আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনুগল্প-০৩: ঈশ্বরের গীবত

ভালো কিছুর অপেক্ষায়......

ঈশ্বরের গীবত ক. পৌষ মাসের শীতে নীল হাফ প্যান্টে ক্লাস থ্রিতে পড়া বালকের শীত যায়না। তবুও তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে সটান। সে রোমাঞ্চ বোধ করছে। গতরাতের উত্তেজনায় ঘুম না হওয়া নির্ঘুম চোখ, শীতে খাঁড়া হয়ে যাওয়া গায়ের লোম, দু‘পাটি দাঁতের ঘর্ষণ সত্ত্বেও এতটুকুন ক্লেশ জমা হয়নি তার মনে। একটুক্ষণ পরেই একটু পিছনে মাঠের সীমানা ঘেঁষে একুশবার বড় বড় পটকা ফোটানো হবে।

গতবারের শব্দে বালকের বুক কেঁপে উঠেছিল। এবার সে এক ক্লাস উপরে উঠেছে। এবারও কি তার বুক কাঁপবে? বালক এইসব বর্ণিল আয়োজন, মার্চপাস্ট, তোপধ্বনি, শারীরিক কসরত, খেলাধূলা, আলোচনা দেখে-শুনে, বইয়ে পড়ে বিজয়কে উপলব্ধি করে। আর আশিতে জন্ম নেয়া বালকটি মনে মনে ভাবে ইস্ যদি আর ৯ বসর পূর্বে আমার জন্ম হত! খ. উপরে উল্লেখিত বালক এখন পঁচিশ পেরুনো যুবক। বালক বয়সের শীতের সকালের বুক তড়পানো সেই পটকার শব্দ এখনও তার বুকে বাজে, তার বুক এখনও তড়পায়।

বালকবেলার সেই শব্দে তার রোমাঞ্চ ছিল, এখন সেই শব্দে শুধু মৃত্যুর পরওয়ানা। বিকট বিস্ফোরণের বিভৎসতা তাকে অন্ধকারে তলিয়ে দেয়, কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়ায় তার ফুসফুস বাতাসহীন হয়ে উঠে, অপদেবতার চাপে বুকের পাঁজর হাফরের মতন উঠানামা করে, স্বর্গ-নরক আলাদা করা যায়না। গ. প্রিয় পাঠক, ঠিক একই সময় ছাব্বিশ বছরের আরেক আত্নঘাতী যুবক জিহাদী জোশে বলে আমাকে মেরে ফেলো, আমি শহীদ হতে চাই। সৃষ্টিকর্তার কাছে শহীদ হবার মত জজবা (অনুপ্রেরণা) নিয়ে মৃত্যুর দোরগোঁড়ায় দাঁড়িয়ে। অন্যদিকে বালক থেকে যুবায় পরিণত হওয়া যুবকের ভেতরে কোথায় যেন অভিমান নাকি ক্ষোভ নাকি ঘৃণা জমে উঠে।

ভাবে খোদা তার নয়। ঘ. দোহাই মানুষের, দোহাই সর্বভূব্যাপি সর্বকালের স্বর্গে অন্ধকার আনবেন্‌না। (অনুগল্পটি ২০০৬ এ জঙ্গীদের বোমা ফাটানোর প্রেক্ষাপটে লেখা)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।