সকলেই কবি নয় কেউ কেউ কবি...
পোষ্টার কথা বলে
দেয়ালের গাত্রে
পোষ্টার কথা বলে
দিবা কিবা রাত্রে !
কোন দল কিবা চাহে
করে কোন চেষ্টা
জানা যায় পোষ্টারে
ছেয়ে গেছে দেশটা !
কত শত ভাষ্য
পোষ্টারে যেনো কিছু
নহে অবিশ্বাস্য !
চাই চাই বিপ্লব
জনতার সাম্য
আজকের পোষ্টারে
তাই হোক কাম্য ।
- শহীদ সাগ্নিক
"পোষ্টার"
(স্বৈরাচার বিরোধী ছড়ার কাগজ)
সম্পাদনায়: কাজল রশীদ
প্রকাশনায়: শব্দরূপ সাহিত্য পরিষদ
মৌলভীবাজার
প্রকাশকাল: জুন/ছিয়াশি
.................................................................................
শোষিতের গল্প
আতাঊর রহমান মিলাদ
পেট ভরে ভাত চাই
দাবী শুধু একটাই
শুনে রাজা হেঁকে কয়
পেট ভর আলুতে,
পরনে কাপড় নাই
যুবকের সাধ তাই
ঠ্যাং তুলে মুতে দেয়
সমাজের তালুতে।
এইভাবে দিন দিন
জীবনের বাড়ে ঋণ
এক হয়ে সব মিলে
গড়ে তুলে দূর্গ,
শোষিতরা আসে তেড়ে
ক্ষমতার ভিত নেড়ে
শোষিতের পদতলে
শোষকের স্বর্গ \
................................................................................
রাজার হুকুম
আব্দুল হামিদ মাহবুব
আজ থেকে রা-করা
একেবারে বন্ধ
বক্তৃতা দিলে কাঊ
পাবে ঠিক দন্ড ।
চুপে চুপে করো যদি
বেআইনী ফন্দি
টিকটিকি ধরে ঠিকই
করবেতো বন্দী ।
দন্ডটা হতে পারে
জেল ফাঁসি গুম
এই হলো আজ থেকে
রাজার হুকুম ।
................................................................................
আমরা নেতা
আবু মকসুদ
আমরা নেতা সর্ব কালের
মানতে মোদের হবে
নইলে কারো মাথাটা কি
ঘাড়ের ঊপর রবে ।
আমরা নেতা যখন খুশী
সাজবো সাধু, পাজী
নিজের স্বার্থে দেশ বেচতে
সব সময়ই রাজী ।
আমরা নেতা ইচ্ছা হলেই
করবো জিনিষ পাচার
লাথি মেরে ভেঙে দেব
তোদের দাবী, বাঁচার ।
আমরা নেতা সবার সেরা
মনে রাখিস তোরা
নেতা ছাড়া আর সবাই
হলো কপাল-পোড়া ।
................................................................................
দে পাঠিয়ে পাবনা
আসলাম সানী
বাহাত্তুরের সংবিধানও
মানেনা যেই শালা
পাকবাহিনীর সেই ছেলেটার
মুখে আগুন জ্বালা ।
সার্ক কইরা সে ভাবতে আছে
আজব আজব ভাবনা
হাত-পা বেঁধে পাগলটাকে
দে পাঠিয়ে পাবনা ।
................................................................................
অপেক্ষাতে থাকি
আহমাদ মাযহার
স্বাধীনতা মিষ্টি মেয়ে
কই লুকিয়ে ছিলে,
ছোট মেয়ে বলে তোমায়
নিয়ে ছিলো চিলে ?
চিলেরা সব সদাই এমন
মিষ্টি মেয়ে নেয় কেড়ে,
যুদ্ধ করে চিলকে সবাই
তাই ফেলেছি মেরে ।
চিল মেরেছি কয়টা মোটে
আরো অনেক বাকি-
তাদের যারা রুখবে তাদের
অপেক্ষাতে থাকি ।
................................................................................
পাগল মন
আহমাদ উল্লাহ
দুদিক দিয়ে দুপথ গেছে
কোন পথে যাই ভাবি
কোথায়রে মন যাবি !
পশ্চিমে যে পথ গেছে তার
মাথায় গিয়ে বন
আমার এগোচ্ছেনা মন ।
দক্ষিণে যে পথ গেছে তার
মাথায় গিয়ে নদী-
আহ ! যেতে পারতাম যদি !
................................................................................
তাকে
ওবায়দুল গনি চন্দন
জনসভা কিংবা মিটিং
সমাবেশ,
মিষ্টি বুলি ছেড়ে দারুন
জমাবে সে ।
সবাই জানায় শ্রদ্ধা কারণ
দেশের নেতা,
করলে চুরিও চুপ থাকে সব
বলবে কে-তা ?
দেশের কথায় দিক্না যতই
কম ভাষণ,
সবাই তবু জানায় তাকে
সম্ভাষণ ।
................................................................................
ঐ শালাতো
চন্দন কৃষ্ণ পাল
বাটপারি মেরে মেরে
এবার শালা গদীতে,
এ শালারে ধরো এবার
চুবাও তীরে নদীতে ।
নিজে করে দুর্নীতি সে
নীতির পক্ষে চিল্লায়,
ঐ শালাইতো সকল গলদ
লাগিয়েছে বিছমিল্লয় ।
ভুত হয়ে চপেছে সে
এদেশে বাসীর ঘাড়ে,
এবার যদি ধরি তারে
আরতো ছাড়বো নারে ।
................................................................................
কাব্য করেন রাজা
দিলু নাসের
হাট বাজারে গঞ্জে গ্রামে
রটলো গরম খবর
রাজা নাকি রাত্রি জেগে
কাব্য করেন জবর ।
কাব্য করেন দেশের রাজা
খুব আশা তার মনের,
এই সুযোগে জনপ্রিয়
হবেন জনগনের ।
কিন্তু রাজার কাব্য শুনে
ভুলবেনা এই জাতি আর
কলম ছেড়ে সবার হাতে
এখন বাঁচার হাতিয়ার ।
...............................................................................
আলকাতরা
লুৎফর রহমান রিটন
আর কত থাকবেন মুখোশের আড়ালে ?
সাবধান ! একপাও সম্মুখে বাড়ালে
দিয়ে দেব একেবারে জমের শিক্ষা।
পাবেন না ক্ষমা আর চেয়ে প্রাণ ভিক্ষা
এইবার ছেড়ে গেলে সহ্যের মাত্রা
চন্দিতে মেখে দেবো কালো আলকাতরা ।
.................................................................................
অবাক দেশের ছড়া
-শাহজাহান হাফিজ
১,
অবাক দেশে ঊদয় হলেন আরেক হিটলার !
বিপ্লবের বাদ্যবাজে বিশ্ব তোলপাড় !
ভাই বন্ধু বলেন হেসে
দেবতা এলেন অবশেষে
নামটি তার মুখে আনে, এমন সাধ্য কার !
২,
অবাক দেশের আব্ব বলেন, সোনার মানুষ চাই !
মনের সুখে তাইতো সবে, তাইরে নাইরে গাই ।
তাইরে নাইরে গাইরে ভাই,তাইরে নাইরে গাই-
সোনার দেশে সোনার পাঠ পুড়ে হলো ছাই !
.........................................................................................
সাবধান !
শ,ম,শহীদ
সাবধান ! আর কত
বাড়াবাড়ি হুজুরের
অধিকার কাড়াকাড়ি
কৃষক আর মজুরের।
ধর্য্যের সীমা যদি
যাস বেটা ছাড়িয়ে।
মস্তটা ছিড়ে নেব
দুই হাত বাড়িয়ে।
যদিও কংকাল
হাত দিব গুড়িয়ে
নাই কারো সাধ্য
নেয় তোকে ছুড়িয়ে।
...........................................................................................
১৯৭১ এবং ১৯৮১
সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল
একাত্তরে আজিজ মিঞা রাজাকার
একাশিতে সারা শরীর তাজা তার!
চাল জমিয়ে চালেন তিনি দাবার চাল,
বলে বেড়ান এসব আমার খাবার চাল।
মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকার খিচুড়ি
স্বাধীন দেশে দিন দুপুরে কি চুরি।
কমল মিঞার সৌজন্যে শাহ অফিসার
পাইপ ফুঁকে অর্ডার করে কফি চা'র।
বুদ্ধু কমল যুগ্ধ হলো ভাষণে
বসিয়ে দিলেন সর্বোচ্চ আসনে।
সাতাশিতে আছেন তিনি কি পদে
চা'লের ভুলে দিন কাটে তার বিপদে।
...................................................................................
মীরজাফরের বাচ্ছা
সৌমিত্র দেব
সারাদিন ঝুট বলে সে
একটাও নয় সাচ্ছা
গদীর উপর বসে আছে
মীরজাফরের বাচ্ছা।
রাজা সেজে বসে আছে
অন্য দেশের দালাল
সকল কাজই করে সে
না দেখে হারাম-হালাল।
যা কিছু আজ বলো তারে
বলবে শুধু "আচ্ছা'
তারপরই তা ভুলে যাবে
মীরজাফরের বাচ্ছা।
ব্যাক্তি মালিকানায় দেয়
রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা
স্বৈরাচারর বাড় বেড়েছে
করবো শালার চোখ কানা।
.............................................................................
ভাষণ
কাজল রশীদ
চোখে জল মুখে ভাষণ
সে কি করুণ সুর,
দেশটায় আজ অকাল চলে
করবে নাকি দুর ।
ভাষণ-টাষণ যতই শুনাও
যতই নাড়াও হাত,
মোদের কিন্তু ন্যায্য দাবী
পেট ভরে চাই ভাত
...........................................................................................
* স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন পোষ্টার নামে কয়েক সংখ্যা ছড়া সংকলন বের করি ।
পুরোনো এই সংকলনের ছড়া গুলো আশা করি ব্লগারদের ভালো লাগবে। *
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।