আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

The Great Castration


মহান নপূংসকরণ রেনেসাঁ মানে পুনর্জাগরন। আর এই পুনর্জাগরন ছিলো মুলতঃ ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরূদ্ধে। সবাই জেগে উঠলেও রোমের ভ্যাটিকান প্রশাসন তখনো জেগে উঠতে নারাজ। খ্রীষ্টধর্মের দোহাই দিয়ে ক্যাথলিক চার্চ সমানে অত্যাচার নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারন নারী, পুরুষ থেকে শুরু করে শিশু, বৃদ্ধ, জ্ঞানের আলোয় আলোকিত শ্রেনী, কেউ বাদ যায় নি।

চার্চ যাকে তাদের ধর্মান্ধ সাথের্র বিপরীতে দেখেছে, তাকেই সমুলে নির্মমভাবে নির্মূল করেছে। শুধু তাই নয় প্রয়োজনে ধ্বংস করেছে অমুল্য সব শিল্প। ধ্বংস করেছে বিভিন্ন ধরনের আর্ট, ভাস্কর্য, স্থাপত্যকলা, কি নয়? সবই ইতিহাস, ভাবতে গেলে আজও গা শিউরে উঠে। রেনেসাঁর আমলের সেইসব লোমহর্ষক ট্র্যাজেডিগুলোর একটি হচ্ছে এই ঘটনা। হাস্যকর, তবে দুঃখজনক।

এবং সত্যি। ইউরোপ সভ্যতার মহাদেশ। শিল্পকলার স্থান। নানান ভাস্কর্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে গোটা ইউরোপ জুড়ে। হাজার বছর আগেও ভাস্কর্য শিল্পীরা তাঁদের মেধার সবটুকু ঢেলে দিতেন তাঁদের প্রতিটি শিল্প কর্মে।

তাঁরা যদি কোনো একটা প্রানীর মুর্তি বানাতেন, নিখুঁত ভাবে সেটা করতেন। নারী, পুরুষ, শিশু যত কিছুর ভাস্কর্যই হোক না কেন, জীবন্ত একটা ভাব আনার চেষ্টা সব আর্টিস্টদের (বা স্কাল্পটিস্ট) মধ্যে ছিলো। ক্যাথলিক খ্রীষ্টানদের পবিত্র নগরী ভ্যাটিকান। পবিত্র নগরী হিসেবে আজও বর্তমান, ঈশ্বরের নগরী। সেখানে এখনো যে সব শিল্পকর্ম রয়েছে, পৃথিবীর সবকটি মিউজিয়াম একসাথে বিক্রি করলে হয়তো তার শতভাগে এক ভাগ মুল্যও হবে না।

মুল্যবান যাবতীয় আর্টওয়ার্কসের সাথে রয়েছে প্রচুর ভাস্কর্য, তবে পুরুষ ভাস্কর্যগুলোর চেহারা একটু অন্যরকম। সেখানে একটু মডিফিকেশন আছে। যদিও তখন রেনেসাঁ। মানে পুনর্জাগরণ, অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আলোয় আসার হুজুগ। পজিটিভ হুজুগ।

তথাপি, ১৮৫৭ সালে, তৎকালীন পোপ, নবম পীয়্যুস (Pope Pius IX) সিদ্ধান্ত নিলেন ভ্যাটিকানের প্রত্যেকটা পুরুষ মুর্তির (যেগুলো উলঙ্গ) পুরুষাঙ্গ ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিতে হবে কারন এগুলোর যথাযথ প্রদর্শন ভ্যাটিকানের ধর্মপ্রান, ঈশ্বরভীরু মানুষদের মাঝে যখন-তখন যৌনলিপ্সা বা কাম জাগিয়ে তুলতে পারে। অতএব, তিনি নিজ হাতে হাঁতুড়ি বাটালি নিয়ে গোটা ভ্যাটিকানের প্রত্যেকটি পুরুষ মুর্তির পুরুষাঙ্গ কেটে, ভেঙ্গে আলাদা করে ফেললেন। মাইকেল এ্যাঞ্জেলো, ব্রামান্‌তে এবং বার্‌নিনি’র মত আর্টিস্টদের গড়া মুর্তির পুরুষাঙ্গ ভেংগে আলাদা করে সেই ভাঙ্গা স্থান মেরামত করলেন ডুমুরের পাতা দিয়ে। প্রত্যেকটা মুর্তির ভাঙ্গা সেই বিশেষ স্থান এখন ডুমুরের পাতার প্লাস্টার দিয়ে ঢাকা। এভাবে ভ্যাটিকানের শত শত পুরুষ মুর্তিকে খাসী করানো হয়েছে।

ইতিহাসের এক মর্মান্তিক অধ্যায় এই গণ-নপূংসকরন। তবে জীবিত কারো নয়, পুরুষ মুর্তিগুলোর। ভ্যাটিকানে বেড়াতে আসা ট্যুরিস্টদের যারা এই ইতিহাস জানেন তারা শত শত পাথরের পেনিস একসাথ করলে সেই পাহাড় বা টিলাটা কত উঁচু হত? কোথায়ইবা গেলো ওগুলো? এসব প্রশ্নের জবাব খোঁজেন। আসলেই তো? কোথায় গেলো নুনুগুলো?
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।