: বাঘ ভাই, আপনার হাল হকিকত কেমন ?
জামিনে না বেকসুর খালাস পাইলেন ?
: ওই আমাদের সম্পর্ক মামু-ভাগিনার। তুমি আবার ভাই বানাইলা কবে ? এইটা কী ?
: আরে ভাই পাবলিক হচ্ছে ভয়াবহ নাফরমান কিসিমের। এরা বাঘেরেও বলে বাঘ মামা, আবার সিংহরেও পাম মারে সিংহ মামা। এখন আমরা দুজন অন্যের মামা হলে দুজন কি ভাই না ?
: হ, বুঝছি। তুই ইদানীং শাহবাগের দিকে বেশি যাইতাছস।
ওই, এই বইমেলায় তুই কী বই কিনছসরে?
: ট্যাকা-পয়সার অভাব। আপনে তো জানেনই আমার সম্পত্তি সব বাজেয়াপ্ত কইরা ফেলছে। আমার ভোট শালী জরিয়ন আর বড় শালী মরিয়মের নামে কিছু সম্পত্তি ছিল। ছোটটারে আমি অত্যাধিক লাইক করতাম। তাই তার নামেই সম্পত্তি বেশি।
বড়টার চেহারা ইংরেজি হওয়াইর মতো বইলা অরে পাত্তাই দিতাম না। এখন সেই ছোটডাই আমার লগে পল্টি দিচ্ছে। কয় আমায় নাকি কিছুই নাই। বড়টার কাছ থেকে কিছু নিয়ে বইমেলায় গেছিলাম। একটা বইই কিনছি, নাম ‘ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি।
’
: হ, জোশ একখান বই কিনছস। সারা বছর রাজত্ব কইরা এখন আমগো অবস্থা সেইটাই। নইলে কি আর আমার মতো বাঘের নামে ফোর টুয়েন্টির মামলা হয় ?
: কিন্তু আপনি বুকে হাত দিয়ে বলেন যে ফোর টুয়েন্টিগিরি করেন নাই।
:ওই চুপ থাক। তুমিও তো চান্দু ১৩ দিন রিমান্ডে ছিলা।
তোমার ছবিও তো দৈনিক পত্রিকাগুলোতে বিশাল আকারে ছাপা হইছে। কিন হয় নাই ?
: দূর ভাই এই বিপদের টাইমে এক সঙ্গে হইয়া আবার নতুন কইরা ঝগড়া শুরু করলে তো বিপদ আরো বাইড়া যাইব। তা আপনার ব্যবসাপাতির কী খবর ?
: আর ব্যবসা! আমার আটার গুদামে পচা মাল পাইয়া ওইখানে আগুন লাগায়া দিছে। আমি জানি-এইটার পিছে কোনো না কোন ইঁদুরের হাত আছে।
: আমারও একই দশা।
কিন্তু আমার কী মনে হয় জানেন, একেবারে একটা বড়সড় খাটাশের হাত-পা সবকিছুই আমাদের ওপর পড়েছে। নইলে কি আর আমার চিড়ার মিল থেইক্যা কেউ ত্রাণের কম্বল খুঁইজা বাহির করতে পারত ?
:ত্রাণের কম্বল দিয়া ওইখানে কী কর্ম করতা ?
: মানে মিলের সৌন্দর্য সাধন করার জন্য আমি কার্পেট হিসেবে কিছু কম্বল ব্যবহার করেছি। আরে ভাই ১০ লাখ লোকের জন্য ১ হাজার কম্বলে কী হয় ? সেগুলো নষ্ট করার চেয়ে কার্পেট হিসেবে ব্যবহার করা ভালো নয় কি? তা ছাড়া কার্পেটের যা দাম !
: এহন জামিনে বাহির হইছি ঠিক কথা। কিন্তু মামলার যে জট লাগছে তাতে খুব সহজে ছাড়া পাব বলে মনে হয় না। আবার যদি রিমান্ডে নিয়ে ফরটিন স্টিকের অভ্যন্তরে ফুটবলের মতো কিক শুরু করে তাহলে তো অক্কা পেয়ে যাব।
: হ্যাঁ, অক্কা পাওয়ার আগেই কিছু একটা করা উচিত। এভাবে জামিনে থেকে হাজিরা দিয়ে দিয়ে লাইফ চালানো যায় না। এরকম হলে বরং লাইফ চলে যায়।
:চলে যায় মানে ? কই যায়, কোথায় যায় ?
: আপনে আমার মুহুরি। তবুও যেহেতু প্রসঙ্গ উঠছে তাই বলতে কোনো দ্বিধা নাই।
ভালোবাইসা একটা হরিণীরে বিয়া করছিলাম। কিন্তু হ্যায় আমারে ছ্যাঁকা দিয়ে গ্যাছে গা।
:থাকে ছোডো ভাই কাইন্দো না। তোমার একটা লাইফ গ্যাছেগা তো কী হইছে, আমি আরেকটা লাইফ আইন্যা দিমু। আমার সন্ধানে একটা খরগোশী আছে।
দারুণ সুন্দরী, তুমি কি তার সঙ্গে শাদি মোবারকে আগ্রহী ?
: ব্যাপক লজ্জা-লজ্জা লাগতাছে। তবু কইয়া ফালাই। আপনে আমার গুরুজন। আপনে যা বলবেন তা মাইনা নেয়া আমার নৈতিক দায়িত্ব। আপনি খোঁজ লাগান, কিন্তু এখন যে আমার অর্থনৈতিক দৈন্যকাল চলছে।
:প্রোবলেম নাই। আমি কিছু ধার দিমুনে। তবে পরে কিন্তু পোষাইয়া দিতে হইব। নইলে কিন্তু আমি ছাইড়া দিমু না।
:কী যে বলেন ভাই স্যাব।
আপনের লগে পোলটি লইব এমন মার পোলা কে আছে? আমিও নাই। তাই নিশ্চিন্তে পয়গাম পাঠাতে পারেন।
: শুনলাম তোমার মির থেইক্যা ত্রাণের টিন উদ্ধার করা হইছে। তুমি উদ্বাস্তু হইলা কবে, যে ত্রাণের টিন মাইরা দিলা ?
:ঠিক আছে। হায়! আমার মোবাইলে কল বাজতাছে।
: রিসিভ করেন!
: হ্যালো মদইন্যা, কী খবর, বল! কী ? অস্ত্রের চালান ধরা পড়ছে ? মোকলেস আমার নাম কইয়া দিছে? মামলাও হইছে ? হায় ? ঠিক আছে তুই রাখ। জ্বালায় দিমু সব, পোড়ায়া দিমু হালুম।
: বাঘ ভাই ঘটনা কি খুবই খারাপ ?
: চুপ থাক, আমি আসছি। সব পোড়ায়া দিমু, জ্বালায়া দিমু।
: আপনি গ্যালেগা আমার বিয়ার কী হইব বস ?
: ধ্যাৎ।
বেশি কথা বলেছিস তো, চাকরি নট করে দেব। একেবারে গোড়া থেকে নিয়োগ বাতিল। সব পোড়ায়া দিমু।
: বাঘ ভাই, শেষ কথা শুইনা। গেলেন না......
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।