::::: দেখবো এবার জগতটাকে :::::
ফেসবুকে একটা ইভেন্টের দাওয়াত পেলাম বাংলাদেশ সাইকেল ভ্রমণকারী ওরফে তার ছাড়া সাঈদ ভাইএর কাছ থেকে (এই লোক বাইসাইকেলে বাংলাদেশের ৬৪টা জেলা ঘুরে দেখা শেষ করে বর্তমানে সবগুলো উপজেলা ট্যুরের প্ল্যান করতেছে। সবাই বলে মানুষের তার ছিড়া থাকে, কিন্তু ইনি তার ছাড়া)। ফটোগ্রাফিক একজিবিশান। যাবার ইচ্ছে ছিল না তাই ডিক্লাইন করছিলাম। সাঈদ ভাই ক্রমাগত বলছিলেন কিছুদিন ধরে গিয়া দেখে আসতে, আগ্রহ পাই নাই।
গতকাল সন্ধ্যায় ছবির হাটে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সাঈদ ভাই ফোন করে জানালো উনি জয়নুল গ্যালারীতে। বাধ্যহয়েই গেলাম। জয়নুল গ্যালারীর গেটে সাঈদ ভাই আর ফটোগ্রাফার বসে ছিলেন। নাম নুর আলম অর্ণব।
ভদ্রলোকের সাথে কথা হলো। হাসিখুশি লোক। ভিতরে ম্লান আলো একজিবিশানে যেমন হয়। কিন্তু ভিতরের ছবিগুলো দেখে স্তব্ধ হয়ে গেলাম।
থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুব ছিল।
জানতাম বাচ্চাদের অসুখ এটা। ব্লাড ক্যান্সারের মতো। আমাদের দেশে কি ভয়াবহ মাত্রায় হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ ফুল ফোটার আগে অঙ্কুরে ঝরে যাচ্ছে তার একটা বড় ডকুমেন্টারী সেটা। থালাসেলমিয়া বংশগত রোগ। বাবা-মা সম্পুর্ন সুস্থ কিন্তু তাদের জীন থেকে বাচ্চাদের শরীরে মৃত্যু বাসা বাধে।
একটু সচেতনতা বিয়ের আগে কিছু পরীক্ষা এই ভয়ঙ্কর ভবিষ্যত থেকে তাদের দূরে রাখতে পারে। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুর দেহে নতুন ব্লাড সেল জন্মাতে পারে না। প্রতিমাসে দু০ব্যাগ রক্ত নিতে হয়। আর ইনজেকশান। প্রচন্ড ব্যায়বহুল।
অনেক পরিবারই একসময় নিঃস্ব হয়ে হাল ছেড়ে দেয়। চোখের সামনে সন্তানকে মরে বাঁচার সুযোগ করে দেয়।
প্রতিটা ছবির নিচে টাইটেলগুলো প্রচন্ড মর্মান্তিক। এক মা মফস্বল থেকে তার বাচ্চা ছেলেকে নিয়ে প্রতি মাসে ঢাকায় আসে। ছোট্ট শিশুটার জন্যে প্রতিমাসে ঢাকায় আসা মানসিক চাপ।
মাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখতো হারিয়ে যাবার ভয়ে। আজকে সেই বাচ্চাটা চিরতরে হারিয়ে গেছে।
"when i brought shabjal to dhaka from manikganj for his treatment, he didn’t want to let go of my hands because he was afraid of getting lost. my sweetheart is lost forever … now wherever i go i carry this picture. i feel he is with me."
shahida begum, shabjal's mother
shabjal died of thalassaemia
on shraban 7, 1414
at the age of 14
“what didn’t i do for my lovely daughter to be cured! i tried with several specialist doctors. even took refuge to pir-fakirs. but i know this disease is not to be cured. at last i left her fate on the hands of allah.”
anjuman ara khan, anika’s mother
anika, age 9
affected by beta major thalassaemia
mohammadpur, dhaka
“sometimes i get very angry when i see the number of patients affected by this disease increasing very rapidly throughout the country. but the government and media are paying no attention to this. only giving speeches and participating in seminars on thalassaemia day and forgetting about it the next day.”
shamsun nahar, shampurna’s mother
shampurna, age 2
affected by e-beta thalassaemia
goran, dhaka
ইডেন কলেজে পড়ুয়া একছাত্রির ঘর। অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়তো। পড়ার বইয়ের পাশে হুমায়ুন আহমেদ, জাফর ইকবালের গাদা করা বই।
বইগুলো সরিয়ে ফেলতে পারছে না বাবা মা।
ওরা দুই ভাই একসাথে খেলে এক সাথে ঘুরে। ওরা দুজন নিজেরাই নিজেদের বন্ধু। দুজনেই থ্যালাসেমিয়াতে আক্রান্ত।
দিবা নামের একটা ছোট্ট মেয়ে মৃত্যুর প্রস্তুতী নিচ্ছে।
তার খাতায় রঙ বেড়ঙ্গের ছবি। ছোট্ট একটা মেয়ে কাদছে। খাতায় লেখা রোল নাম্বার শুন্য।
ছেলেটা তার মৃত্যুর আগে শেষ জন্মদিনটা ঘটা করে পালন করতে চেয়েছিল। সব আত্মীয় স্বজনরা জমায়েত ছিল।
সবাই জানতো ওর শেষ জন্মদিন। কিন্তু উৎসবটা হয়নি ,ও অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।
বোনটা ভাইয়ের খুব প্রিয় ছিল। দুজনে গান শিখতো। বোনটা হারমোনিয়াম বাজাতো।
আর ছোট ভাই তবলা। আজ হারমোনিয়ামটা শুন্য পড়ে আছে।
থাক আর বলতে ইচ্ছে হচ্ছেনা। প্রচন্ড ভাবে আবেগে ধাক্কা মারে। যারা দেখেননি, তারা জয়নুল গ্যালারীতে গিয়ে দেখে আসতে পারেন।
১৬তারিখে শুরু হয়েছিল ২২তারিখে শেষ হবে। প্রতিদিন বেলা ৫টা থেকে রাত ৮টা। যারা দেখেননি, অনুরোধ করবো যেন অবশ্যই দেখেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।