আমাদের স্কুলে ছোট্ট ছোট্ট পিচ্চু পাচ্চু বাবুরা (যাদের বয়স ৪ থেকে ৫ ) তাদেরকে নিয়ে বাংলা নতুন বর্ষবরণে আমার ছোট্ট একটা প্রচেষ্টা।
পিচ্চি পাচ্চি শহুরে বাবুগুলো যারা বাঙ্গালীদের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র, তৈজসপত্র, বাংলাদেশের গ্রামেগন্জে ব্যবহার্য্য অনেক অনেক দৈনন্দিন জিনিসগুপত্রলো আজকাল দেখার সুযোগ পায়না বা কেউ কেউ দেখে থাকলেও ভালো করে নাম জানেনা, জানেনা কি কাজে এসব ব্যবহার হয়, তাদেরকে এসব চেনাতে বা আমাদের দেশটাকে ভালো করে জানাতে ছোট্ট থেকেই যেন একটু হলেও ওদের কাছে আমাদের এই দেশ ও তার ঐতিহ্য তুলে ধরতে পারি সেটা ভেবেই আমি এসপ্তাহের শেষ দিনটায় একতারা, বাঁশী, মাছ ধরবার খালুই,পোলো, চিত্র বিচিত্র মুখোস,কূলা, আড়ং থেকে কেনা ছোট কাঠের নৌকা, ঘুড্ডি, হ্যারিকেন, পাখা এসব নানা রকম বাংলাদেশের একদম নিজস্ব কিছু জিনিসপাতি নিয়ে হাজির হলাম আমার ছোট্ট ছোট্ট বাবুগুলোর সামনে।
আমি যখন একতারা বাজিয়ে গান গাইছিলাম আর যখন সূর তুললাম বাঁশীতে। ওরা ওদের সব রকম দুষ্টুমী থামিয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মত হা করে তাকিয়ে রইলো আমার মুখের দিকে। নিজেকে যেন মহিলা হ্যামিলনের বাঁশীওয়ালা মনে হচ্ছিলো তখন আমার।
তারপর ওদের হাতে তুলে দিলাম রঙ আর তুলি। ওরা মনের আনন্দে আঁকলো সেসব সদ্য দেখা জিনিসগুলো, তাতে রঙ চড়ালো ইচ্ছে মত। দুয়েকজনকে অবশ্য আঁকাআঁকিতে সাহায্য করতে হয়েছিলো। আঁকার পর আধো আধো বোলে নিজেদের রঙ করা জিনিসগুলোর শেখা নাম বললো সবার সামনে একে একে।
শেষ পিরিয়ডে আমি সেসব ডিসপ্লে বোর্ডে আটকে দিলাম।
ডিসপ্লে বোর্ডটা আমি আগেই ঢেকে দিয়েছিলাম আমার নিজস্ব ডিজাইনে গড়া কাগজের জামদানী শাড়ীতে। তার উপরে পিচ্চিবাবুদের হাতে রঙ করা ছবিগুলো ঝুলিয়ে দিতেই ঝলমল করে হেসে উঠলো যেন ছোট্ট বাবুদের হাতে গড়া আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ।
এইবার বলি তাদের কথা সামুব্লগে যেসব পিচ্চি বাবুরা একটু ঢু মেরে দেখতে আসে বা আব্বু, আম্মু, চাচু মামা খালাদেরকে এই খানে বসে থাকতে দেখে একটু উঁকি দেয়, প্রত্যুষ, শ্রুতিমনি, কিন্নরী, অপনা, আদিত্যের মত বাবুরা যাদের(পিচ্চি দেবদূত) জন্য কদিন আগে এখানে একটা গ্রুপ খোলা হল। তাদেরকে বলি তোমরা বাসায় পাবে এমন যেকোনো ফেলে দেওয়া প্যাকেট দিয়ে বানাতে পারো বাংলার ভূতুম পেঁচা, লক্ষীপেঁচা পাপেট। বাসার আর সবার সাথে বাংলা বছরের প্রথম দিনটিতে তুমিও হতে পারো গৃহসজ্জায় অংশীদার।
এমন যেকোনো একটা পেপার প্যাকেট নাও।
উপরের দিকটায় গ্লু লাগাও ঠিক এইভাবে।
এইবার রঙিন কাগজ পেস্ট করো এইভাবে উপরে ও নিচের অংশে।
এইভাবে চোখ ,ঠোট, কান পাখা এঁকে এঁকে , কেঁটেকুঁটে গ্লু দিয়ে লাগিয়ে দাও ।
হয়ে গেলো মজার পেপার প্যাকেট পাপেট বাংলার পেঁচাপাখি।
নববর্ষপালন অনুষ্ঠানে বা স্কুলে আঁকতে পারো আরো এমন মজার মজার নক্সীকাঁথায় সূচসুতোয় আঁকা হয় এমন সব ছবি।
উফফ এত বক বক করেছি সবাই বিরক্ত হয়ে যাবে।
সবাইকে নতুন বছরের আগাম শুভেচ্ছা, সবার আগে জানিয়ে দিলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।