আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিয়ের খায়েশ????!!!!

কত আজানারে জানাইলে তুমি, কত ঘরে দিলে ঠাঁই দূরকে করিলে নিকট,বন্ধু, পরকে করিলে ভাই।
আমার জীবনের প্রথম কর্মস্থল। তখন সবে মাত্র ইউনিভার্সিটি থেকে বের হয়ে কাজে যোগ দিয়েছি। নির্দিষ্ট কোন কাজ ছিল না। সবার কাজ দেখা ও শেখাই ছিল মূল কাজ।

একদিন এক মহিলা এলেন অভিযোগ নিয়ে। তার সরকারি চাকুরীজিবী স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছে তাকে না জানিয়ে। তার দুই বাচ্চার ও তার ভরণ পোষন সে দেয় না। স্বামীকে ডাকা হল। তার বক্তব্য শোনা হল এবং মোটামুটি যে সমাধান সবার গ্রহনযগ্য হল তার ব্যবস্থা করা হল।

কি ভাবে কি হল ? কি সমাধানে আমরা এসেছি সেই প্রসঙ্গে আমি যাচ্ছি না। আমার লেখার বিষয় যা আমি শুধু তাই লিখছি। এর ঠিক মাস দুই পরে সেই স্বামী ভদ্রলোক এলেন আমাদের অফিসে। এসেই খুব রাগা রাগী। পাড়লে সে আমাদের মারে ধরে আর কী? খুব রাগ।

----------ব্যাপার কি ভাই খুলে বলুন ? আপনি কি কোন আভিযোগ নিয়ে এসেছেন? আমাদের কি অপরাধ একটু ভালভাবে বলুন। আপনি বসুন ! মাথা ঠান্ডা করুন!! এবারে ভদ্রলোক বসলেন। আমাদের সামনে তিনি তার গায়ের শার্টটি খুলতে শুরু করলেন। !! আমারা খুব ই অবাক হয়ে তার কাজ দেখছি। একটু বিব্রত বোধও করছি।

আমাদের সাথে আমারা পুরুষ মহিলা কলিগরা আছি, সিনিয়র আফিসাররাও আছেন। তার শার্টের বোতাম দুইটা খোলার সাথে সাথে বুঝে গেলাম তার শার্টের নিচে গ্যঞ্জি নাই। তাড়াতাড়ি পুরুষ কলিগরা বললেন---- ভাই কি খুব গরম লাগছে, এসির পাশে আসেন শার্ট খোলার দরকার হবে না। ভদ্রলোক খুব গম্ভীর ভাবে এক ধমক দিলেন ----মিয়া শার্ট খুলতে দেন আগে? তিনি শার্ট খুলে আমাদেরকে তার পিঠের দিকে ইঙ্গীত করে বললেন ---দেখেন!!!!!! সবার সব কয়টা চোখ অপার বিস্ময় নিয়ে তার পিঠের দিকে চলে গেল। সেখানে কালো কালো ছোপ ছোপ ছ্যাঁকা লাগাবার দাগ।

গুনে দেখলাম মোট আটটি। ---- কি ব্যাপার ভাই এই আবস্থা কি ভাবে হল? পিঠে কে ছ্যাঁকা দিল? কি খুব কষ্ট পাইছেন না? কে এই রকম সন্ত্রাসী কাজটা করলো? ভদ্রলোক হঠাৎ ভেউ ভেউ করে কেঁদে উঠলেন। কাদঁতে কাঁদতে যা বললেন তার সারমর্ম হল ----কাল রাত এগারটার সময় সে বাড়ি ফেরার পর তার ছোট বউ তাকে খেতে ডাকলে সে রান্না ঘরে খেতে যায়। তখন তার বড় বউ তাকে সামনে থেকে জাপটে ধরে আর ছোট বউ আগে থেকে জ্বলন্ত চুলার উপরে রেখে দেয়া দুই খুন্তি দিয়ে পটাপট তাকে ছ্যাঁকা দেয়। সারারাত যন্ত্রনায় ছটফট করে এখন সে আমাদের কাছে এসেছেন।

সেদিন আমরাই তার বিচার করে দিয়েছিলাম। আজ আমরাই যেন তার আবার বিচার করি। মান সম্মানের ভয়ে সে পুলিশের কাছে যায় নাই। এই কথা শোনার পর থেকে আমরা কেউ আর হাসি চাপতে পারছিলাম না। যদিও খুব কষ্ট করে হাসি থামাচ্ছিলাম তারপরে একজন আর একজনের দিকে তাকালেই জোরে হেসে উঠছিলাম।

আবার বিকাল নাগাদ তার বউ দুইজনকে ডেকে আনা হল--- আপনারা এটা কেন করলেন? তাদের দুইজনের একই বক্তব্য ----ঐ হারামজাদার আবারও বিয়া করার খায়েশ হইছে।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।