বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ এনে যুক্তরাষ্ট্রের নেত্বত্বে হামলার তোড়জোড় শুরুর পর দলে দলে মানুষ সিরিয়া ছাড়ছে। এরই মধ্যে ২০ লাখের বেশি মানুষ শরণার্থী হিসেবে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
এদিকে সিরিয়ায় সামরিক অভিযান শুরু হলে আঞ্চলিক যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে গোলযোগ দেখা দিতে পারে বলে গত সোমবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ।
এমন পরিস্থিতিতে গতকাল সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইউএনএইচসিআর এক বিবৃতিতে জানায়, সিরীয় শরণার্থীর সংখ্যা এক বছর আগের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে।
সীমান্ত অতিক্রম করে দলে দলে নারী, শিশু ও পুরুষ অন্যান্য দেশে আশ্রয় নিচ্ছে। এক বছর আগের হিসাব অনুযায়ী, সিরীয় শরণার্থীর সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৩০ হাজার ৬৭১ জন।
ইউএনএইচসিআরের মতে, বিপুলসংখ্যক শরণার্থী ছাড়াও সিরিয়া ২০১১ সালের মার্চে লড়াই শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে।
ইউএনএইচসিআরের শীর্ষ কর্মকর্তা অ্যান্তনিও গেতেরেস বলেন, সিরিয়ায় এই শতকের সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীসহ বিভিন্ন সূত্র জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গত সপ্তাহে সিরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে ওই দেশ থেকে বহির্মুখী জনস্রোত বাড়তে শুরু করে।
তবে অভিযানের পক্ষে কংগ্রেসের সমর্থন আদায়ের জন্য সময় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওবামা। এতে সিরিয়ার বেসামরিক লোকজন নিরাপদে দেশ ত্যাগের সময় পায়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হ্যাগেল সিরিয়ার ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণে সিনেটের একটি প্যানেলের সঙ্গে সোমবার আলোচনা করেন। সিরিয়ায় সামরিক অভিযান শুরুর ব্যাপারে কেরির যুক্তি, সিরিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অবস্থান জোরদার করা সম্ভব হবে না। বাশার, তাঁর সহযোগী হিজবুল্লাহ ও ইরানকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে।
এতে সিরিয়ার প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুপ্রতিম দেশগুলো বিপদের মুখে পড়বে।
সিরিয়ায় অভিযানের ব্যাপারে ওবামাকে জোরালো সমর্থন দিচ্ছে ফ্রান্স। বিভিন্ন ভিডিও চিত্রের ভিত্তিতে ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, ওই রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারে অন্তত ২৮১ জন প্রাণ হারিয়েছে।
সিরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক হামলার ব্যাপারে ফ্রান্সকেও সতর্ক করে দিয়েছেন বাশার। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট এই মুহূর্তে সিরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানে অংশ নিতে ডেভিড ক্যামেরন সরকারকে অনুমোদন দেয়নি।
তাই ফ্রান্সই এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সহযোগী।
সিরিয়ার অভ্যন্তরে এখনো লড়াই চলছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, রাজধানী দামেস্কের কাছাকাছি এলাকায় গত দুই দিনে প্রায় ৯০ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। এএফপি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।