যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরানী প্রকাশ্য পথে হত্যার প্রতিশোধ চায়না আমি তাদের ঘৃণা করি
বিদেশে কর্মরতদের পাঠানো রেমিট্যান্স, গার্মেন্টস, রপ্তানিআয়, সফট ওয়্যর এক্সপোর্ট,
তথা দেশের আয়-উন্নতির শিখরে অবস্থান করা সেক্টর এবং সেই সেক্টরগুলোর কর্মী বা শ্রমিকদের সম্পর্কে আমাদের নাগরিকদের কিছু মোটাদাগের উক্তি এরকমঃ-
# হালার এই আদমগুলা বিদেশে গিয়া এমন সব কান্ড করে যে দেশের মান-ইজ্জত নিয়া টানাটানি > আম নাগরিক।
# এই হতচ্ছাড়া গার্মেন্টস এসে থেকে গ্রামের ছেমড়িগুলার এমন তেল হইছে যে হাজার টাকায়ও কাজের বুয়া পাওয়া যায়না > শরীরের মাঝ বরাবর অতিরিক্ত মাংসের ভারে ফুলে ওঠা হাউস ওয়াইফ।
# আইজকা গার্মেন্টস উইঠ্যা যাক কালই দেহা যাইব এই মাগীগুলা বেশ্যাখাতায় নাম লেহাইছে > অধূনা টাকাঅলা সুনাগরিক।
# আমরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে "মাত্র সত্তর-আশি হাজার" টাকা মাসিক বেতনে দেশের টোটাল বাজেটের ফিফটিথ্রী পার্সেন্ট আয় করে দিচ্ছি, বাট আমাদের কোন ভ্যালু দিচ্ছে না গভর্নমেন্ট! এই সব স্টুপিড ওয়ার্কিং ক্লাসদের সমস্যা হলো, এদের কিছুতেই পেট ভরেনা! সব হাভাতের দল! চাবকে পিঠের ছাল তুলে দেওয়া দরকার > নব্য সি ই ক্লাস, মেইড বাই গার্মেন্টস বাইপ্রডাক্ট।
# কিরিবাতি কিংবা ভানুতুয়াতে অদক্ষ শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ আছে কিনা খতিয়ে দেখার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধি দল পাঠানোর ব্যাপারে সক্রিয় বিবেচনা আছে > মহামহিম সরকার!
_____________________________________________
আমাদের দেশের আর দশটি সেক্টরের মত নয় গার্মেন্ট সেক্টর।
এদের ঠিক বাংলাদেশের পরাবাস্তবতায় নুন আনতে পান্তা ফুরোয় না। এই কারখানার মালিকরা হা-ভাতে বা অশিক্ষিতও নন। এটা কোনো কুটির শিল্পও নয়। এটা দেশের প্রধান রপ্তানি আয়ের উৎস. অন্তত সেরকমটিই বলে থাকেন এই কারখানা সংশ্লিষ্ট লোকজন।
এই কারখানাগুলোর পেছনে রাষ্ট্রের কি নেই? রাষ্ট্রের পুলিশ কোথাও মানব সেবায় বা মানব উপকারে যাওয়ার সময় না পেলেও গার্মেন্ট কারখানায় ডাকা মাত্র যাওয়ার নির্দেশে আছে।
সন্ত্রাসীরা কোথাও ম্যাসাকার ঘটাচ্ছে জেনেও সেখানে কত দেরী করে যাওয়া যায় সেই ইতিহাস তো পুরোনো, কিন্তু গার্মেন্ট সেক্টরে শ্রমিক অসন্তোষ দমনের জন্য পুলিশ ত্বরিত বেগে হাজির হয়! আন্দোলনরত শ্রমিকদের ঠেঙ্গিয়ে পেঁদিয়ে তারা মালিকের স্বার্থ রক্ষা করে। যে স্বার্থের সাথে নাকি সরকার-দেশ এবং জাতিও জড়িত! তা বাদে আছে র্যাব। তাদেরও এখানে নিয়োজিত করা হয়। তারাও তাদের খুনে ভাবমূর্তি নিয়ে হা হা করে হাজির হয়।
সরকারের অন্যত্র গোয়েন্দা নজরদারীর কী হাল সে তো বিডিআর ম্যাসাকারেই প্রমান হয়েছে।
অর্থাৎ গোয়েন্দা নজরদারী ব্যাপারটা বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো! কিন্তু এই গার্মেন্ট সেক্টরে গোয়েন্দারা রাতদিন গোয়েন্দাগিরি করে চলেছেন। রিপোর্টের পর রিপোর্ট পেশ করে চলেছেন। তারও পরে আছে সরকারের অন্যান্য বাহিনী। সবারই প্রধান লক্ষ্য এই সোনার ডিম পাড়া হাঁসটিকে (গার্মেন্ট সেক্টরকে) যে কোন মূল্যে বাঁচিয়ে রাখতে হবে! এবং তারও পরে আছে মালিকদের নিজস্ব পেটোয়া বাহিনী। এই বাহিনী পিটিয়ে, ঠেঙ্গিয়ে শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার নিকেশ করে ছাড়ে।
এদের ত্বরিত এ্যাকশনে অগুনতি শ্রমিক পঙ্গু অথবা শয্যাশায়ী হতে বাধ্য হয়। এতকিছুর পরও যদি চান্দে চান্দে, প্রহরে প্রহরে শুনতে হয়---একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গার্মেন্ট কারখানাগুলো! আর এই বন্ধের পেছনে সব চেয়ে বড় ক্রিমিনাল করা হচ্ছে শ্রমিকদের আন্দোলনকে, এবং সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজীকে! এই বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনে আর যে কারণগুলি আছে সে বিষয়ে হাল্কা ছুঁয়ে প্রায় সব দোষই চাপানো হচ্ছে চাঁদাবাজ আর শ্রমিক অসন্তোষের উপরে। কিন্তু এটা যে শেষ পর্যন্ত কোন শিল্প না, এটা যে কেবলই ‘দর্জির দোকান’ এই কথাটিও এর মালিকশ্রেণী মানতে রাজি নন।
বলা হচ্ছে- হুমকি ও অর্থনৈতিক চাপ সইতে না পেরে অনেক গার্মেন্টস মালিক অফিস করছেন না। একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গার্মেন্টস কারখানা।
রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস মেনুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) সূত্রে জানা গেছে, প্রায় প্রতিদিনই বন্ধ হছে দু/একটি গার্মেন্টস কারখানা। গার্মেন্টস মালিকরা অভিযোগ করে বলেছেন, চাঁদা দাবিকারী সন্ত্রাসীদের অনেকের বিরদ্ধে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। টেলিফোন ছাড়া সশরীরে হাজির হয়েও গার্মেন্টস মালিকদের কাছে চাঁদা চাইছে তারা। ঘটছে খুনের ঘটনা। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ-এর প্রতি মাসের পরিচালনা পর্ষদের সভায় অসহায় গার্মেন্টস মালিকরা তুলে ধরেছেন ভয়াবহ চিত্র।
অন্তত ৩০ জন গার্মেন্টস মালিক সরাসরি অভিযোগ করেছেন, টেলিফোনে তাদের কাছে চাঁদা চাওয়া হছে। বেশ কিছু মালিক ভয়ে কারখানায় আসতে পারছেন না। বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিলে ২৩টি অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মজুরি সংক্রান্ত অসন্তোষের সংখ্যা ১৩টি। গত বছর এপ্রিলে হয়েছিল ২১টি ঘটনা।
এর মধ্যে মজুরি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ৭টি।
দেখুন। এখানে বলা হচ্ছে প্রথমতঃ বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব। দ্বিতীয়ত বলা হচ্ছে সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজীর হুমকি, আর তৃতীয়ত বলা হচ্ছে শ্রমিকদের অসন্তোষ। এই তিনটি উপসর্গের কথা তারা (গার্মেন্ট মালিকরা) সেই সূচনা লগ্ন থেকেই বলে আসছে।
মাঝে গত জোট সরকারের আমলে এবং দুবছরের ত্বত্তাবধায়ক সরকারের আমলেও তারা এই তিন ‘শত্রু "কে টার্গেট করে বিবৃতি দিয়ে আসছিলেন। সে সময় এমনকি তারা সকল গার্মেন্ট কারখানা প্রতিবাদস্বরূপ বন্ধ করে রাখারও হুমকি দিয়েছিলেন। সেই হুমকির পর পরই সরকার শ্রমিক অসন্তোষ আর চাঁদাবাজী দমনে সর্বশক্তি নিয়োগও করেছিল। এখন আবারো মালিকরা সরকারকে সরকারের সব দায়িত্ব ফেলে সকল শক্তি এই সেক্টরে নিয়োজিত করার দাবি তুলেছেন। তার মানে সরকার-দেশ গোল্লায় যাক, শুধু গার্মেন্ট সেক্টর যেন টিকে থাকে! এটা টিকে থাকলেই যেন দেশে দুধের নহর আর ক্ষীরের সরবর বয়ে যাবে! আজব ব্যাপার হচ্ছে সকল সরকারই আবার এই সেক্টরকে বাঁচানোর জন্য তাদের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ফেলে এই সেক্টরেই শক্তি প্রয়োগ করে প্রমান করে তারা গার্মেন্ট সেক্টরকে রক্ষা করতে কত তৎপর! হায়! ঠিক এতটুকু গুরুত্ব যদি পাট সেক্টর পেত, অথবা চামড়া, কিংবা কুটির শিল্প পেত! আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সারা দেশে যে আরো কত কত সেক্টর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিনরাত তেল-মবিল দিয়ে অর্থনীতির চাকাকে চালু রেখেছে, তা যদি সরকারের নীতিনির্ধারকরা একটু আমলে নিতেন, তাহলে দেশে আজ শিল্পের নামে দর্জির দোকানের উপর এভাবে আদাজল খেয়ে নির্ভর করতে হতো না।
উপরে যে প্রধান তিনটি কারণের কথা বলা হলো, বা প্রধান তিন ক্রিমিনালের পরিচয় দেওয়া হলো তা বাদে আর কী কী কারণ আছে এই সেক্টরটির বন্ধ হতে চাওয়া বা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলার পেছনে? আসুন সংক্ষেপে দেখে নেওয়া যাক।
১.নিজস্ব তুলা উৎপাদন না থাকায় সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর সূতো এবং আমদানি নির্ভর অন্যান্য উপকরণের কারণে এরা বির্হিবিশ্বের মুক্তবাজারের সাথে প্রতিযোগীতায় টিকতে পারছে না।
২. প্রতিযোগীতায় হারছে যাদের কাছে, তাদের প্রায় সব উপকরণই নিজস্ব।
৩. প্রতিযোগীতায় হেরে দিনের পর দিন সিএম(মজুরী) কমাতে কমাতে শ্রমিকদের মানবেতর পর্যায়ে নিয়ে যাবার কারণে শ্রমিক অসন্তোষ অবধারিত হয়ে উঠছে।
৪. সিএম কমে গেলে মালিকের লোকসান,এই সত্যটি উল্টে দিয়ে তারা লোকসানের দায় চাপান শ্রমিকদের উপর।
এবং শ্রমিকদের মজুরী কমিয়ে দেন অথবা শ্রমিক ছাঁটাই করেন। কিন্তু কিছুতেই নিজেদের লোকসান মেনে নেন না।
৫.ব্যাংক-বীমা সহ সরকারের যে ডজন ডজন অধিদপ্তর উপদপ্তর আর অনুদপ্তর আছে যারা এই সেক্টরকে সরকারী সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে থাকে তাদের জোঁকের মত রক্ত শুষে খাওয়ার শেষ নেই। তারা এই সেক্টর থেকে যে পরিমানে অবৈধ আয় করেন যার কোন নজির গোটা বিশ্বে নেই। এদের প্রধান পান্ডা কাস্টমস।
এই কাস্টমসের হার্মাদীয় লুটপাটের ফলে গার্মেন্ট সেক্টরকে দাঁতমুখ খিঁচে নিজেদের আয় করা টাকার ‘অফিশিয়াল চাঁদাবাজী’ মেনে নিতে হয়। এই অফিশিয়াল চাঁদাবাজীর মোট অংক কোন ভাবেই সারা বছরের সন্তাসীদের চাঁদাবাজী আর শ্রমিক অসন্তোষের চেয়ে কম নয়। চট্টগ্রাম, ঢাকা,বেনাপোল, এই প্রধান তিনটি বন্দরের একজন কাস্টম অফিসারের মাসিক আয় প্রায় ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা! বন্দরের অন্যান্য খুঁচরো কর্মচারিদের আয়ও মাসে প্রায় লাখ টাকা! এই টাকার একটা নিশ্চিত অংশ হাঁটতে হাঁটতে একেবারে ‘উপরে’ চলে আসে। সুতরাং উপর খুশি তো সব খুশি! মোদ্দাকথা এই সোনার ডিম পাড়া সেক্টর থেকে সরকারি-বেসরকারি সেবা সংস্থা এবং অন্যান্য ডজন ডজন দপ্তর মাসে মাসে ফুলে ফেঁপে ওঠে বলেই এই সেক্টরকে বাঁচানোর জন্য তাদের এই পরিমানের গরজ।
৬. আমদানি ছাড়াও অভ্যন্তরীন ক্ষেত্রে এক একজন কাস্টম কর্মকর্তা শুধুমাত্র ইনটুবন্ড এর খাত থেকে মাসে প্রায় দেড়লাখ টাকা শুষে নেয়।
ফ্যাক্টরি ভিজিটের নামে, বন্ডেড ওয়্যার হাউস লাইসেন্স নবায়নের নামে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইপি(ইম্পোর্ট পারমিশন সার্টিফিকেট), ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইপি, ফায়ার সার্টিফিকেট, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, শ্রম অধিদপ্তরের ছাড়পত্র সহ হাজারো অফিস এবং হাজারো খাতককে সন্তুষ্ট করতে হয় এই গার্মেন্ট সেক্টরকে। সবাইকে সব কিছু দিয়ে থুয়ে যেটুকু বাঁচে তাই দিয়েই শ্রমিক বেতন দিতে হয়। তার আগে নিজেদের রাজকীয় খায়-খচ্চা মেটাতে একটা মোটা অংকের টাকা ডানে রাখতে হয়। অন্য সেক্টরের কারখানায় ক্যাপিটাল ট্রান্সফার করতে হয়। বিদেশে মানি লন্ডারিং করতে হয়।
হংকং-সিঙ্গাপুরে বিলাসবহুল ট্যুর দিতে হয়, আমেরিকা-ইয়োরোপে প্রমোদ সফর দিতে হয়, মেলায় অংশ নেয়ার নামে আদম পাচার, দামি হোটেলে থাকা, এমন আরো শত শত আইটেম আছে যা মেনটেইন করতে হয়।
এই সকল কিছুকে বাইপাস করে তারা দেখা যাচ্ছে কেবলই তিন শত্রুকে ঘায়েল করার জন্য সরকারের কাছে হত্যে দিয়ে পড়ছে। আবার সরকারকে ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দিচ্ছে! অদ্ভুত দাবির বহর এদের!
পত্রিকার খবরে দেখা যাচ্ছে এরা বলছেন এখন নাকি কোন কোন সন্ত্রাসী শ্রমিকদের ক্ষেপিয়ে তুলছে!
মহামন্দার কারণে গার্মেন্টস খাত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এরপর চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কারখানায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হলে দেশের রপ্তানি আয়ের বড় খাতে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসবে। প্রায় প্রতিদিনই এক থেকে দুটি কারখানা বন্ধ হয়ে যাছে।
গত মাসে ৩৫টি কারখানার বেতন-ভাতা দেয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না।
গত ৪ মাসে ফতুল্লা ও সাভারে ৬৯টি কারখানায় বিভিন্ন কারণে অসন্তোষ হয়েছে। ১৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছে এবং ৩৫টি গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দা ও অন্যান্য কারণে এখন সামান্য উস্কানিতেই শ্রমিকদের ক্ষেপিয়ে তোলা যায়। অসন্তোষ ঘটিয়ে ফায়দা লুটতে চাইছে অনেকেই।
অর্থাৎ আরো একটি ক্রিমিনাল পাওয়া গেল! তাহলে এখন কি হবে? সরকার কি কেবল এই তিন বা চার ক্রিমিনালদের সায়েস্তা করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করবে? মালিকরা কি সরকারের “ব্যবস্থা” নেওয়ায় সন্তুষ্ট না হয়ে নিজেদের পেটোয়া বাহিনী দিয়ে উনিশ শতকের সেই দাস ব্যবসার পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনবেন? নাকি সমস্যার গভীরে যেয়ে সমস্যার আসল কারণগুলো খুঁজে বের করে তার সমাধান করবেন? আমরা কিছুই আন্দাজ করতে পারিনা। শুধু এতটুকু জানি, মারার জন্য কল্পিত শত্রু খুঁজে খুঁজে এক সময় তাদের না পেয় সামনে আহম্মকের মত দাঁড়িয়ে থাকা শ্রমিককেই পাওয়া যাবে, এবং তাদের উপরেই সকল প্রকার ঝাল মেটানো হবে। এটাই হয়ে আসছে গত ২৭/২৮ বছর ধরে। আর কত? যে দরিদ্র ছেলেটি এক অক্ষর বিদ্যাবুদ্ধি না পেয়েও বিদেশ থেকে রক্ত পানি করে ডলার পাঠাচ্ছে, যে নারীরা ঘরে বসে হাজারো ছোট ছোট কুটির শিল্প গড়ে তুলে অর্থনীতির মূল হুইলে শক্তি যোগাচ্ছে, যে ক্ষেত মজুর ঠা ঠা রোদে পুড়ে আমাদের অন্ন উৎপাদন করে চলেছে, যে রিকসাচালক শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে প্যাডেল মেরে হাজার হাজার গ্যালন পেট্রল বাচিয়ে দিচ্ছে, যে হাতকলের হ্যান্ডেলে নারীদের নরম হাতগুলো কড়া ফেলে যাতা ঘুরিয়ে সমাজের চাকা সচল রেখেছে, যে কচি কচি শিশুরা তাদের জন্মসূত্রে পাওয়া শৈশবকে অবহেলায় দূরে ঠেলে ঘাম আর রক্তের হোলি খেলায় ক্রীড়ানক হয়েছে, তারা কি কোন প্রটেকশন পেতে পারে না? তারা কি দেশের অর্থনীতিতে কোনই ভূমিকা রাখছে না? ভ্রান্তিতে স্বর্গারোহন আর কতদিন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।