আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘরে ঘরে ফাইবার ব্যাকবোন - অসাধারন পরিকল্পনা !!!!!!

ক খ গ ঘ ঙ

দেশে ডিশ এন্টিনার আবির্ভাব যখন হয় তখন আমি স্কুলে পড়ি। শুরুতে দেখেছিলাম এক একটা বাড়ির ছাদে ৪-৫ টা করে এন্টিনা আর পাড়া প্রতি এমন বাড়ির সংখ্যাও নেহায়েত কম ছিল না। মানুষের স্বাভাবিক বুদ্ধির কারনেই এখন বাংলাদেশে কেবল টিভি অপারেটরের জন্ম। এখন আর আমাদের ঘরে ঘরে স্যাটেলাই টিভি রিসিভার কিনতে প্রচুর পরিমান বিদেশি মূদ্রা খরচ করতে হয় না। এক একটা স্যাটেলাই টিভি রিসিভার অনেকে মিলে ব্যবহার করাটা যে বুদ্ধিমানের কাজ তা বাংলাদেশের সব মানুষই বুঝেন।

আমার লিখার বিষয় স্যাটেলাই টিভি রিসিভার নয় - বিষয়টি হলো ফাইবার ব্যাকবোন। একটু আগে বিডি নিউজে দেখলাম সরকার ১৫০০ কোটি টাকা ব্যায় করে ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ফাইবার ব্যাকবোন তৈরী করতে যাচ্ছে। শুনে অনেকেরই মনে হতে পারে বেশ ভাল কথা, এটা তো বিশাল উন্নয়ন কর্ম। তাই একটু বিস্তারিত দেখা যাক। বাংলাদেশের প্রথম ফাইবার নেটওয়ার্কের মালিক হচ্ছে রেলওয়ে।

যেখানে টিআন্ডটি এখনো কোনো ফাইবার নেটওয়ার্ক বানাতে পারেনি সেখানে কয়েক হাজার টেলিফোনের জন্য কি ধরনের পরিকল্পনার কারনে শত শত কোটি টাকা লস দেয়া রেলওয়ে তা প্রায় ২০ বছর আগে তৈরী করেছিল তা এক বিরাট রহস্য। (বলে রাখা ভাল, ভালো মত ডিজাইন করা একটা ফাইবার ব্যাকবোনের ক্ষমতা প্রায় অসীম, বাংলাদেশের যাবতীয় টেলিযোগাযোগ ট্রাফিক এর মধ্যদিয়ে পাঠানো যায়)। পরবর্তিতে গ্রামীন ফোন এই নেটওয়ার্ক ভারা নিয়ে তার কিছুটা সদ্ব্যাবহার করে। যদিও রেলওয়ের ব্যবসা বুদ্ধির কল্যানে সেই ভারার ব্যবসাও ভালো মতো চলেনি। গ্রামীন ফোন, বাংলালিন্ক, সিটিসেল আর একটেল নিজেদের ব্যাকবোন নেটওয়ার্ক তৈরী করে।

এখন দেশে অনেক গুলোই ফাইবার নেটওয়ার্ক আছে। এতোগুলো আলাদা আলাদা ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরীতে অনেক টাকাই ব্যয় হয়েছে। এর অধিকাংশই বৈদেশিক মূদ্রা। যেটা উচিৎ ছিল তা হচ্ছে একটা ফাইবার ব্যকবোন নেটওয়ার্ক তৈরী করে তা সবাইকে ব্যবহার করতে বলা। টিআন্ডটি এই ফাইবার নেটওয়ার্ক এর মালিক হতে পারতো বা রেলওয়ে।

অন্যান্য টেলিকম (বা মোবাইল) অপারেটরদের ট্রান্সমিশন সেবা দিয়ে তারা ব্যাবসাও করতে পারত। কিন্তু তা হয়নি। এখন যখন এতোগুলো ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরী হয়েছে তখন সরকার আবার নতুন করে ১৫০০ কোটি টাকা ব্যায় করে ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরী করছে। এটা ঘরে ঘরে ডিশ এন্টিনা স্থাপনের মতই হাস্যকর। এছাড়াও দেখলাম ২০০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে টেলিটকের জন্য।

এটাও ভালো ব্যবসা বুদ্ধির পরিচয় নয়। যেখানে এতোদিন ধরে ব্যবসা করে অনেক মোবাইল অপারেটরই লাভের মুখ দেখছে না (কোন কোন অপারেটর অগামী ১০ বছরেও লাভের মুখ দেখবে না বলে ধারনা করা হয়), সেখানে নতুন করে টেলিটকের জন্য ইনভেস্ট করা চরম মূর্খতা। মনে রাখতে হবে আবেগ দিয়ে ব্যবসা হয় না। যতই মনে করা হোক না কেন - মোবাইল কোম্পানিগুলো হওয়া বিক্রি করে ব্যাবসা করছে, এতো সস্তা টেলিযোগাযোগ সেবার বাজারে টেলিটক টিকতে পারবে না। নতুন ইন্ভেস্টমেন্ট এর টাকা তোলা তো সম্ভব নয়ই।

অন্য একটা পোস্ট এ বলেছিলাম এর চেয়ে সরকারের মনোযোগ দেয়া উচিৎ টেলিযোগাযোগ যন্ত্রাংশের বাজারের দিকে। এ বাজার টেলিযোগাযোগ সেবার বাজারের চেয়ে খুব একটা ছোট নয়। সরকারের পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ হ্যান্ডসেট ম্যানুফাকচারিং কোম্পানি গুলোকে বাংলাদেশে প্লান্ট তৈরীতে বাধ্য করা। আমাদের অনেক বড় বাজার - এটা নিয়ে দরকষাকষি করতেই হবে। অনেক দেশই তো তা করছে।

একই বিষয়ের উপর আর একটি পোষ্ট এর লিংক দিলাম, যদি কেউ পড়তে চান: Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।