একট হাসি, অলস দুপুর, এক ফোঁটায় জলের পুকুর।
অনেকদিন পর আজ কিছু একটা লিখতে ইচ্ছা হল
তাই পুরোনো ডাইরীটা খুঁজে বের করলাম।
ধুলো ঝেড়ে খুলে বসলাম কিছু লিখবো বলে,
কত কথা জমে আছে তোমায় বলার
কত কিছু হয়ে গেছে এর মাঝে
কত পরিবর্তন এসেছে
কত স্মৃতি জমেছে
কত স্মৃতি হারিয়ে গেছে।
জানো, সেদিন ওই বড়ই গাছটায় বসে না একটা কাক ডাকছিলো।
আমি চমকে উঠে তাকিয়েছিলাম
কি জানি অশুভ ইঙ্গিতটা,
মা হেসেছিলো আমার কথা শুনে।
আমি হয়তো একটু লজ্জাই পেয়ে গিয়েছিলাম
ফোনটা বেঁজে উঠতেই ভেবেছিলাম বাঁচা গেলো,
না হলে মা বুঝি এখনো হেসেই যেতো।
দৌড়ে এসে ধরতেই ওপাশে অমল কাকা,
ফোনের ওপাশ থেকে কাঁপা গলায় বললেন,
মা গো, তুই একটু তাড়াতাড়ি এ দিকটায় আয় তো,
তোর বাবা জানি কেমন করছে।
আমি থমকে যাই, বাবা?
মা 'র ডাকে চমক ভেঙ্গে বলি,
মা অমল কাকা ডাকছে, কি জানি কি ভুল হচ্ছে,
গিয়ে দেখে আসি? মা কোমল হেসে বললেন,
কি যে ওই হতচ্ছাড়া যন্ত্র? কেন যে লাগালো? যা।
এক ছুটে আমি বেড়িয়ে পড়ি। বাবার কাছে যখন পৌছুলাম,
তখন সবাই একটু ধাতস্থ হয়েছে সেখানে।
বাবা চলে গেছেন কাকা ফোন করার আগেই,
আমি তাকিয়ে থাকি। মা 'র হতচ্ছাড়া যন্ত্রটাই যে
সব ঝামেলার মূল, মা কে কি করে বলবো?
কি ভাবে তাকাবো মায়ের মুখের দিকে?
জানিনা কিভাবে বলেছিলাম।
এখন আর মনে পড়েনা, আমার মা
শক্ত জানতাম। কঠিন জানতাম, এত কঠিন
কখনও বুঝিনি।
তারপর কত ঝড়,, কত ঝামেলা, কত ঝক্কি,
সব এক হাতে সামলেছেন।
আর এক হাতে আগলে রেখেছেন আমায়,
কখনো তার মুখের সেই কোমলতা নষ্ট হতে দেখিনি।
কষ্টের পর কষ্ট চাপা পড়তে দেখেছি তার ভেতরে,
কখনো অস্ফুটো অভিযোগ শুনিনি। কখনোই না।
খুব খারাপ লাগতো মা 'র জন্য জানো,
খুব খারাপ লাগত, খুব মায়া লাগতো সেই মায়াবতির জন্য।
কাল যখন তিনিও আমাকে শেষ মুক্তি দিয়ে গেলে,
তখন কেন যেন কষ্ট হয়নি আমারই।
বরং এই ভেবে ভালো লাগছিলো, শেষ পর্যন্ত
তার মুক্তি মিলল।
শেষ পর্যন্ত তার এই কষ্টকর একাকিত্বের শেষ হলো।
শেষ পর্যন্ত তিনি তার ঠিকানায় পৌছুলেন।
বৃদ্ধ অমল কাকা আমার মাথায় হাত রেখে বলেছিলেন
মা 'রে একটু কাঁদ, এতো শক্ত পাথর হয়ে থাকিস নে।
একটু প্রকাশ কর নিজেকে।
সেই জন্য এত হল্লা হাটির মাঝেও
আমার সেই পুরোনো ডাইরীটা খুজে বের করা।
ঘরের সবাই খুব অদ্ভুৎ চোখে তাকাচ্ছে,
সেই ছোট্টবেলার ছোট ডাইরীটা হাতে নিয়ে আমায় বসে থাকতে দেখে।
বাবা-মা এখন সব আমাকে দেখতে হবে,
আশির্বাদ করো, যেন তোমাদের মান বজায় রাখতে পারি।
আর একটা জবাব দিতে পারো?
সবই যদি এভাবে ছেড়ে চলে যাবে,
তো আমায় এতো যত্নে এতো আগলে বড় করলে কেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।