মানুষ যা কল্পনা করতে পারে, তা সে অর্জন করেত পারে।
বছর কুড়ি আগেও এই শহরের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর বাড়ির উঠোনে আম, কাঠাল, পেয়ারা, কুল…. কত রকম ফল-ফলাদির বৃক্ষ শোভা পেত! ভোরে ঘুম ভংতো চেনা-অচেনা অসংখ্য পাখির কিচির-মিচিরে। সারাদিন চলতো সেই কিচির-মিচির… সন্ধে হলে তা বেড়ে যেত কয়েকগুন। বেশ ক`বছর হয়ে এলো, এই শহরে পাখির ডাক শোনা এখন বিঢ়ল ঘটনা। পাখি দেখতে এখন আমাদের যেতে হয় পাখি মেলায়! খাল-বিলের যা অবস্থা, তাতে পাখিপাখি মেলার আয়োজনও আর বেশিদিন করা যাবে বলে মনে হয় না।
প্রিয় শহর ঢাকা আজ মরুভূমির চেয়েও বেশি উত্তপ্ত…। যারা এসি গাড়িতে চলেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রীত অফিসে বসে কাজ করেন, এ লুহাওয়া তাদের হয়ত স্পর্শ করে না, কিন্তু আমরা যারা সাধারন জীবন যাপন করি, পাবলিক বাসে যাতায়াত করি, আমাদের প্রতি মূহুর্তে উপলব্ধি করতে হচ্ছে প্রিয় শহর ঢাকা আর মাত্র কবছরেই পুরোপুরি ধ্বংস হতে চলেছে।
লক্ষ-লক্ষ গাড়ির ইঞ্জিনের উত্তপ্ত গরম হাওয়া, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক-বিমা, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, হোটেল-রেস্টুরেন্ট সহ প্রতিটি গৃহে প্রতিনিয়ত চলছে অসংখ্য প্রযুক্তির ডামাডোল। এসব থেকে নির্গত কাবর্ন-ডাই-অক্সাইড শুষে নেয়ার মত পযার্প্ত থাকাতো দূরে থাক, তার দশ ভাগের এক ভাগওনেই। ফলে শহরের বাতাস এখন ওয়েদারের চেয়ে অনেক বেশি উত্তপ্ত ও বিষাক্ত।
অন্যদিকে আমাদের বাসস্থানের ব্যাবস্থা করতে গিয়ে হৃদয়বান রিয়েল স্টেট ব্যাবসায়ীরা খুঁজে-খুঁজে শহরের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা অবশিষ্ট দু একটি গাছও কেটে সাফ করে ফেলেছেন মহামান্য রাজউকের অনুমতি নিয়েই! পরিকল্পণাহীন উন্নয়ণ কাজের জন্য দেধার্ছে কাটা হচ্ছে বৃক্ষ। কাবর্ন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে বিশুদ্ধ বাতাসের এক মাত্র পরিবেশক বৃক্ষকে আমরা এই শহরে প্রায় বিলুপ্ত করতে চলেছি। শহরের মাইলের পর মাইল রাজপথ যেন উত্তপ্ত গরম কড়াই! ক্লান্ত পথিকের বিশ্রমের জন্য এক টুকরো শীতল ছায়ার আয়োজন নেই কোথাও। প্রচন্ড তাবদাহে অসুস্থ হচ্ছে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। যে শহরটির সূচনা হয়েছিল বুড়িগঙ্গার কোল ঘেষে মাতাল হাওয়ার দোলে, আজ তা কঙ্ক্রিটের জঞ্জালে ভরা উত্তপ্ত বিষাক্ত বাতাসের এক যন্ত্রনাভূমি।
এ যেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে ধ্বংষ প্রয় এক নগরি! কিছুইকি করার নেই আমাদের…???
এদেশের সরকারের কাছে কোন মহৎ উদ্দোগ প্রত্যাশা করাটা বোকমি না হয়ে ভাঁঢ়ামিও হয়ে যেতে পারে! তাই আসুন সকলে মিলে একটি নাগরীক উদ্দোগ গ্রহণ করি। পুরো ঢাকাকে কমপক্ষে হাজার পাচেক কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়াসহ দ্রুতবর্ধনশীল বৃহদাকর বৃক্ষ রাজিতে সুশোভিত করে তুলি। রাজপথের প্রতিটি ফুটপাথের এক ফিট পরিমান মাটি ভরাট করে উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের পরামর্শ অনুজায়ী মাঝাড়ি আকারের বৃক্ষের বেস্টনি গরে তুলি। আইল্যান্ডগুলি নীম গাছে ঢেকে দিই। প্রতিটি অফিস, বাড়ির ছাদ, রুম এবং ঝুলবারান্দা ছোট ও মাঝাড়ি আকারের গাছ দিয়ে ঢেলে সাজাই।
এতে প্রিয় শহর ঢাকা কিছুটা হলেও প্রাণ ফিরে পাবে। আমরা পাবো সস্থি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।