জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই
আমার বায়িং হাউজের চাকুরির অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। সকাল ৯টায় ঢুকতাম। বের হওয়ার কোন নির্দিষ্ট সময় ছিল না। সাধারণত রাত ১০টার আগে বের হওয়ার কথা বসের কাছে বলাই যেত না। এর আগে তার সামনে বের হওয়ার কথা বললে এমন বকা খেতে হত যে, পর দিন আর কেউ এই রিস্ক নিত না।
কোন কোন দিন রাত ১২টায় অফিস থেকে বেরিয়েছি।
অন্য দিকে সকাল ৯টা থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত ছিল নিরাপদ সময়। এই সময় পর্যন্ত উপস্থিতি স্বাক্ষর করা যেত। তার চেয়ে বেশি দেরি হলে উপস্থিতি খাতায় লাল কালি পড়ত। ৩ দিন লাল কালি পড়লে ১ দিনের বেতন কাটা যেত।
যত দিন সেই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেছি কোন মাসেই পুরো বেতন পাইনি। কাটা গেছে কমপক্ষে ৫০০ টাকা।
অথচ দিনের পর দিন প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করে গেছি। আধুনিক ক্রীতদাস প্রথার অন্যতম জায়গা এই বায়িং হাউজ। মানুষগুলো একেকটা যন্ত্র, কাজ ছাড়া আর কিছু বোঝে না।
আর বস মানে একটা স্বৈরশাসক।
অবশেষে একদিন সুযোগ বুঝে সেই চাকুরির মুখে লাথি মেরে চলে এসেছি। আমার সামর্থ্য ছিল বলে পেরেছি। যাদের সামর্থ্য নাই, তারা এখনও সেই জেলখানায় তাদের জীবন পার করে দিচ্ছে। আধুনিক ক্রীতদাসেরা মেনে নিয়েছে তাদের ভাগ্য।
ডে লাইট শেভিং এর কথা শুনে নিঃসন্দেহে আমার সেই বায়িং হাউজের বসের হাসি কান পর্যন্ত গড়িয়েছে। এবার আরও ১ ঘণ্টা আগে তার অফিস শুরু করতে পারবেন তিনি। আরও ১ ঘণ্টা বেশি শ্রম শোষণ। ক্রীতদাসদের ১ ঘণ্টার কি কোন মূল্য আছে ? তাদের তো জীবনেরই মূল্য নাই।
ডে লাইট সেভিং এর নামে আমাদের নতুন শোষণের যুগ শুরু হচ্ছে।
এই নয়া শোষণের যুগে আপনাদের স্বাগতম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।