ইমরোজ
হাসান মশুদ চৌধুরী পদত্যাগ করেছে। আমার এক বন্ধু যখন আমাকে এই কথা বলল, আমি তাকে উত্তরে বললাম, "বেশ ভালো হলো, লোকটাকে অনেক কথা শুনতে হয়েছে, যদিও তিনি তার চুল পরিমাণ অপরাধও করেন নি"।
দূর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ কেন সম্ভব নয় সেটা নিশ্চয় কার বুঝতে আর বাকি নেই। সরকারী দল যে শুধু চাপ দিয়েছে তা নয়। হাসান মশুদ চৌধুরীকে বিরোধী দল থেকেও চাপ দেওয়া হয়।
কোকোর বিরুদ্ধে যখন দুদক মামলা করে তখন শুনতে পেলাম, হাসান মশুদ নাকি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন! সেটার তদন্ত কে করবে?
এতটা সহ্য করার পরেও তিনি কাজ করেছেন। সাম্প্রতিক এমন একটা কর্মকান্ড তিনি করেছেন যা আমাদের রাজনীতিবিদদের কাছে চরম শিক্ষনীয়। তিনি বগুরায় ভিসিটে গেলে তাকে সংবর্ধনা দিতে আসে স্কুলের অনেক ছেলে মেয়ে। তিনি রেগে যান, স্কুলের বাচ্চাদের বলেন স্কুলে যেতে, আর যারা এই সংবর্ধনার আয়োজন করেন তাদের তলব করেছিলেন হাসান মশুদ।
এরকম একজন মানুষকে হেনস্তা করল এই সরকার ও বিরোধীদল সমানে।
যেন তিনি মহা অন্যায় করেছেন। আসলে রাজনীতির ময়দানে ভালো লোকের কোন দাম নেই। কোনদিনও ছিল না বাংলাদেশে। তথ্য প্রতিমন্ত্রী নির্লজ্জের মত করে বললেন, "আমি খুশি হয়েছি, ১৩ কোটি টাকার তদন্ত হবে"। আমার প্রশ্ন, রাজনীতিবিদরা একমাসে একজন উকিলের পেছনে কতটাকা খরচ করেছে দুদকের মামলা পরিচালনার জন্য? সেটা কী মাননীয় মন্ত্রী ওয়াকিবহাল?
যা হোক, হাসান মশুদ চৌধুরী অনেক চাপে ছিলেন চতুর্দিক থেকে।
বেশ কয়েকদিন যাবত তাঁর অবস্থা নাজুক হয়ে পরেছিল। তিনি কয়েকবার শেখ হাসিনার সাথে দেখা করতে চেয়ে ব্যার্থ হয়েছেন, আওয়ামীলীগের জ্যাষ্ঠ নেতাদের সাথে দেখা করতে চেয়ে ব্যার্থ হয়েছেন। কেউ তার পাশে এসে দাঁড়ায় নেই।
এ কথা সত্য, দুদকের কিছু কার্যক্রম পরিচালনায় অদক্ষতা ছিল। দুদককে কার্যকর করার জন্য, তাদের করা মামলাগুলো পরিচালনা ও প্রতিদিন ফলোআপ পেপারে আসেনি।
সেটা জনমাধ্যমে জানানো দুদকের প্রেস সচিবের দায়িত্ব ছিল। কিন্তু সেটা তিনি করেননি। একাধিক মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে তারা লেজে গোবরে করে ফেলেছে। সেটাও সত্য।
কিন্তু তবুও তো একটা ভরসা ছিল, কার্যকর একটা প্রতিষ্ঠানে রূপ নিতে যাচ্ছিল দুদক।
সেই সময়টাই তো তাদের দেওয়া গেল না।
কিন্তু সেটা তো হতে দেওয়া চলবে না। দুদককে অকার্যকর করেই রাখতে হবে। নাহলে এই সরকার কেমন করে ২০৩ কোটি টাকার গাড়ি কিনবে? কেমন করে সরকার ও বিরোধীদলের এমপিরা টাকা খাবে? এই তো আমাদের দিন বদলের ডিজিটাল বাংলাদেশ!
আমি হতাশ, আমি ক্লান্ত! আমার মনে হয় না সহসাই এই দেশের কোন উন্নতি হতে যাচ্ছে। আওয়ামীলীগ আর বিএনপি দুই আদর্শের দুই দল হলেও, চুরি চামারি, দূর্নীতির মত কাজে তারা যেভাবে গলায় গলা মিলায়, সেটা বেশ লজ্জাকর, ঘৃণ্য।
আসলে এটা এদের মধ্যকার চৌর্যবৃত্তির উন্মত্ত বহিঃপ্রকাশ। এর কোন ব্যাখ্যা নাই।
আসুন, দিন বদল পালটিয়ে "দিন বলদের পিছে ছুটি", যদি কিছু এনালগ দুগ্ধ পাওয়া যায়, তাও তো নতুন প্রজন্মের মুখে বাংলাদেশ নামটা শোনা যেতে পারে আবার!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।