কি বলব। চুপ হয়ে গেলাম।

শেষে ধরা পরে যাই এই ভয়ে কিছু বললাম না। একদিন জানতে পারলাম, মেয়েটা নিউ ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে না। আসলে সে আমাদের ইয়ারে, মানে সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। খুব খারাপ লাগল এই ভেবে যে, মেয়েটা কেন মিথ্যা বলল? নিজেকে প্রতারিত মনে হল। ঠিক করলাম, মেয়েটার সাথে আর কোনদিন কথা বলব না।

তবুও যাকে নিয়ে এত কিছু তার মুখটা বোরখার আড়ালেই থেকে গেল। এটা তো ঠিক না। তাই ঠিক করলাম, মেয়েটার মুখ দেখব, যে করেই হোক। একদিন মেয়েটার সাথে পথে দেখা। আমি বললাম, রুপা তোমার সাথে একটু কথা আছে, একটু দাঁড়াবে? রুপা যেন খুব খুশিই হল আমার কথায়।

বলল, জী ভাইয়া ,বলেন। আমি আমার সমস্ত সাহস সঞ্ছয় করে বললাম, তোমার বোরখাটা একটু খোল, তোমার মুখ দেখব। আমি ভেবেছিলাম,মেয়েটা এখন খেপে যাবে এবং আমি একটা থাপ্পর খাব । এই মেয়ে আমার কাছে আর কোন নোট চাইবে না। কিন্তু না, যা হল তা আমার চিন্তার বাইরে ছিল।

রুপার মুখটা লজ্জায় লাল হয়ে গেল। শুধু বলল, ভাইয়া আমিতো বেশি সুন্দর না। আমাকে দেখে আপনার অতো ভাল লাগবে না। প্রোগ্রামিং এর ভাষায়, আমি পড়ে গেলাম unhandled exception এ!!!! মানে আমার মাথা ২য় বারের মত হ্যাং করল। অতপরঃ কি হল? পাঠক বন্ধুরা,আমার গল্পটা যদি নাটক অথবা উপন্যস হত তবে হয়ত রুপা কে নিয়ে অনেক রোমান্টিসিজম রচিত হত।

হয়তো, সেখানে রুপা'র রূপ নিয়ে অনেক অতিপ্রাকৃ্তিক বর্ননাও থাকত। ঘটনার নায়ক হয়ত দু একটা কবিতাও লিখে ফেলত। যাহক, গল্পে ফিরে আসি। আসলে আমি খুব ভীতু ছিলাম। প্রেম করতে যে সাহস(সাহস এখন আছে কিনা তাও বুঝতেছিনা) লাগে তা আমার ছিল না।

একটুখানি রোমাঞ্চ এসে আমার মনে দোলা দিয়েছিল। তা প্রেম ছিল কিনা জানি না। তবে তারপর আমি আর রুপার আসেপাশে ঘেষতাম না। ভুলে যাবার চেস্টা করলাম। পড়াশুনা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গেলাম।

লাইফ এ একটা Motto ছিল, ভুলেও প্রেম করা যাবে না। তাই সবকিছু ভুলেও গেলাম। একদিন শুনলাম, ওর বাবা কোথায় যেন বদলি হয়ে গেছেন। তারপর আর রুপার সাথে দেখা হয় নি। জীবনে হয়ত হবেও না।

একটাই আফসোস, রুপার চেহারা কেমন ছিল? ওকে দেখে কি সত্যিই আমার ভাল লাগত না? সমাপ্ত

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।