প্রকৃত আলোয় আলোকিত হউক সবার হৃদয়।
আমাকে যদি কেউ প্রশ্ন করে বাংলার সবচাইতে প্রাচীন কৃষিবিদ কে? অনায়াসে উত্তর দেব খনা। জানি না হয়তো অন্য কেউ ও থাকতে পারে। একজন বিখ্যাত জ্যোতিষী হয়েও বাংলার কৃষকদের সাহায্যার্থে তিনি অসংখ্য ছন্দবদ্ধ উপদেশমূলক উক্তি রেখে গেছেন যা আধুনিক কৃষিবিজ্ঞানের সাথে বহুলাংশে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
কিছুদিন পূর্বে দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত কৃষিবিদ ফরহাদ আহাম্মেদ সংকলিত কিছু খনার বচন তুলে ধরলাম।
আপনাদের জানা অন্য বচনগুলো উল্লেখ করার আবেদন রইলো।
১। চাষী আর চষা মাটি/
এ দু'য়ে হয় দেশ খাঁটি।
২। যদি বর্ষে মাঘের শেষ/
ধন্য রাজার পূণ্য দেশ।
৩। গাছে গাছে আগুন জ্বলে/
বৃষ্টি হবে খনায় বলে।
৪। জ্যৈষ্ঠে খরা, আষাঢ়ে ভরা/
শস্যের ভার সহে না ধরা।
৫।
আষাঢ় মাসে বান্ধে আইল/
তবে খায় বহু শাইল।
৬। আষাঢ়ে পনের শ্রাবণে পুরো/
ধান লাগাও যত পারো।
৭। তিন শাওনে পান/
এক আশ্বিনে ধান।
৮। পটল বুনলে ফাগুনে/
ফলন বাড়ে দ্বিগুণে।
৯। ফাগুনে আগুন, চৈতে মাটি/
বাঁশ বলে শীঘ্র উঠি।
১০।
ভাদ্রের চারি, আশ্বিনের চারি/
কলাই করি যত পারি।
১১। আখ আদা, পুঁই/
এ তিন চৈতে রুই।
১২। লাঙ্গলে না খুঁড়লে মাটি, মই না দিলে পরিপাটি/
ফসল হয় না কান্নাকাটি।
১৩। সবলা গরু সুজন পুত/
রাখতে পারে খেতের জুত।
১৪। গরু-জরু-ক্ষেত-পুতা/
চাষীর বেটার মূল সুতা।
১৫।
সবল গরু, গভীর চাষ/
তাতে পুরে চাষার আশ।
১৬। গাই দিয়ে বয় হাল/
তার দুঃখ চিরকাল।
১৭। শোন শোন চাষি ভাই/
সার না দিলে ফসল নাই।
১৮। হালে নড়বড়, দুধে পানি/
লক্ষ্মী বলে চাড়লাম আমি।
১৯। রোদে ধান, ছায়ায় পান।
২০।
আগে বাঁধবে আইল/
তবে রুবে শাইল।
২১। খনা বলে শুনে যাও/
নারিকেল মুলে চিটা দাও।
২২। গাছ-গাছালি ঘন রোবে না/
গাছ হবে তাতে ফল হবে না।
২৩। খরা ভুয়ে ঢালবি জল/
সারাবছর পাবি ফল।
২৪। ষোল চাষে মূলা, তার অর্ধেক তুলা/
তার অর্ধেক ধান, তার অর্ধেক পান।
২৫।
ডাঙ্গা নিড়ান বান্ধন আলি/
তাতে দিও নানা শালি।
২৬। কাঁচা রোপা শুকায়/
ভুঁইয়ে ধান ভুঁইয়ে লুটায়।
২৭। বার পুত, তের নাতি/
তবে কর কুশার ক্ষেতি।
২৮। তাল বাড়ে ঝোপে/
খেজুর বাড়ে কোপে।
২৯। গাজর, গন্ধি, সুরী/
তিন বোধে দূরী।
৩০।
কলা রুয়ে না কেট পাত/
তাতেই কাপড়, তাতে ভাত।
৩১। হলে ফুল কাট শনা/
পাট পাকিলে লাভ দ্বিগুণা।
৩২। খনা বলে শোনভাই/
তুলায় তুলা অধিক পাই।
৩৩। ঘন সরিষা পাতলা রাই/
নেংগে নেংগে কার্পাস পাই।
৩৪। দাতার নারিকেল, বখিলের বাঁশ/
কমে না বাড়ে বারো মাস।
৩৫।
বারো মাসে বারো ফল/
না খেলে যায় রসাতল।
৩৬। ফল খেয়ে জল খায়/
জম বলে আয় আয়।
৩৭। ভরা পেটে ফল /
খালি পেটে জল।
৩৮। মঙ্গলের শেষ বুধে পা/
যথা ইচ্ছা তথা যা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।