মানুষ আমি খুঁজছি মানুষ আরো মানুষ হতে
ইয়ারকি নয়, ভেবে দেখা যেতে পারে। কারণ সময় বড় একটা ফ্যাক্টর। ঘড়ির কাটা এক ঘন্টা এগিয়ে আনাতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে, প্রশাসনে গতি আসবে, দেশ এগিয়ে যাবে। এটি অত্যন্ত গভীর ভাবনার ফলাফলই বটে। কিন্তু এই সময় ব্যবস্থাপনার জন্য দেশে বৃহৎ একটি ঘড়ির অধীনে প্রত্যেক এলাকায় অন্তত মাঝারি ঘড়ি থাকা প্রয়োজন।
যে ঘড়িটি বা যে সময়টি একেবারে সরকারি সময় হিসেবে গণ্য হবে। ওই ঘড়িগুলির সময় তদারকির জন্য একটি সময় নিয়ন্ত্রণ বা ব্যবস্থাপনা বিভাগ থাকবে। যা থাকবে একটি মন্ত্রণালয়ের অধীন। সময় মন্ত্রণালয়। যে মন্ত্রণালয় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন পয়েন্টে মানুষের হাতঘড়ি পরীক্ষা করবে।
যারা সরকার নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ঘড়ির সময় পাল্টায়নি তাদের জন্য জরিমানার ব্যবস্থা করবে। সেখান থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব সময় মন্ত্রণালয়ে যুক্ত হবে। প্রতি বছর জাতীয় বাজেটে সময় মন্ত্রণালয়ের জন্য বিশেষ বরাদ্দ এবং নির্দেশনা থাকবে। যে নির্দেশনার আওতায় দেশের মানুষ সময় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে নতুন তথ্য, তত্ত্ব ইত্যাদি পাবে। মন্ত্রণালয় সময় বিষয়ক একটি নিয়মিত বুলেটিন প্রকাশ করবে।
যে বুলেটিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সময় ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সময় এবং কর্মঘন্টা বিষয়ক প্রতিবেদন ও তথ্য উপাত্ত প্রকাশ করবে। এর মধ্য দিয়ে মানুষকে সময়জ্ঞানে দীপ্ত করার প্রয়াস চালানো হবে।
আসা যাক অন্য হিসেবে, গ্রামের কৃষকরা বরাবরই ঘড়ি ব্যবহার করে না। প্রাচীনকাল থেকেই সূর্যের অবস্থান দেখে সময় নির্ধারণে অভ্যস্থ। সূর্য যখন মাথার ওপরে তারা ভাববে বারোটা।
কিন্তু ঘড়িতে তখন ১১টা। শহরের মানুষ যখন মধ্যাহ্নভোজ সারবে গ্রামের মানুষ সারবে তার চেয়ে এক ঘন্টা ব্যবধানে। শহরের মানুষ গ্রামে গিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে আরো বেশি অবাক হবে। এর মধ্য দিয়ে শহর ও গ্রামের ব্যবধানটি আরো বাড়বে। এ অবস্থা নিরসনে গ্রামে গ্রামে সূর্যঘড়ি স্থাপন করা যেতে পারে।
যেটি তদারকির জন্য সময় মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একজন কর্মকর্তা থাকবেন উপজেলা পরিষদে। তার দপ্তরে বিভিন্ন রকম ঘড়ির ব্যবস্থা থাকবে। সূর্যঘড়ির পাশাপাশি থাকবে বালিঘড়ি, তার পাশাপাশি আমাদের আধুনিক ডিজিটাল ঘড়ি। সেখান থেকে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সময় তদারকি করা হবে। গ্রামের মসজিদগুলিতে সময় মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ ধরণের সময় যন্ত্র বসানো হবে।
যেখানে প্রতি ওয়াক্তে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অটো আজান দেয়ার ব্যবস্থা থাকবে। ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রামের জনপ্রতিনিধিরা তাদের বাড়িতেও ব্যক্তিগত পয়সা ব্যয় করে নানা রকমের ঘড়ি স্থাপন করবেন। ঘড়ি হয়ে উঠবে ধন দৌলত ও আভিজাত্যের প্রতীক।
মানুষের ক্ষুধা এক ঘন্টা এগিয়ে যাবে। এখানেই বিপত্তি।
আগে যারা দুপুর ১টায় লাঞ্চ সারতেন, এখন তাদের এগিয়ে গিয়ে বারোটায় লাঞ্চ সারতে হবে। বেলা দুইটার ক্ষেত্রে একটা, তিনটার ক্ষেত্রে দুইটা। এর পাশাপাশি ঘুমোতে হবে আগে উঠতেও হবে আগে।
সময়ের ব্যাপারে রাজনৈতিক নেতারা নানারকমের বক্তব্য ও গালগপ্প ফাঁদবেন। আগামী নির্বাচনের আগে একেক রাজনৈতিক দল তাদের ইশতেহারে সময় পরিবর্তনের একেকরকম প্রতিশ্র“তি দেবে।
সাহসী কোন রাজনৈতিক দল গ্রিনিচ মান সময়ের সঙ্গে বাংলাদেশের সময় একেবারে মিলিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়ে ফেলবেন। তাদের প্রতিশ্র“তি হবে এমন যে, আমেরিকা বা লণ্ডনে যখন যে সময়, আমাদের এখানেও তখন সে সময় বাজানো হবে। সরকার যেকোন মূল্যেই তা বাস্তবায়ন করবে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের সঙ্গে পৃথিবীর উন্নত সকল দেশের অন্যরকম এক বন্ধুত্ব তৈরি হবে। প্রয়োজনে অক্ষাংশ দ্রাঘিমাংশ পাল্টে ফেলা হবে।
কর্কট ক্রান্তি রেখা এখন বাংলাদেশের যে অংশ দিয়ে গেছে, তখন তা পাল্টে ফেলা হবে। তখন হয়তো পরবর্তী সরকার ‘ডিজিটাল’ শব্দটিকে আরো সংক্ষেপ করে শুধু ‘টাল’ শব্দটি ব্যবহারে আন্তরিক হবে। বদলে যাবার প্রচেষ্টায় মাথা নিচে দিয়ে দুই পা উপরে রেখে হাঁটাচলার একটি স্থায়ী চর্চার ব্যবস্থাও করা হবে।
তখন সময়কে কেন্দ্র করে আরো নতুন নতুন ভাবার্থধর্মী বাক্য প্রচলিত হবেÑ
যেমন,
১২ টা বাজা মানে ধ্বংস হয়ে যাওয়া বা ক্ষতি হওয়া বা বিশৃংখলা সৃষ্টি হওয়া
১ টা বাজা মানে কোন কিছু থেকে উদ্ধার পাওয়া
২ টা বাজা মানে ২ নাম্বাারির লক্ষণ
৩ টা বাজা মানে নিউটনের তৃতীয় সূত্র মিলে যাওয়া
৪ টা বাজা মানে চতুর্থ বিবাহের জন্য উন্মুখ হওয়া
৭ টা বাজা মানে লটারি জেতা ইত্যাদি..........
বাকীটুকুর জন্য অপেক্ষায় থাকুন, অথবা আপনার নিজস্ব ভাবনা যুক্ত করুন..................
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।