আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুভ জন্মদিন, আডল্‌ফ হিটলার

ফেসবুক : www.facebook.com/mahmud.sust
আজ থেকে ঠিক ১২০ বছর আগে এই দিনে জন্ম নিয়েছিল ইতিহাস বিখ্যাত সৈরশাসক আডল্ফ হিটলার। তাই আজ হিটলারের ১২০তম জন্মদিন। তাকে নিয়ে একটি লেখা লিখব যখন ঠিক করলাম তখন শুরুতেই লিখেছি “শুভ জন্মদিন হিটলার”। এটা কি ঠিক হল!! হিটলার ১৭ মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করেছে তার জন্মদিন কি শুভ হতে পারে। কারন তার জন্ম না হলেই তো পৃথিবীর জন্য মঙ্গল হত।

হিটলার কে নিয়ে অনেকের মনেই আগ্রহ আছে। যে লোক ১৯৩৩ সাল থেকে শুরু করে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানী শাসন করেছে এবং একনায়কতন্ত্রের নিষ্ঠুর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তার সম্পর্কে আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক। হিটলারের নাৎসি পার্টির অনেক প্রচলিত কাহিনী রুপকথাকেও হার মানায়। সেই সব নিষ্ঠুরতার কাহিনী রুপকথার রাক্ষস-খোক্ষসের চাইতেও ভয়ংকর। হিটলারের জন্ম জার্মানীর সীমান্তবর্তী একটি ছোট অষ্ট্রিয়ান গ্রাম ব্রাউনাউ-আম-ইন।

দিনটি ছিল ১৮৮৯ সালের ২০ শে এপ্রিল সময় বিকেল ৬:৩০ মিনিটে। তার বাবা নাম আলোয়িস হিটলার, তিনি ছিলেন একজন কাস্টমস্ অফিসার। আডল্ফের মায়ের নাম ক্লারা, তিনি আলোয়িস এর তৃতীয় স্ত্রী ও কাজিন ছিলেন। আলোয়িস এবং ক্লারার ৬ টি সন্তান হয়েছিল, যার মধ্যে কেবল মাত্র আডল্ফ এবং তার বোন পাউলা জীবিত ছিল। আডল্ফ এর বাবা আলোয়িস ছিলেন জারজ সন্তান।

যতটুকু জানা যায়, তার মা মারিয়া আন্না সিকেলগ্রাবার প্রতিবেশী মিলশ্রমিক জোয়ান জর্জ হিটলার এর মিলিত ফসল আলোয়িস হিটলার । যদি তাই হয় তবে আডল্ফ হিটলারের দাদা ছিলেন একজন ইহুদী। কিন্তু মারিয়া সিকেলগ্রাবার দাবী করেন যে, তিনি ফ্রাঙ্কনবার্গর নামে এক ধনী ইহুদী পরিবারে রাধুনীর কাজ করতেন। সেই পরিবারের ১৯ বছরের ছেলের কারনে একসময় সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। অতপর আলোয়িসের জন্মের পরও তারা তাকে নিয়মিত ভাবে টাকা পাঠাত।

সুতরাং বোঝা যাচ্ছে আডল্ফ হিটলার নিশ্চিতভাবে জানতেন না যে তার দাদা কে ছিলেন। যে কারনে আডল্ফের বাবা আলোয়িস জন্মের পর তার মায়ের নামের সিকেলগ্রাবার নিজের নামের সাথে যুক্ত করেছিলেন। পরে চাকুরীতে যোগদানের পর নাম পরিবর্তন করে আলোয়িস হিটলার নাম রাখেন। আডল্ফের ছেলেবেলা সুখের ছিল না। তার বাবা তাকে এবং তার মাকে মারধর করত।

হিটলার নিজেই বলেছেন তার বাবা তাকে প্রায়ই মারতেন এবং সে কখনই ভুলতে পারবে না সেই কান্নার কথা, যখন বাবা তাকে চাবুক দিয়ে পেটাত আর মা ভয়ে দরজার পেছনে লুকিয়ে থাকত। হিটলার তার লেখা “মেইন কেম্ফ” এও তার পারিবারিক অশান্তির কথা লিখেছেন, সেখানে তার মায়ের প্রতি মমতা এবং বাবার প্রতি ঘৃনা ফুটে উঠেছে। অনেক ইতিহাসবিদরা মনে করেন এই পারিবারিক কলহ, তার বাবার মায়ের প্রতি নিষ্ঠুর আচরন এগুলো পরবর্তীতে তার মানসিক বিকৃতির কারন। হিটলার ইলিমেন্টারী স্কুলে খুবই ভাল ছাত্র ছিল, কিন্তু ৬ষ্ঠ গ্রেডে মানে হাইস্কুলে ওঠার প্রথম ধাপে সে ফেল করে এবং তাকে আবার ৬ষ্ঠ গ্রেডে রাখা হয়। তার শিক্ষকবৃন্দ মনে করতেন হিটলার কুড়ে, পরিশ্রম করার কোন ইচ্ছা তার মধ্যে নেই।

১৯০৩ সালের ৩রা জানুয়ারি হিটলারের বাবা আলোয়িস হিটলার ৬৫ বছর বয়সে ফুসফুসের রক্তক্ষরনে মৃত্যুবরন করেন। এরপর ১৯০৫ সালে ১৬ বছর বয়সে হিটলার হাইস্কুল ছেড়ে দেন। বছরখানেক অলসভাবে ঘুরে বেড়ানোর পর তার মা তাকে ব্যাবসা শেখা বা কোন কাজ জোগার করার জন্য চাপ দিতে থাকে, কিন্তু কিশোর হিটলার কোন কিছুতেই আগ্রহ বোধ করত না। আসলে বাবা মারা যাবার পর হিটলারকে বলার মত কেউ ছিল না, সে শুধু তাই করত যা তাকে আকর্ষন করত। ছোটবেলা থেকেই হিটলার আর্টের প্রতি আগ্রহী এবং আর্টে নেচারাল টেলেন্ট ছিল।

তাই একসময় হিটলার আর্ট শেখার জন্য মায়ের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে ভিয়েনা রওনা হল। তখন ভিয়েনা ছিল আর্ট, মিউজিক এবং ইউরোপিয়ান কালচার এর জন্য বিখ্যাত। হিটলার সেখানে খুব আগ্রহ নিয়ে স্থাপত্যবিদ্যায় শিক্ষাগ্রহন করতে শুরু করল। একটিবার মাত্র দেখেই যেকোন বিল্ডিং এর নকশা সে হুবহু আর্ট করতে পারত এবং সে অনেক বিল্ডিং এর নকশা পরিবর্তন করে আরও উন্নত নকশা তৈরী করেছিল। তার মধ্যে প্রতিভা ছিল কিন্তু সে ছিল খুবই অলস আর এ কারনেই তার মহান আটিস্ট হবার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়।

...... দু:খিত, আমাকে একটি জরুরী কাজে এখন বাইরে যেতে হচ্ছে। ফিরে এসে বাকিটুকু লিখে শেষ করব।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।