আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যৌন নির্যাতন

কিছুই বলার নেই।

বাংলাদেশের মহামন্য হাইকোর্ট যৌন নির্যাতন বিষয়ে ঐতিহাসিক রায় প্রদান করেছেন। তবে আইন দিয়ে যে সব নির্যাতন বন্ধ করা যায় না তা হলফ করেই বলা যায়। এবিষয়ে আমি আমি একটি ব্যক্তিগত অভিঞ্জতা শেয়ার করতে চায়। বছরখানেক আগের ঘটনা।

আমি তখন সিলেট হতে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে বদলী হয়েছি। পরিবার তখনো সিলেটে থাকে। সপ্তাহের শুরুর দিন, রবিবার, সিলেট হতে সকাল সকাল আসি, চার রাত হোটেলে থাকি, বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট চলে যায়। একদিন এমনি সকাল বেলা বাসে সিলেট হতে আসছি,আমি বসেছি ভিতর দিকের সিটে। জানালার দিকের সিটে বসেছে এক যুবক।

সামনের দু'সিটে দুজন মহিলা বসেছে। সকালের বাস। ভোর রাতে উঠতে হয়েছে। বাসে উঠেই ঝিমানোর মত এসেছে। বেশ কিছু দুর আসার পর একটু চোখ খুলতেই দেখলাম আমার পাশে জানালার দিকে বসা যুবক সিটের পাশ দিয়ে সামনের যুবতিকে স্পর্শ করার চেষ্টা করছে।

সময় যত গড়াতে লাগলো যুবকের কর্মকান্ড ততই বোল্ড হচ্ছে। যুবকের বোল্ডনেস দেখে আমার এক সময় মনে হলো এই যৌন কর্মকান্ডে মনে হয় মেয়েটির ও একরকম সম্মতি আছে। কারণ একসময় ছেলেটি তার হাত এ পরিমান সামনে প্রশস্ত করেছে যে আমি নিশ্চিত সে মেয়েটির ব্রেষ্ট স্পর্শ করছে। এরকম আনেক ক্ষন চলার পর হঠাৎ ঝিমানো চোটে গেল সামনের মেয়েটির হইচইতে। মেয়েটি পায়ের জুতা হাতে নিয়ে বলছে, বদমাস আনেক সহ্য করেছি।

জুতা দিয়ে গাল ভেঙ্গে দেব। নিজের ঘরে মা বোন নেই? কিন্তু অবাক বিষ্ময়ে দেখলাম যুবকটি নুন্যতম লজ্জা পাবার পরিবর্তে উল্টো মেয়েটির উপরই চোটপাট দেখাতে লাগলো, বলতে লাগলো মেয়েটির চরিত্র খারাপ। তাকে অপমান করার প্রতিশোধ নেবে,তাকে মৌলভীবাজার ষ্টেশন আসলে উঠিয়ে নিয়ে যাবে ইত্যাদি। আমরা এক গাড়ী বোঝাই ভদ্র লোক (?)। কেউ কোন তেমন প্রতিবাদ করলাম না, মৃদু গুঞ্জন ছাড়া।

এগুঞ্জনের মধ্যে যুবকটির অনৈতিক ও নির্যাতন মূলক কর্মকান্ডের প্রতিবাদের চেয়ে কেন মেয়েরা এরকম একা একা ঘুরে,কেন নির্যাতন চুপ করে সহ্য না করে এ রকম প্রতিবাদ করল ইত্যাদিই বেশি শুনা যাচ্ছিল। খুবই অবাক হলাম। খুবই অবাক। কিন্তু অবাক হবার আরো বাকি ছিল। ছেলেটি যখন মেয়েটিকে তুলে নিয়ে যাবার হুমকি দিচ্ছিল আমি তখন মনে করেছিলাম ছেলেটি নিজের দোষ আডাল করার জন্য তাফাল্লিং করছিল।

কিন্তু মৌলভীবাজার আসার পর ছেলেটি যখন মেয়েটিকে সত্যিসত্যি উঠিয়ে নিয়ে যাবার জন্য জোর করা শুরু করল তখন আমি সত্যিই আশ্র্চয্য রকম অবাক হলাম। এবং আমরা ভদ্রলোকরা (আমিও) তেমন কোন জোরালো প্রতিবাদ করলামনা। তবে খুশির খবর মেয়েটি নিজেকে নিজে রক্ষা করতে পারল। এথেকে আমি কিছু বিষয় আবার ও নতুনভাবে উপলব্দি করলামঃ ১) নিজেকে নিজেই রক্ষা করতে হয়। ২) ভদ্রলোকদের (?) দ্বারা কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করা সম্ভব নয়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।