আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই সময়ের ক্ষত

অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা

http://www.sachalayatan.com/guest_writer/23356 সু-শান্ত সচলায়তনে একটা লেখা দিয়েছে, অবশ্য এটা নতুন সংবাদ নয়, ছাত্র শিবির মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি দিবে, আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫শে এপ্রিল। আমাদের দরিদ্র দেশে যেখানে মানুষের দিনান্তে আহার জোটাতে সমস্যা হয়, সেইসব দেশে আদর্শ কিংবা নৈতিকতা বোধ লুপ্ত হতে থাকে, এমন কি যেসব মানুষ এখনও টিমটিমে আদর্শের আলো আর ঘৃণা জমিয়ে রেখেছে, তারাও একটা সময়ে হতাশ হয়ে হাল ছাড়বে। দারিদ্রের মতো ব্যক্তিত্ববিনাশী হয়তো অন্য কোনো কিছু হতে পারে না। মানুষের ক্ষুধার কাছে, মানুষের প্রাণের আকুতির কাছে অনেক কিছুই বোধশূন্য। এখানে সুযোগ সন্ধানী মুক্তিযোদ্ধা আছেন, অভাবে স্বভাব নষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আছেন, পরান্নজীবি মুক্তিযোদ্ধা আছেন, এবং একেবারে দীনভিখারী মুক্তিযোদ্ধাও আছেন, তাদের সবারই আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে এমনও না, বরং বাস্তবতা হলো যারা প্রাণবাজী রেখে যুদ্ধ করেছিলো, তাদের প্রায় সবারই আর্থিক অবস্থা অপরিবর্তিত আছে।

ছাত্র শিবিরের নেপথ্যে জামায়াত এইসব মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি দিলে সেটাতে আপত্তিকর কিছু নেই, তবে কতজন মুক্তিযোদ্ধা পাওয়া যাবে যাদের সন্তানদের ঠিক এ সময়ে শিক্ষাবৃত্তি প্রয়োজন? তবে এটা জামায়াতের কর্মীদের শিক্ষাপ্রদান প্রকল্পের আওতায় পড়বে না, আমি নিশ্চিত ভাবেই বলতে পারি এখানে যারা আবেদন করবে তারা জীবনে সত্যি সত্যিই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, হয়তো রাজাকারদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন, হয়তো তার নিজের ভিটা পুড়েছে এই আগুণে, কিন্তু গত ৩৮ বছরের দীনতা আর দারিদ্রের ঘষায় তাদের অহং মুছে গিয়ে সেখানে এখন অভাবের হাঁ। তারা নিবে, এবং একজন দুই জন না, অনেকেই নিবেন, তাদের মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট জমা দিয়েই নিবে। এটাই আমাদের বাস্তবতা, এটাই বাংলাদেশের বাস্তবতা। আমি অপমানিত বোধ করেছি, আমার কাছে মনে হয়েছে শিক্ষাবৃত্তি প্রকল্পটা জামায়াত নিজের নামে কেনো করছে? তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে মানলাম। কিন্তু এইটার বিনিময়ে যদি একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে অনুগ্রহ নিতে হয় এবং নিজেদের বিবেককে দাসখত দিয়ে দিতে হয়।

তা নিতে হলেও এই সময়ে এটাই বাস্তব। আমরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করবার প্রক্রিয়া দেখছি, যেখানে বলা হচ্ছে এই গত ২ মাসে উৎসাহী মানুষেরা যারা বিভিন্ন থানায় হত্যা মামলা করছে রাজাকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য নিয়োজিত প্যানেল সেসব মামলা আমলে আনবে না। তাদের কি করতে হবে এটাও বলা নেই, থানা কি মামলাগুলো তদন্ত করে বিচারের জন্য এখানে পাঠাতে পারবে? লোকটা কি একই অভিযোগ এখানে উত্থাপন করতে পারবে? কোন মাত্রায় এটা ঘটবে, এইসব স্পষ্ট হওয়ার আগেই শিবিরের ছাত্রবৃত্তি প্রকল্প। খুব একটা খারাপ না। এরপরও আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা ভালো থাকুক, তাদের সন্তান সুশিক্ষিত হয়ে উঠুক।

রাষ্ট্রের যে কাজটা করবার কথা ছিলো, সেটা অন্য একটা রাষ্ট্রের জন্মবিরোধী সংগঠন করছে, এইটুকু দেখার লজ্জার বাইরে অন্য কোনো যন্ত্রনা বোধ করছি না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।