চোখ খুবলে নেয়া অন্ধকার, স্ফুলিঙ্গ জ্বেলে দাও!
গণদাবী নিয়ে প্রতারণা বন্ধ কর! গণদাবী আদায়ে সোচ্চার হোন!
দেখা যাচ্ছে মহাজোট সরকার উল্লেখিত নীলনকশা বাস্তবায়নের পাশাপাশি জনগণের জনপ্রিয় দাবীগুলির প্রশ্নে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করেছে। কৃষক সার, ডিজেলসহ কৃষি-উপকরণের দাম কমার আশায়, শ্রমিক মজুরী বৃদ্ধির আশায়, জনগণ চাল, ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমার আশায় ভোট দিয়েছে। কিন্তু, যেখানে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানী তেলের মূল্য অর্ধেকেরও নীচে নেমে গেছে, অনেক হাঁক-ডাক দিয়ে সরকার ডিজেলের দাম কমিয়েছে লিটারে মাত্র ২টাকা। ইউরিয়া ব্যতীত যেসব সারের দামে সরকার ভর্তুকী দিচ্ছে, গত বছর কৃষকরা অত্যাধিক দামের কারণে সেসব সার ব্যবহার করেনি। ফলে আমদানিকারকদের বিপুল সার অবিক্রিত থেকে যায়।
ইতিমধ্যে এসব সারের আন্তর্জাতিক দাম প্রায় অর্ধেক হ্রাস পেয়েছে। কৃষকের নাম করে এসব সারের পেছনে ভর্তুকি দেয়ার অর্থ হলো আমদানীকারকদের উচ্চমূল্যে কেনা অবিক্রিত সার বিনা ক্ষতিতে বিক্রির ব্যবস্থা করা। অর্থাৎ, জনগণের অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে গুটিকতক সার আমদানীকারকদের ব্যবসা ও মুনাফা রক্ষার স্বার্থে। এই বক্তব্যে আরো সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যখন দেখা যায়, কৃষকের পক্ষে যে সার না হলেই চলে না, সেই ইউরিয়া (কৃষকের মোট সার ব্যবহারের প্রায় ৮০% হলো ইউরিয়া) সারে "কৃষকের দরদী" সরকার কোন ভর্তুকী দেয় নি।
১০ টাকা কেজিতে চাল দেয়ার মূলো ঝুলিয়ে ভোট আদায় করলেও, বাজার চালের দাম ২ থেকে ৭ টাকার বেশী কমেনি।
এটাও ঘটেছে কৃষকের নাম করে চালের দর পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা মজুদ ছেড়ে দেয়ার কারণে। আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসের দাম কমলেও চাল, তেল ছাড়া অধিকাংশ জিনিসেরই দাম কমেনি। অথচ বাণিজ্যমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছে, তার সরকার দ্রব্যমূল্য কমাতে ব্যবসায়ীদের উপর কোন হস্তক্ষেপ করবে না।
সরকার দাম কমাতে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিপরীতে রফতানিকারকদের সুবিধার্থে ডলারের দাম পড়তে দেয়নি। ডলারের চাহিদা ও দাম ধরে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে একদিনে এক হাজার কোটি টাকার ডলার ক্রয় করে।
এ পদক্ষেপ না নিলে ডলারের দাম আট থেকে দশ টাকা কমে যেত। আমদানী ব্যয় কমে যাওয়ায় এর সুবিধা পেত সাধারণ ক্রেতারা। এভাবে কোটি কোটি ক্রেতাদের বঞ্চিত করে গুটি কয়েক ব্যবসায়ীর স্বার্থে সরকার ডলারের দাম পড়তে দেয় নি। এই হলো সরকারের "দাম কমানো'-র আসল চেহারা।
জনগণ আরো আশা করেছিলেন দেশী-বিদেশী চরম দুর্নীতিবাজ ও দেশের সম্পদ লুটকারীদের বিচার ও শাস্তি হবে।
কিন্তু, আমরা দেখছি, ফখরুদ্দিন সরকারের ধারাবাহিকতায় বর্তমান মহাজোট সরকারও তাদের নানাভাবে পুনর্বাসন করছে।
এভাবে মহাজোট সরকার তার যাত্রা শুরু করেছে জনগণের সাথে প্রতারণার মধ্য দিয়ে। তারা ক্ষমতায় গিয়ে জনগণের জনপ্রিয় দাবীগুলিতে দেয়া তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে। এই সরকার যে জনগণের নয়, বরং অসৎ, মজুদদার, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষক ও প্রতিনিধি তা উন্মোচিত হয়ে পড়ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।