এই ব্লগের সব লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
বছর খানেক আগে এক দিন এক দোস্ত ফুনায়া কইলো -- দোস্ত, বিয়াটা তো কইরাই ফালাইলাম , এখন বৌ এর চাঁদ মুখটা দেখলেই জীবনে কেমন শান্তি শান্তি লাগে ... তোর বউ নাই, জীবনটা এক্কেরে পাইনস্যা কইরা ফালাইসস , জলদি বিয়া কর ...
আমি তারে কইছিলাম -- ধীরে বন্ধু , কয়টা বছর যাক এর পরে বলিস আমারেএই কথা ...
শেষ পর্যন্ত বছর না, কয়েক মাস পরেই সেদিন আমারে ফুনাইয়া কইলো -- দোস্ত এমুন হবে তা তো আগে ভাবিনাই ...
আমি আসকাইলাম -- কেন, কি হইসে ?
দোস্ত কইলো -- হানিমুনে গেছিলাম সমুদ্র সৈকতে, সারা রাত জাগনার পরে সকালে যখন ঘুমাইসি আম্মা ফোন করে বলে কিরে এমন সময় ঘুমাস ক্যান , আমি কইসি আম্মা সারা রাইত ঘুমাই নাই, এখন একটু ঘুমাই পরে কল ব্যাক কর্তাছি .... এই কথা শুইনা আম্মা আবার ফোন দিসে ওর সেলে ... এর পরে কইলো বৌ মা পোলাডা ঠিকমতো ঘুমাইতে পারে নাই সারা রাইত, তুমি কি একটু খেয়াল রাখতে পারো নাই ? এখন থেকে ওর দিকে সবসময় খেয়াল রাখবা ... এই কথা শুনার পরে বৌ এর মুখ দেইখা বুঝতারিনাই সে হাসে না কান্দে ...
আমি কইলাম -- আর কি হইসে?
দোস্ত কইলো -- বৌ আমার মুরগী ফ্রিজ থেকে বের করে রাখসিলো রোষ্ট করবে বলে, কাজের থেকে আসার পরে দেখে আম্মা সেইটা লাউ দিয়া রান্না কইরা ফালাইসে ... আমি ও একসাথে ঢুকসিলাম ঘরে, ঐ মুহুর্তে ওর চেহারা দেইখা বুঝতে পারতেসিলাম না ও কানবো নাকি হাসবো
আমি কইলাম -- বিয়ার আগে যার প্রতিটা ম্যুভমেন্টে তুই সব বুইঝা ফালাইতি আজকাল এমন হইতেসে ক্যান ?
দোস্ত কইলো --- বুঝতাসি না রে, ঘটনা কোনখানে প্যাচ খাইতেসে ... সেইদিন তারে রান্নায় সাহায্য করতে গিয়া তরকারিটা মোটামুটি পুড়ায়া ফেলছিলাম, বিয়ার আগে হইলে তো সে এমন অবস্হায় কইতো - থাক যা হওয়ার হইছে, আরেকবার রান্না করুম নে, এখন দেখি কয় এইটা পুড়াইসো নিজে নিজে আবার রান্না করো ... তখনো তার চেহারা দেইখা বুঝি নাই সে রাগ কইরা কইলো নাকি ফান করলো
আমি কইলাম -- জটিল অবস্হা দেখি তোর , তা - শুনছি বিয়া করলে নাকি মানুষের ওজন বাড়ে , তোর কি অবস্হা ?
বন্ধু কইলো --- আর কইস না সেই দুঃখের কথা ..... কয়দিন আগে আমরা একলা আছিলাম বাসায়, আব্বা আম্মা গেছিলো গ্রামের বাড়ীতে ...ছুটির দিন আছিলো, তাই দুইদিন দুই জনে মিল্যা খালি রান্না করলাম, খাইলাম, টিভি দেখলাম আর ঘুমাইলাম ...২ দিন পরে বৌ আমারে কইলো তুমি যেমনে খাইতাসো আর ঘুমাইতাসো আম্মা গ্রামের বাড়ী থেকে আইসা তো দেখবো তুমি আর তার পোলা নাই একখান বাচ্চা হাতি হইয়া গেছ ... একটু এক্সারসাইজ করো ... আমি ভাবলাম কথা মন্দ না, আম্মা আসার পরে তারে বুঝাইতে ঝামেলা হইবো ক্যান ওজন বাড়ছে সেই সাথে তার ইন্টারভিউ এর প্রশ্নের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে কি কি খাইসি কতটুকু খাইসি, তেল বেশী খাইসি কি না .... এর চেয়ে ওয়ার্ক আউট করি ... ওয়ার্ক আউট করার আগে ভাবলাম নিজের ওজনটা একটু মেপে নিলে ভাল হয় ... খাটের নিচে থেকে ওজন মেশিনটা বাইর করে ওর উপরে যখন উঠলাম বৌ এর চেহারা দেইখা বুঝতাছিলাম না ও হাসে না কান্দে ....
আমি কইলাম -- ক্যান ?
ও কইলো --- আমি নাকি কয়েক দিন আগে মাপছিলাম আমার ওজন, তখন আছিলাম ৭৬ কিলো আর ঐ সময় মেশিনে কয় আমার ওজন নাকি ৭২ কিলো ...
আমি কই -- হয় তোর মেশিন খারাপ নাইলে ভাবীর চোখ খারাপ হয়ে গেছে ঠিকমতো দেখতারে নাই কত ওজন হইসে ... সারাদিন বাসায় কি হিন্দি চ্যানেল দেখে নাকি ?
বন্ধু কইলো -- যতক্ষন বাসায় থাকে ততক্ষন তো একটানা টিভি (এর পরে একটু চুপ করে বলে ) ... দোস্ত রাখি রে এখন ...
আমি আসকাইলাম --- আবার কি তার চেহারা দেইখা কনফিউজড হইসোস নাকি যে সে কান্দে না হাসে ?
দোস্ত কইলো -- না মানে ... আজকের মতো রাখি রে ...
আমি হাসতে হাসতে কইলাম --- ভাবী কি সামনে দাড়ায়ে আছে নাকি শুনতেসে সবকিছু .... তাইলে তো আইজকা নিশ্চিত তোর কপালে মাইর আছে ...
দোস্ত কইলো --- দোস্ত .....
সেই মুহুর্তে ফোনে শুনলাম ভাবীর গলা -- ঠিকই বলেছ অনন্ত, ভালো থেক
এর পরে একসাথে দুটো ফোন রাখার কড়কড় শব্দ পেয়ে আমিই কনফিউজড হয়ে চিন্তা করতে শুরু করলাম ... কাহিনীটা ঠিক কোন যায়গাতে প্যাচ খাইলো ?
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।