এডিট করুন
আমরা ক্ষ্যাত। হ্যা, আমরা গর্ব করিয়াই বলিয়া থাকি আমরা ক্ষ্যাত। আমাদিগকে দেখিয়া সুশীলগনের নাসিকায় বড্ড সমস্যার উদ্রেক ঘটিয়া থাকে। তাহাদিগের নাকে পুরানো সর্দির জমাট অবশিষ্টাংশ বড়ই ক্লেশ প্রদান করিতে থাকে। কেবল মাত্র সুশীল বলিয়া তাহারে জনসম্মুখে তর্জনি প্রবেশ করত নাসারন্ধ্র পরিষ্কার করিতে পারে না।
তাহারা যাহাই করে লোকচক্ষুর অন্তরালে করিয়া থাকে। তাই তাহাদিগের কার্যকলাপের প্রতি আমরা সম্যক অবগত নহি ) কিন্তু আমাদিগকে সকলেই জানে। কারন আমরা সর্বসাধারনের সম্মুখে নাক ঝাড়িয়া সর্দি পরিষ্কার করিয়া থাকি। উসখুস নিয়া স্বাভাবিক থাকা আমাদিগের পক্ষে সম্ভব নহে। অধুনা ক্ষ্যাত দলের প্রতিষ্ঠা হইয়াছে।
আমরা দলে দলে যোগদান করিতেছি। তাই ভাবিলাম একটি আলোচনা করিলে মন্দ হয় না।
এহন আইজকা আমি যেই আলোচনাডা করুম তা হইতাছে ক্ষ্যাত সম্পর্কে সুশীলগোর মনোভাবের কিছুটা পরতিবাদ। ক্ষ্যাত মানে কি? আমি জিজ্ঞাসা করিয়াছি ক্ষ্যাত মানে কি? শহরের কিছু পোলাপান যাহারা ধান গাছ হইতে কাঠ পাওয়া যায় কিনা জাতীয় প্রশ্ন কইলে গভীর চিন্তায় মগ্ন হইয়া উত্তর প্রদান করে যে, "মনে হয় পাওয়া যায়", তাহারা বলিবে, "আমাদের গ্রুপের রাজ, যে ছেলেটা প্রায়ই লুঙ্গি পরে বাসা থেকে বের হয় ও হচ্ছে ক্ষ্যাত। সো ডিসগাষ্টিং।
মানুষ লুঙ্গি পরে থাকে থাকে কিভাবে। আই ক্যান্ট থিঙ্ক হাঊ হি ডু ইট। " আর আমারে যদি জিজ্ঞাসা করেন ক্ষ্যাত মানে কি তাইলে আমি কমু ছোটবেলায় বাদাম তুলতাম যে জায়গারথন আর যেখানে ধান চাষ করার পর শিলা পইড়া ধান চিটা হয় ঐডিরে কয় ক্ষ্যাত। এখন বিশেষজ্ঞগন বলেন আমার উত্তরটাই ঠিক আছে। সুতরাং আমি ক্ষ্যাত না।
কিন্তু এইদিকে সারা সমাজ বলিছে আমি ক্ষ্যাত। এইটারেই বা ফালাই কেমনে। হাজার হইলেও জনমত বলে কথা। খালেদা হাসিনাই যেইহানে জনমত নিয়া প্রধানমন্ত্রী হয় সেইহানে আমি কোন *** **।
যাই হোক আমি এখন একটু আপেক্ষিক আলোচনা করব।
আমাদের ক্ষ্যাত বলার যে কারনগুলা আছে তার মধ্যে প্রথম এবং প্রধান হইল আমাদের জামাকাপড়। আচ্ছা জামাকাপড় কি? মানুষের আজকের এই অবস্থানের প্রধান কারন তার প্রশ্ন করার স্বভাব। তাই আমি প্রশ্ন করিতেছি। এর উত্তর বড়ই জটিল। কেহ বলিবেন লজ্জা নিবারনের উপায়।
কেহ বলিবেন শরীরকে বাহিরের বিরূপ আবহাওয়া হইতে রক্ষা করিবার উপায়। কেহ বলিবেন একটা প্রকাশ সৌন্দর্যের । কেহ উপরের তিনটি উত্তর হইতে যে কোন দুইটি কেহবা তিনটিই বাছিয়া নিবেন। যাহারা বলিবেন "শরীরকে বাহিরের বিরূপ আবহাওয়া হইতে রক্ষা করিবার উপায়" তাহাদের সহিত আমার কোন বিতর্ক নাই। তাহারা আমর মতই তথাকথিত সমাজ ঘোষিত ক্ষ্যাত।
এবার বাকিদের কথায় আসা যাক। লজ্জা কি? ইহা হইল অপরের বা নিজের সম্মুখে প্রকাশিত কোন অবস্থা বা অবস্থান নিয়া একধরনের অস্বস্তি। সৌন্দর্য কি? ইহা হইল একধরেন অবস্থা বা অবস্থান যা দেখিয়া আমাদের ভাল লাগে আবার কারো কারো ঈর্ষার উদ্রেক হয়। এখন কথা হইল সৌন্দর্য বিষয়টা আপেক্ষিক আর লজ্জা বিষয়টাও আপেক্ষিক। দেশের বারোটা বাজাইয়াও কারো কারো লজ্জা হয় না আবার কালো মেয়ের রূপ দেখিয়া রবিও তাকাইয়া থাকেন।
বিকিনি পইরা এক দেশে ঘোরা যায় অথচ কেউ তাকাইয়াও দেখে না আবার আরেক দেশে টাইট জিন্স পইরা হাইটা গেলেও মাইনষে হা কইরা তাকায় থাকে। তাই উক্ত দুই সংজ্ঞাই বাতিল। সঠিক হইবে "শরীরকে বাহিরের বিরূপ আবহাওয়া হইতে রক্ষা করিবার উপায়"। এর পক্ষে প্রমানও হাজির করা সম্ভব। উদাহরণঃ আরবদেশ।
আমরা ক্ষ্যাতরা যে তাই জামাকাপড়ের কারনে সুশীলদের অবজ্ঞার পাত্র নাই আশা করি তা হারপিক দিয়া পরিষ্কার করা কমোডের মতই পরিষ্কার হইয়াছে। লুঙ্গির সাথে কেডস পরা তাই নাক কুচকানোর মত কোন বিষ্য না। কেডস হইল একটা জুতা মাত্র যা আমাদের পা রক্ষা করে, এর বেশী কিছু না। তা ছাড়া এ জগতের সকল বিখ্যাত বিজ্ঞানীর জীবনী থেকে জানা যায় তাহারা জামাকাপড়ের প্রতি চরম উদাসীন ছিলেন। টমাস আলভা এডিসন বাত্তির আলোতে বইসা যেই সুশীলডা এহন তার আরেক সুশীল বন্ধুর লগে গল্প করতাছে, "আজকে বিকালে রাজ আইছিল।
পোলাডা এহনো ঠিক হয় নাই। দিন যাইতাছে আর আরো বেশী কইরা ক্ষেত হইতাছে পোলাডা। ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়ব ( আহারে কি আমার দরদী, তুমার মত সুশীলই তো আমার সমস্যার কারন ) এমন কইরা চললে", হেডিরে যদি এডিসন পাইত তাইলে হের বাত্তিরে হে সিউর এডিট কইরা এমনে বানাইত যাতে কোন সুশীল কাছাকাছি থাকলে বাত্তি না জ্বলে। সুশীলদের জন্য দরকার লালবাত্তি জ্বলা আমরা মাহাজ্ঞানী মহাজনদের বাস্তবে অনুসরণ করি, ফাও হেগোর বুলি কপচাইয়া ভাব মারি না। গান্ধীর পোশাক আমাদের অনুপ্রেরনা।
শেখ সাদী আমাদের পরম প্রিয়জন। ঐসব ফালতু পোশাক-আশাক নিয়া টাইম নষ্ট করার মত টাইম আমাগোর নাই। আমাদের পূর্বসূরীরা আমাদের মতই ক্ষ্যাত ছিলেন এবং তারা প্রত্যেকে বিশ্বকে কিছু না কিছু দিয়ে গেছেন। তাদের সারা দুনিয়া সম্মান করে। আমাদেরকেও একদিন সারা দুনিয়া সম্মান করবে সুশীলের ভাত নাই।
তোমারা সুশীলরা ছালা নিয়া কানতে বহ। কারন একদিন আমাগোর বিশ্ববিখ্যাত অবস্থা দেইখা খালি আফসুস করবা আর কানবা আর কইবা কেন যে ক্ষ্যাত হইলাম না, ক্ষ্যাত গ্রুপে যোগ দিলাম না।
পোশাক সম্পর্কে ক্ষ্যাত শপথঃ "আমি শপথ করিতেছি যে, আমি পোশাক নিয়া মাথা ঘামাইয়া মস্তিষ্কের ফালতু ব্যবহার কখনই করিবনা। কে কি বলিল আমার পোশাক নিয়া তাহা এক কান দিয়া ঢুকাইয়া আরেক কান দিয়া বাহির করিয়া দিব। ভবিষ্যতে নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার পর পুরষ্কার বিতরন অনুষ্ঠানে অবশ্যই লুঙ্গি পরিয়া যাইব"।
আজকে আর লেখতে ভাল লাগতাছেনা। পরে এডিট কইরা বাকীটুকু লেখুম।
জয় ক্ষ্যাত, ক্ষ্যাত জিন্দাবাদ, ক্ষ্যাত চিরজীবি হোক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।