আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৩, ৫, এবং ৭ সংখ্যামাত্রার রাহুল দ্রাবিড়ীয় যৌগগল্প

আত্মবিশ্বাসহীনতায় প্রকট হচ্ছে আত্মার দেউলিয়াত্ব, তবুও বিশ্বাস আগের মতই নিশ্চল..

যৌগগল্পের গঠনবৈশিষ্ট্য: ১. কোন ঈ-কার,ঊ-কার,ঐ-কার,ঔ-কার যুক্ত শব্দ ব্যবহার করা যাবেনা। ২. কোন না-বোধক বাক্য থাকবেনা গল্পে, উদাহরণস্বরূপ- "আমি গল্প লিখিনা" এধরনের বাক্যের পরিবর্তে "আমি গল্প লিখতে অনভ্যস্ত" এমনটা লিখতে হবে। ৩.গল্পের শব্দগুলো হবে ৩, ৫ অথবা ৭ সংখ্যার। কিন্তু ৭-৩=৪, ৫-৩=২ এবং ৭-৫=২ হওয়ায় ২ ও ৪ সংখ্যার শব্দও গল্পে ব্যবহার করা যাবে, তবে এধরনের শব্দের সর্বোচ্চ সংখ্যা হবে ৩*৭= ২১টি। ৪. গল্পের শব্দসীমা : সর্বনিম্ন শব্দসংখ্যা ৩*৫=১৫, এবং সর্বোচ্চ শব্দসংখ্যা ৭^৩=৩৪৩. ৫.গল্পের মোট শব্দসংখ্যা হবে ৩,৫,৭, এর মধ্যে যে কোন দুটির কোন গুণিতক...সে অনুসারে রাহুল দ্রাবিড়ীড় গল্পের সর্বোচ্চ বৈধসীমা ৩৩৬ শব্দ( ৩ ও ৭ এর গুণিতক).........সম্ভাব্য যেসব শব্দসংখ্যার যৌগগল্প হতে পারে, .৩৩০,৩১৫,৩০০,২৯৪,২৮৫,২৮০,২৭৩,২৭০,২৫৫,২৫২,২৪৫,,২৪০. ..প্রভৃতি এই ফরম্যাটের প্রথম যৌগগল্পটি চা-মামা 'স্লামালাইকুম, কেমন আছেন মামা?'-বৃদ্ধ চাওয়ালাটি হতচকিয়ে উঠল শফিকের এমন সম্বোধনে- আমারে কইতেছেন স্যার? জ্বি আপনাকেই, আমাকে চিনতে কষ্ট হচ্ছে? চাওয়ালাটি ইতস্তত করছে বিধায় শফিক স্মিত হাসল- কষ্ট হওয়াটাই স্বাভাবিক, ভার্সিটি ছেড়েছি তাওতো প্রায় তেইশ বছর- ইত্যবসরে অনেক নতুন মানুষ যেমন এসেছে, একইভাবে বিদায়ও নিয়েছে; আপনি কতজনকে খেয়াল রাখবেন! লোকটা হালকাভাবে নিঃশ্বাস ছাড়ল একটা- কথাডা কিন্তু হাচাই, দ্যাখতে দ্যাখতে ক্যামনে কইরা ত্রিশটা বছর কাটায়্যা দিলাম ভার্সিটিডায়।

শফিক আবার হাসল- হায়রে সময়! সেসব পুরনো প‌্যাচাল বরং থাকুক এখন। (কয়েক মিনিট নির্বাক রইল শফিক, যদিও ইতিমধ্যেই চায়ের সঙ্গে গোল্ডলিফে তপ্ত মধ্যবিত্ত ঠোটের প্লেটোনিক ভালবাসায় স্মৃতি জন্ম নিয়েছে- স্পর্শে স্পর্শে অনিঃশেষে প্রত্যাবর্তন করছে সবুজাভ অধ্যায়গুলো। ) ক্লাস-বন্ধুদের আড্ডা, অতঃপর রুমানা আখ্যান, এবং অনিবার্যভাবেই দলছুট হওয়া। কিন্তু চায়ের চাহিদা একই থাকায় চাওয়ালার দ্বারস্থ হতেই হত। রুমানা এখন নিজের মানুষ, অভাব কিংবা আভিজাত্যের একতরফা অনুপস্থিতির সত্ত্বেও তাদের ঘরের দেয়ালে স্নেহ প্রতিফলিত হচ্ছে সর্বত্র।

'মামার সেই বাচ্চা ছেলেটা কোথায় এখন?এতদিনেতো অনেক জোয়ান হয়েছে, ধারণা করছি'- আগ্রহসহকারে জানতে চাইল শফিক। 'পোলাডা অহন আখিরাতের হিসাব দিতাছে'- চাওয়ালার চোখের প্রান্তে ইলশেগুড়ি বৃষ্টি নামল, তবুও নিজেকে সামলে বলল- পনের বছর আগের ঘটনা : ফুটপাতেই ঘুমায়্যা আছিল ছ্যাড়াডা- জ্বর জ্বর লাগতেছিল একটু, হঠাৎ ক্যামনে কইরা জানডা বাইর হইল, সেইডা একটা মারাত্মক ঘাপলা- আল্লাহই কইতে পারব! শফিক বিমর্ষ হল আবারো- তাদের প্রথম সন্তানটা বেঁচে থাকলে বাইশে পড়ত আসছে মাসেই; টাইফয়েড জ্বরে শিশুটির আয়ুষ্কাল এগারোতেই আটকে পড়ল। ঢিমেতেতালা গতিতে সময় এগুচ্ছিল বিধায় আরও একটা চায়ের কাপে স্মৃতি হাতড়ে বেড়াচ্ছিল শফিক, চাওয়ালাটি মুগ্ধ দৃষ্টিতে চা-পান অবলোকন করছিল, এমন সময় ভার্সিটি পড়ুয়া জনৈক ফ্যাশনদুরস্ত তরুণ সেখানে আসল; মুচকি হাসির হালকা আভায় শফিক বলল- আমার ছেলেকে চিনেন নিশ্চয়ই? ওর কাছেই এসেছিলাম। হতবিহ্বল তরুণ কেবল এটুকু উচ্চারণ করল- বাবার যুগেও ক্যাম্পাসেই ছিলেন চা-মামা? বৃদ্ধ চাওয়ালাটি মাথার আলগা টুপিটা শক্তভাবে পরল; সামনে দুজন ভিন্ন প্রজন্মের মানুষ, অথচ জনক-শাবক উভয়েরই সম্বোধন, 'চা-মামা'। একটা পবিত্র হাসির খণ্ডায়িত অংশ আছড়ে পড়ল মুখের উপত্যকায়।

........................... এই গল্পটির মোট শব্দসংখ্যা ২৯৪ (৩ ও ৭ এর গুণিতক), এবং ২, ৪ সংখ্যামাত্রার শব্দ আছে মোট ১৫টি..... রাহুল দ্রাবিড় আমার ভীষণ পছন্দের একজন ব্যাটসম্যান। কিছুদিন আগে ইএসপিএন এ তার একটা পুরনো ইনিংস দেখার সময় এই ধরনের প‌্যাটার্নটা মাথায় এসেছিল, তাই তার নামানুসারে এধরনের গল্পের নাম "রাহুল দ্রাবিড়ীয় গল্প" রাখা হয়েছে.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।